শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৮ অপরাহ্ন
মোঃ আরিফ বিল্লাহ নাছিম,কলাপাড়া (কুয়াকাটা) প্রতিনিধি ঃ বঙ্গোপসাগর উত্তাল হওয়ায় গভীর সমুদ্রে ২টি মাছ ধরা ট্রলার ডুবির ঘটনায় ৮দিনেও নিখোঁজ ৭ জেলের সন্ধান মেলেনী আজো। নিখোঁজ জেলেদের সন্ধানে তাদের স্বজনরা মৎস্যবন্দরের আড়ৎ পল্লীর বিভিন্ন দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মহিপুরের নিজামপুর ওই সকল জেলে পল্লী ঘুরে দেখাগেছে, স্বজনদের ফিরে পেতে তাদের আহাজারী ও কান্নার রোল। স্বজন হারানো বেদনা নিয়ে ফিরে আসার প্রত্যাশায় অপেক্ষমান হৃদয় বিদারক দৃশ্যে এখানে শোকের ছায়া নেমে আসছে।
নিখোঁজ জেলে ছিদ্দিকের বাড়ি করুন দৃশ্য ছিদ্দিকের সাড়ে ৩বছরের কন্যা সামিরা শুধু বাবা বাবা করছে, বাবা ফিরে আসবে মজা খাবে আরও কত কি ? কিন্তু বাবা ফিরে আসবে কি আসবে না, জীবিত আছে না মৃত কেউ জানে না। ছিদ্দিকের স্ত্রী শারমিন অশ্রু বিজড়িত কন্ঠে বলেন, “আমি আমার স্বামীকে ট্রলারে যেতে দিতে চাইনী, ট্রলার মালিক জোর পূর্বক নিয়ে গেছে। আর এখন তার কোন খোজ খবর টুকু পর্যন্ত নিচ্ছেনা। আমি কিচ্ছু চাইনা-আমি আমার স্বামীকে ফেরত চাই”।মা পরিভানু’র একই কথা ‘কিছুই চাইনা আমার সন্তান চাই, আমার সন্তান চাই, আমার সন্তান চাই’।
গত বুধবার সকাল থেকে হঠাৎ গভীর সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠে। প্রচন্ড ঢেউয়ের মধ্য দিয়ে তীরে ফিরে আসার সময় মহিপুরের নজিবপুর এলাকার এফ,বি, ইলিয়াছ ও লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আনছার উদ্দিন মোল্লার মালিকানাধীন এফ,বি মারজিয়া আক্তার রিমা নামের মাছ ধরা ২টি ট্রলার বুধবার গভীর রাতে মাঝি মাল্লাসহ সুন্দরবন সংলগ্ন সমুদ্রে নিমজ্জিত হয়।
এসময় নজিবপুর এলাকার এফ,বি, ইলিয়াছ ট্রলারের ১৩ জেলের মধ্যে ৬ জেলে অন্য একটি ট্রলারের সাহায্যে তীরে ফিরে আসে। তবে ট্রলার ডুবির দু’দিন অতিবাহিত হলেও নিখোঁজ ৭জেলের সন্ধান মেলেনী আজও। নিখোঁজ জেলেরা হচ্ছে মাঝি মনির হাওলাদার (৩২), কাদের (৫৫), ইব্রাহিম (৪৫), মাহাবুব (২৬), ছিদ্দিক (২৮), ফাইজুল (২৮) ও জাহিদ (২৭)। নিখোঁজ জেলে জাহিদের বাড়ি বরগুনা জেলার খাকবুনিয়া এবং অন্যদের বাড়ি মহিপুরের নজিবপুর এলাকায় বলে জানাযায়।
নজিবপুর এলাকার এফ,বি, ইলিয়াছ ট্রলারের মালিক মোঃ ইলিয়াছ বলেন, অনেক খোঁজা খুঁজি করেছি কোন সন্ধান মেলেনী, এখনও চেষ্টা চালাচ্ছি। এব্যাপারে নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক ও ডেমরাঘাট শাখার সভাপতি, মোঃ জাকির হোসেন বলেন, আমি ও আমার সংগঠনের পক্ষ থেকে নিখোঁজ জেলেদের সন্ধানের জন্য শক্তিশালী নৌ-যান ব্যবহার তথা নিখোঁজ পরিবারের পাশে দাড়ানোর কথা বল্লে কতিপয় লোক বিরূপ প্রতিক্রিয়ান ব্যক্ত করেন।
এব্যাপারে কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, নিখোঁজ জেলেদের সন্ধানে আমরাও তৎপর আছি, বর্তমানে পায়রা বন্দর সংলগ্ন এলাকায় আছি। বিশেষ করে ট্রলারের প্রত্যেক জেলেদের লাইফ বয়, জ্যাকেট নিশ্চিত করে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply