পটুয়াখালীতে অত্যাধিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বাল্যবিবাহ ও শিশুশ্রম Latest Update News of Bangladesh

বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১৫ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




পটুয়াখালীতে অত্যাধিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বাল্যবিবাহ ও শিশুশ্রম

পটুয়াখালীতে অত্যাধিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বাল্যবিবাহ ও শিশুশ্রম

পটুয়াখালীতে অত্যাধিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বাল্যবিবাহ ও শিশুশ্রম




পটুয়াখালী প্রতিনিধি॥ বাল্যবিবাহ একটি প্রথা যা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সামাজিক মূল্যবোধ ও অসম অবস্থানকে প্রতিফলিত করে। বর্তমানে ৬০ শতাংশের অধিক বাংলাদেশের নারী যাদের বয়স ২০ এর মাঝামাঝি তাদের ১৮ বছর পূর্ণ হবার আগেই বিয়ে হচ্ছে। এদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশের বিয়ে হয়েছে ১৪ বছরের নিচে।

 

 

পটুয়াখালীর সদর উপজেলায় এবং চরাঞ্চলে বাল্যবিবাহের প্রবনতা অত্যাধিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে করোনাকালীন সময়ে। করোনা মহামারিতে জীবিকা কমে যাওয়ায় পরিবারের উপর নির্ভরতা কমাতে পটুয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলার মেয়েদের অল্প বয়সেই বিয়ে দিয়ে দিচ্ছেন অভিভাবকরা।

 

 

পটুয়াখালী টিআইবি জেলা শাখার এরিয়া ম্যানেজার ওবায়দুর রহমান রাজিব জানিয়েছেন, বিগত ২মাসে জেলায় আশঙ্কাজনক হারে বাল্যবিবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের গবেষণায় জানা যায়, ৯০ শতাংশ বাল্যবিবাহ হয়েছে জেলার বাহিরের চরাঞ্চলে। করোনার প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পড়া পিতামাতা এসকল মেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণে অল্প বয়সে বিবাহ দিয়ে দিচ্ছেন। লকডাউনে বিদেশ থেকে আসা অবিবাহিত কর্মীরা অধিকাংশই ১৮ বছরের নিচে মেয়েদের বিয়ে করেছেন এই জেলায়।

 

 

জেলা মহিলা অধিদফতরের দেয়া তথ্যমতে, পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী এবং গলাচিপা উপজেলায় বাল্যবিবাহের প্রবনতা বেশি। কিছুদিন পূর্বে অত্র উপজেলায় ১১ বছরের একটি শিশুর বিবাহ প্রশাসন আটকে দিয়েছে এবং জরিমানা করেছে। বিগত কয়েকমাসে পটুয়াখালী জেলায় প্রায় অর্ধশতাধিক বাল্যবিবাহের তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। গত ১ মাসে জেলায় ১২ শতাংশের বিয়ে হয়েছে ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগে।

 

 

এদিকে করোনার প্রভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অধিকাংশ শিশুরা স্কুলবিমুখ হয়ে পড়েছে। পরিবারের আর্থিক ক্ষতি লাঘবে শিশুরা নেমে পরেছে শ্রমে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পটুয়াখালী জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র পিতামাতার দশ বারো বছর বয়সি শিশুরা রীতিমত শিশু শ্রমে জড়িয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করছে। বিভিন্ন হোটেল রেস্টুরেন্টের কর্মচারী হিসেবে, কেউ অটোচালক হিসেবে, কেউ বিভিন্ন ওয়ার্কসপ এবং মটোরসাইকেল গ্রেজের কর্মচারী হিসেবে, কেউ ইট ভেঙে শিশুশ্রমে জড়িয়ে পড়েছে।

 

 

জেলা শিক্ষা অফিস এবং বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ব্রাকের তথ্য কমকর্তাদের থেকে জানা যায়, পটুয়াখালী জেলার চরাঞ্চলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনলাইনে পাঠগ্রহনের সুযোগ পাচ্ছে মাত্র ৮ শতাংশ ছাত্রছাত্রী। বাকিরা সেই সুযোগ সুবিধা পায়নি। এসকল শিশু শিক্ষার্থীদের পরিবারের আয় কমে যাওয়ায় শিশুদের নিয়মিত তিনবেলা আহার জুটছেনা। স্কুল বন্ধ থাকায় এবং পারিবারিক আয় কমে যাওয়ায় শিশুশ্রম বৃদ্ধি পেয়েছে উদ্বেগজনক হারে।

 

 

তারা জানান, পটুয়াখালী জেলায় শিশুশ্রম বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৩২ শতাংশ। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ এবং শিশুশ্রম বন্ধে জেলার বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কার্যক্রম সম্পর্কে সনাকের সাবেক দলনেতা কে.এম. জাহিদ হোসেন বলেন, পটুয়াখালী জেলায় আগের তুলনায় করোনা সময়ে বাল্যবিবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। উঠান বৈঠক, শিশুদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি, অনলাইনে শিক্ষার ব্যবস্থা, বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে প্রতিবেদন তৈরি করে প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা।

 

 

তবে এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, করোনাকালে অভিভাবকের কাজকর্ম না থাকা, সন্তানের স্কুল খোলার নিশ্চয়তা না থাকা এবং অনিরাপত্তা বোধ থেকে দেশে বেড়ে গেছে বাল্যবিবাহ। শিশুশ্রমের ব্যাপারে প্রশাসনের নজরদারি রয়েছে এবং তথ্য পেলে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD