এখনও থমথমে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র Latest Update News of Bangladesh

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৪ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




এখনও থমথমে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র

এখনও থমথমে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র




তানজিল জামান জয়, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের সহিংস ঘটনার পর আজ শনিবার চতুর্থ দিনেও সেখানে কাজ হয়নি। তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রকল্প এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আপাতত চীনা শ্রমিকেরা প্রকল্প এলাকায় কাজ করবেন বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার সময় বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির (বিসিপিসিএল) কর্মকর্তারা বাংলাদেশি শ্রমিকদের ছাউনিতে গিয়ে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সঙ্গে সভা করে সিদ্ধান্তের কথা জানান।

বাংলাদেশি শ্রমিকেরা সবাই করতালি দিয়ে এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক শাহ আবদুল মাওলা, চীনা কোম্পানির প্রকল্প ব্যবস্থাপক হান লি গু-ও, নির্বাহী প্রকৌশলী রেজওয়ান ইকবাল খান ও জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার শাহ মনি জিকো উপস্থিত ছিলেন। তবে শনিবারও চীনা শ্রমিকেরা কাজে যোগদান করেননি। গত মঙ্গলবার তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের বয়লারের ওপর থেকে সবিন্দ্র দাস নামে এক বাংলাদেশি শ্রমিক পড়ে গেলে তাঁর মৃত্যু হয়।

সবিন্দ্রর লাশ তাঁর সহকর্মীরা বাংলা ক্যানটিন এলাকায় নিয়ে গিয়ে পাহারায় রাখেন। সেখানে লাশ গুমের গুজব ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ বাংলাদেশি শ্রমিকেরা বয়লার এলাকার প্রকল্পের একটি অফিসসহ ক্যানটিন, প্রশিক্ষণকেন্দ্র, ওয়েল্ডার এবং পার্শ্ববর্তী স্থাপনায় হামলা ও ভাঙচুর চালান। একপর্যায়ে চীনা শ্রমিকদের আবাসিক এলাকায় ঢুকে তাঁরা ভাঙচুর চালান। সন্ধ্যার পর চীনা শ্রমিকেরা এক হয়ে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ওপর হামলা চালালে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত চীনা শ্রমিক ঝাং ইয়াং ফাং বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এ ছাড়া ছয়জন চীনা শ্রমিক এবং তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তাসহ চারজন এ সংঘর্ষে আহত হয়েছেন। তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক শাহ আবদুল মাওলার সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার শাহ মনি জিকো বলেন, তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে বাংলাদেশি শ্রমিক যাঁরা এখনো আছেন, তাঁদের প্রকল্প এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। যেসব শ্রমিক গত রোজার ঈদের সময় কাজ করেছেন, তাঁদের বোনাসসহ বেতন দিয়ে দেওয়া হবে। তা ছাড়া এ মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত সব শ্রমিকের বেতন পরিশোধ করা হবে।

শাহ মনি বলেন, আগামী তিন দিনের মধ্যে বেতন-বোনাস পরিশোধ করার জন্য সময় চেয়ে নেওয়া হয়েছে। শ্রমিকেরা ইচ্ছা করলে তিন দিন অপেক্ষা করে বেতন-বোনাস নিয়ে যেতে পারবেন। কেউ যদি ইচ্ছা করেন এখনই চলে যাবেন, পরে এসে বেতন-বোনাস নেবেন তা-ও পারবেন। শ্রমিকেরা আগামী তিন দিন যদি তাঁদের নির্ধারিত ছাউনিতে থাকেন সে ক্ষেত্রে তাঁদের পানি, বিদ্যুৎসহ সব নাগরিক সুবিধা দেওয়া হবে। আর প্রকল্প এলাকায় আপাতত চীনারা কাজ করবেন।

বাংলাদেশি শ্রমিকেরা প্রকল্প এলাকায় কাজের জন্য কবে যোগদান করবেন, তা পরে জানানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। চীনা ইলেকট্রিশিয়ান ঝাং ইয়াং ফাং (২৬) হত্যার অভিযোগে বৃহস্পতিবার কলাপাড়া থানায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। দুটি মামলারই বাদী চীনা কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা পরিচালক ওয়াং লি ঝিং। কলাপাড়া থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুটি মামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এই পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া ১২ নির্মাণশ্রমিককে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত শ্রমিকদের জেলহাজতে প্রেরণ করার আদেশ প্রদান করেন।

পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের ইলেকট্রিশিয়ান ঝাং ইয়াং ফাং হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কলাপাড়া থানার উপপরিদর্শক মো. শওকত জাহান জানান, ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ এ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এঁদের চীনা নাগরিক ঝাং ইয়াং ফাংয়ের হত্যা মামলায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি দেখার জন্য গেলে ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি পাওয়া যায়নি।

মঙ্গলবারের সহিংস ঘটনার পর গণমাধ্যমকর্মীদের তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তবে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের বাইরে এবং ভেতরে প্রচুর সংখ্যক পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব, আর্মড পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এসব সদস্য বেশ কয়েকটি স্থানে চেকপোস্ট বসিয়েছেন। তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের সর্বশেষ পরিস্থিতি দেখার জন্য শুক্রবার বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস, বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির (বিসিপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ এম খোরশেদুল আলম, পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. শফিকুল ইসলাম, পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরীসহ সরকারের কয়েক কর্মকর্তা এসেছিলেন। এসব কর্মকর্তা বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার জেনারেশ কোম্পানির (বিসিপিসিএল) কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করে সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনেছেন।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD