বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০০ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল:শোকের মাসে বরিশাল নগরীতে মেলার আয়োজন করা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়। যে কারণে গোটা মাসজুড়েই সারাদেশে থাকে শোকের আবহ। এরই মধ্যে বরিশাল নগরীর ব্রজমোহন (বিএম) বিদ্যালয়ে চলছে মাসব্যাপী তাঁত শিল্প ও বস্ত্র মেলা বসানোর কার্যক্রম। অপরদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে মেলার আয়োজনের ওপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না। অভিযোগ আছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান ও ম্যানেজিং কমিটি নিজেদের স্বার্থে মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শোকের মাসে স্কুল মাঠে আনন্দের মেলা আয়োজন করতে এর উদ্যোক্তাদের অনুমতি দিয়েছে। বিদ্যালয় ফান্ডে ৪ লক্ষ টাকা জমা দেখানো হলেও মেলার আয়োজকদের কাছ থেকে এর দ্বিগুনেরও বেশি অর্থ নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
সূত্র মতে, ২০০৯ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক নির্দেশে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে কোন প্রকার মেলার আয়োজন না করতে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়। যাতে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে বিভিন্ন প্রদর্শনীর নামে মেলা/যাত্রা/সার্কাস ইত্যাদি বাণিজ্যিক বিনোদনমূলক আয়োজনের কারণে শিক্ষার্থীদের যথাযথভাবে পাঠদান এবং শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হয়। তাই মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে কোন প্রকার বাণিজ্যিক বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না।
কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরেই বিএম স্কুল কর্তৃপক্ষ সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিদ্যালয় মাঠে মাসব্যাপী তাঁত শিল্প ও বস্ত্র মেলা বসানোর অনুমতি দিয়ে আসছে। আর এবারও তার ব্যতিক্রম করছে না তারা। তবে এবারের মেলার আয়োজন শুরু হয়েছে জাতীয় শোকের মাস আগস্টে। যা নিয়ে এলাকাবাসীসহ সর্ব মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, এক মাসের অধিক সময় ধরে মাঠে মেলা চলার কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় অনেক প্রভাব পরে। পাঠদান চলাকালে মেলায় লোকজনের কথা এবং গান-বাজনার আওয়াজে ক্ষতি হয়। কিন্তু বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পড়াশোনার চেয়েই নিজেদের স্বার্থকেই বড় করে দেখে।
প্রধান শিক্ষক মোঃ লুৎফর রহমান বলেন, আমি মেলার পক্ষে নই। কিন্তু এখানে আমার একক সিদ্ধান্তে কিছুই হয় না। ম্যানেজিং কমিটি মেলা করার অনুমতি দিলে আমার কিছু করার নেই। তিনি জানিয়েছেন, মেলার অনুমতির প্রেক্ষিতে আয়োজকরা বিদ্যালয়ের ফান্ডে ৪ লক্ষ টাকা দেওয়ার চুক্তি হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেলার আয়োজন করছে জনৈতিক আজগর, ইমরান হোসেন ও বাবু। এদের সাথে যোগাযোগ করা না গেলেও তাদের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, তারা সবার কাছে বলে বেড়াচ্ছে মেলা নিতে তারা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ১০ লাখ টাকা দিচ্ছে। যদিও সুনির্দিষ্টভাবে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান বলেন, আমাকে বলা হয়েছে বিদ্যালয়ের ফান্ডে ৪ লাখ টাকা দেবে। এর অতিরিক্ত টাকা দেওয়া হলে তা কে নিচ্ছে জানা নেই।
এ বিষয়ে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাহাবুব মোর্শেদ শামীম বলেন, বিদ্যালয়ের উন্নয়নে তেমন কোন বরাদ্দ নেই। তাই প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে মেলা করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনিও ৪ লাখ টাকা বিদ্যালয় ফান্ডে দেওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, অতিরিক্ত টাকার কথা বলে থাকলে তা সত্য নয় এবং এ কথা প্রমাণ মেলা করতে দেওয়া হবে না
Leave a Reply