মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৪ অপরাহ্ন
পিরোজপুর প্রতিনিধি ॥ পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের উত্তর কলারণ গ্রামে ভূমি বিরোধকে কেন্দ্র করে এক বিধবার পরিবারের ওপর দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী প্রভাবশালী পরিবারের বিরুদ্ধে। বিচার না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করে “মোগো যাওয়ার যায়গা নাই, বিচার না পাইলে মোরা মইরা যামু”—এভাবে আক্ষেপের সঙ্গে কথাগুলো বলেন নির্যাতিত বিধবা আরেফা বেগম (৬৫)।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে আরেফা বেগম ও তাঁর পুত্রবধূ কলি বেগম বাড়ির উঠানে একটি ছোট মুরগির ঘর নির্মাণ করছিলেন। এ সময় প্রতিবেশী হাবিবুর রহমান, তার স্ত্রী হাওয়া বেগম ও নাতি মোঃ আরিফ হামলা চালিয়ে মুরগির ঘরটি ভেঙে ফেলেন এবং কলি বেগম ও আরেফা বেগমকে মারধর করে। মারধরের সময় গৃহবধূ কলির শরীরে থাকা পোশাক ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগও ওঠেছে।
আরেফা বেগমের দাবি, এ ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন বিষয় নয়—দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবেশী হাবিবুর রহমান পরিবারটির ওপর অত্যাচার চালিয়ে আসছেন। তাদের স্বামীর ভিটে ও ক্রয়কৃত জমি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা চলছে বারবার। এমনকি একমাত্র ছেলেকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে বাড়ি ছাড়া করা হয়েছে। বর্তমানে আরেফা বেগম, তাঁর পুত্রবধূ এবং চার নাতি-নাতনিসহ একটি জীর্ণ ঘরে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন।
বিধবা আরেফা বলেন, “আমার স্বামীর জমি আমরা কিনছি, ওরা জোর করে দখল করতে চায়। বিচার চাইতে গেলে কেউ কথা শোনে না। আমরা গরিব মানুষ, তাই কেউ পাশে দাঁড়ায় না। এখন যদি সঠিক বিচার না পাই, তাহলে আমাদের বাঁচার কোনো উপায় নেই।”
অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান বলেন, “ওরা আমার জায়গায় মুরগির ঘর তুলতে গিয়েছিল, আমি শুধু বাধা দিয়েছি এবং ঘরটি সরিয়ে ফেলেছি।”
চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মশিউর রহমান বলেন, “হাবিবুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে এই গরিব পরিবারটিকে উচ্ছেদের চেষ্টা করছে। সে কোনো সালিশ বা গ্রাম্য বিচার মানে না।”
এ বিষয়ে ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মারুফ হোসেন জানান, “এখনো পর্যন্ত মারধরের বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়দের দাবি, বিধবা আরেফা বেগমের মতো অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে সমাজ ও প্রশাসনকে। না হলে সমাজে প্রভাবশালীদের হাতে নির্যাতিত হওয়ার সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।
Leave a Reply