শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৫২ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক:চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে কমান্ডো অভিযানে নিহত মো. পলাশ আহমদকে শনাক্ত করেছেন তাঁর বাবা। পরিবারের দেয়া নাম পলাশ হলেও সে নিজেকে মাহাদি বলে পরিচয় দিত। বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামে।
পলাশ সোনারগাঁয়ের তাহেরপুর মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে সোনারগাঁ ডিগ্রি কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হয়। এরপর সে আর পড়াশোনা করেনি। ছোট বেলা থেকেই অবাধ্য ছিল সে। একসময় জড়িয়ে পড়ে নেশায়। পরে বাংলা চলচ্চিত্রে কাজ করার চেষ্টাও করে সে।
পলাশের (মাহাদী) বাবা পিয়ার জাহান বলেন, স্থানীয় তাহেরপুর সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে ২০১১ সালে পলাশ দাখিল পাস করেন। পরে সোনারগাঁ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন। প্রথম বর্ষের পর পড়াশোনা বন্ধ করে দেন। এরপর বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় চলে যান। ঢাকায় কী করতেন, কোথায় থাকতেন পলাশ, সে সম্পর্কে তাঁরা কিছু জানতেনও না।
তিনি বলেন, গত ১০ মাস আগে চিত্রনায়িকা সিমলাকে নিয়ে পলাশ বাসায় আসে। তখন সে জানায়— সিমলাকে নিয়ে এলাকায় বেড়াতে এসেছে। কিন্তু দেড় থেকে দুই মাস পর লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারি তাদের বিয়ে হয়েছে। এর ঠিক দেড় থেকে দুই মাস পরে পলাশ আবারও সিমলাকে নিয়ে বাড়ি আসে। তখন জানায়, সিমলাকে সে বিয়ে করেছে। প্রথমে না মানলেও পরবর্তীতে বিয়ে মেনে নেই এবং বউকে (সিমলা) বলি ছেলেকে ভালো করে তুলতে। এরপর পলাশের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ হতো না।
পিয়ার জাহান বলেন, এর আগে পলাশ আরেকটি বিয়ে করে বগুড়াতে। তার একটি বাচ্চাও আছে। কিন্তু প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এছাড়া, এলাকায় নারী কেলেঙ্কারির একটি ঘটনায় মামলাও হয়েছিল পলাশের নামে। সেই মামলায় ২০ দিন জেল খেটে সে জামিন পেয়েছিল।
কান্নজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, সর্বশেষ ২০-২৫ দিন আগে পলাশ বাড়িতে আসে। বাড়িতে আসার পর তার আচরণে বিরাট পরিবর্তন দেখা দেয়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া শুরু করে, মসজিদে গিয়ে আজানও দিয়েছে। সর্বশেষ শুক্রবার বাড়ি থেকে যাওয়ার আগে বলেছে সে কাজের সন্ধানে দুবাই যাবে। এ জন্য আমি ৫০০ দিরহামও এনে দেই। গতরাত একটার দিকে সোনারগাঁ থানা পুলিশের একটি দল আমাদের বাসায় আসে এবং বাড়ি তল্লাশি করে। তখন ওর মৃত্যুর খবর জানতে পারি।
তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে পলাশ ছোট। তার দুই বোনের আগেই বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট একটি বোন আছে সংসারে।
সোনারগাঁ থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ জানান, বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় নিহতের ছবি রোববার রাত ১টার দিকে দুধঘাটা গ্রামের পিয়ার জাহানের বাড়িতে নিয়ে দেখালে তারা ছবিটি পলাশের বলে নিশ্চিত করে। সে নেশাগ্রস্ত ছিল বলে জানতে পেরেছি।
Leave a Reply