শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০২ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি :
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ঝালকাঠির শেখেরহাট ইউনিয়নের ১০ শয্যা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি দুই বছরেও চালু করা হয়নি। তিন তলা এ ভবন উদ্বোধনের পর দুই বছর অতিবাহিত হলেও এর কার্যক্রম চালু হয়নি। দেশের প্রতিষ্ঠিত ওষুধ কোম্পানি অপসোনিন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রউফ খান ওই ভবন নির্মাণের জন্য জমি দান করেছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, আধুনিক কেন্দ্রটিতে স্থাপন করা হয়েছে ডেলিভারি রুম, সলিড রুম, আইউডি রুম, জেনারেল ওয়ার্ড, ডিসপেনসারি, আল্ট্রাসনোগ্রাম রুম, ডাক্তার ও সেবিকাদের পৃথক রুম, ব্রেস্ট ফিডিং, গার্ড রুম এবং পাম্প হাউজ। অপারেশন থিয়েটার রুমে লাগানো হয়েছে এয়ারকন্ডিশন। অথচ এসব রুম বা বিভাগ থাকলেও নেই সরঞ্জাম, আসবাবপত্র, লোকবল ও ওষুধ। ঠায় দাঁড়িয়ে আছে শুধুমাত্র ভবনটি।
অত্যাধুনিক চিকিৎসার জন্য সব আয়োজন করা হলেও ভবনটি ছাড়া নেই কিছুই। পাম্প হাউজে মটর স্থাপন করা হলেও তা চালু না করায় পানি নেই। ভবন নির্মাণের পর বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়। কিন্তু প্রায় ৪২ হাজার টাকা বকেয়া বিলের কারণে তা বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বর্তমানে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের এফডব্লিউসি রোজিনা আক্তারকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে এই ভবনে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাই প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের দায়সারা সেবা দেয়া হচ্ছে। এফডব্লিউসি রোজিনা আক্তার জানান, পানি বিদ্যুিবহীন এই বিশাল ভবনে আমাকে কিছু সাধারণ ওষুধ বরাদ্দ দিয়ে এখানে পাঠানো হয়েছে।
অথচ ১০ শয্যার কল্যাণ কেন্দ্রটি উদ্বোধন করে শয্যা, ওষুধ, লোকবল এবং ফার্নিচার বরাদ্দ করা হয়নি। আমাকে এখানে অতিরিক্ত দায়িত্বে সংযুক্ত করা হয়। পাশাপাশি এফডব্লিউসি’র স্যাটেলাইট ক্লিনিকের দায়িত্বও পালন করতে হচ্ছে। যা আমার একার পক্ষে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৩০/৪০ জন রোগী এখানে সেবা নিতে আসে। তিনি আরো জানান, এখানে কোনো জটিল রোগের চিকিৎসা করার সুযোগ নেই। শুধুমাত্র শিশু ও মায়েদের চেকআপ করার পাশাপাশি কৃমি, ভিটামিন, জ¦র ও ব্যথাজনিত রোগের কিছু ওষুধ দেয়া হচ্ছে।১০ শয্যা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা শিরযুগ এলাকার মারুফা বেগম জানান, সরকার এত টাকা খরচ করে হাসপাতাল করলেও শয্যা চালু না করায় আমাদের দুর্ভোগ লাঘব হচ্ছে না।
কবে নাগাদ এটি চালু করে এলাকার মা শিশুদের স্বাস্থ্য সেবার সমস্যা সমাধান করবে তা সরকার ভালো জানে। শেখেরহাট ইউপি চেয়ারম্যান নূরুল আমিন খান সুরুজ বলেন, এটি চালু করা হলে ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের মা ও শিশুরাও এখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে উপকৃত হতো।
কিন্তু চালুর বিষয়ে জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেও কোনো সুফল পাইনি। ঝালকাঠি জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক ফেরদৌসি বেগম জানান, শেখেরহাটের ১০ শয্যার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ভবন উদ্বোধন করা হলেও চালু করার বিষয়টি সম্পূর্ণ মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। তবে যেহেতু সেখানে অনেক রোগী আসে তাই এফডব্লিউসিকে সাময়িকভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু সেখানে পানি বিদ্যুৎ না থাকায় তাকে সেখান থেকে শীঘ্রই প্রত্যাহার করে নেবো।
Leave a Reply