সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০২ অপরাহ্ন
এম.কে. রানা ॥ ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি। তবে খুশির ভিন্নতা রয়েছে। আর তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে কেবলমাত্র ঈদ এলেই। এই ঈদের আনন্দের মধ্যে ধনী-গরিবের স্পষ্ট ব্যবধান লক্ষণীয় একটি বিষয় আমাদের চলমান সমাজে। কেউবা পরিবারের সবার জন্য নতুন পোষাক, দামী গরু কিনে কোরবানী দেয়।
কেউবা আবার নিজের সাধ্যের মধ্যে থেকে শুধুমাত্র সন্তানের জন্য নতুন পোষাক কেনে। কখনোবা অন্যের দেয়া নতুন পোষাকের প্রতি তাকিয়ে থাকে। আর ঈদুল আযহার সময় কারো সন্তান দামী গরু শখের সাথে পালন করে কোরবানীর আগ পর্যন্ত। আবার কারো সন্তান খুঁজতে থাকে কোন বাড়িতে বড় গরু কোরবানী দেয়া হয়। আশা এক টুকরো গোশত, আর তা যদি একটু পরিমানে বেশি পাওয়া যায় (!)।
পশু কোরবানী দেয়া আল্লাহর সন্তষ্টির জন্য। এক্ষেত্রে যে যার সাধ্য মতো পশু কিনে কোরবানী দেন। তবে যারা কোরবানী দিতে পারেন না সেই সকল দরিদ্র মানুষগুলো অপেক্ষায় থাকে কোরবানী কোথায় দেয়া হয়। আমাদের দেশে এমন অনেক নজির আছে যে, কোরবানীর গোশত আনতে গিয়ে পদদলিত হয়ে মারা গেছেন কেউ কেউ। আবার এমন চিত্রও ফুটে উঠেছে যে, গেটে তালা লাগিয়ে তলা (নীচ) দিয়ে গোশতের টুকরো দেয়।
বিষয়টি বিবেককে নাড়া দেয়ার মতো। কোরবানীর দিন অসহায় দরিদ্র পরিবারের যে শিশুটি এক টুকরো গোশত পায় তার চেহারা দেখলে মনে হবে পৃথিবীর সকল আনন্দ যেন তার চেহারায় ফুটে উঠেছে। নগরীর একটি দরিদ্র পরিবারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মা বলেন, “ভাই মোগো আর ঈদ, মোরা মাইনসের বাড়ি দিয়া যে গোশত পাই হ্যাতেই খুশি”। তিনি আরো বলেন, “বাপ মরা মোর দুইডা মাইয়া (মেয়ে), তয় এ্যাহোন দ্যাশে (দেশে) যা শুরু অইছে হ্যাতে মাইয়াগো বাইরে যাইতে দেইনা। হেরপন্নে মুই নিজেই অগো মুহে (মুখে) এট্টু গোশত দেওয়ার পন্নে বাড়ি বাড়ি ঘুইর্যা মাংস আনি”।
“তয় কোন কোন বাড়ির লোকজন এট্টু বেশি মাংস দেয়”। নগরীর নতুন বাজার এলাকায় থাকে পলাশ (ছদ্ম নাম)। সে জানায়, “ভাই মোগো চিন্তা কেডা হরে। দ্যাহেন না রাস্তায় খেয়ার রাখছি মোগো এলাকায় কেডা বড় গরু কেনে। ঈদের দিন হ্যার বাড়িতেই যামু। মায় কইছে, কোরবানি ছাড়াতো মোরা মাংস চোহে দেহি, খাইতে পারিনা। তয় কোরবানীর মাংস দিয়া কিছুদিন ভাল খাওয়া যায়”।
Leave a Reply