মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২৬ পূর্বাহ্ন
দশমিনা প্রতিনিধি॥ পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার চরহাদী ফরেস্টের বিট কর্মকর্তার দাবি করা টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ১২টি মহিষ আটকের ঘটনায় মো: সুমন (২০) নামের এক যুবক বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার চরহাদী ফরেস্টের বিট কর্মকর্তা মো: মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে চরহাদী সংরক্ষিত বনঞ্চাল থেকে ১২টি মহিষ আটক করে। ওই গ্রামের মো: আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের ছেলে সুমন তাদের পালের মহিষ কম দেখতে পেয়ে অনেক খোঁজাখুঁজির পরে ওই রাতে জানতে পারে তার মহিষগুলো মিজান ফরেস্টার আটক করে রেখেছেন। অভিযোগ উঠেছে চরহাদীর বিট অফিসার মিজানের সাথে সুমনের ১২ হাজার টাকায় মাসিক চুক্তি হয়েছে সংরক্ষিত বনঞ্চালে পালের মহিষ নিয়ে ঘাস খাওয়াবে।
নিহতের মা মমতাজ অভিযোগ করে জানান, ‘ফরেস্টের ঘাস টাকা দিয়ে মহিষগুলোকে খাওয়াতে রাজি না আমার স্বামী। কিন্তু আমার ছেলে সুমন ১২ হাজার টাকা চুক্তিতে ফরেস্টার মিজানকে চার হাজার টাকা নগদ দিয়েছে আর বাকি টাকা না দিতে পারায় ১২টি মহিষ ওই ফরেস্টার মিজান আটকে রাখে। আমার ছেলে বাকি আট হাজার টাকা যোগাড় (সংগ্রহ) করতে পারেনি। পরে মহিষ না আনতে পেরে তরমুজের বিষ খেয়ে মরে গেছে।’
নিহতের বাবা আনোয়ার হোসেন জানান, ‘ওই দিন আমি চরে ছিলাম না। রাতে খবর পাই আমার ছেলে খুব অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। আমি হাসপাতালে গিয়ে দেখি সুমন আর বেঁচে নেই। পরে জানতে পারি আমার ছেলে মরেছে ফরেস্টার মিজানের কারণে। আমার ছেলে সুমনের মৃত্যুর জন্য দায়ী ফরেস্টার মিজান। আমি মিজানের বিচার চাই।’
চরহাদী ফরেস্টের বিট কর্মকর্তা মিজান জানান, ‘আমি কোনো টাকা-পয়সা নেইনি। সংরক্ষিত বনঞ্চাল থেকে ১২টি মহিষ আটক করেছি সুমন আসার পরে দিয়ে দিয়েছি মহিষগুলো।’
দশমিনা উপজেলা বন কর্মকর্তা (রেঞ্জ) জানান, ‘আমি শুনেছি চরহাদীর সংরক্ষিত বনঞ্চালে মহিষ প্রবেশ করায় আটক করা হয়েছে।’
দশমিনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জসীম জানান, লাশটি উদ্ধার করে পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। আর এ ঘটনা তদন্তের জন্য থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। নিহতের পরিবার থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply