বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ০৫:০২ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সাম্প্রতিক এক অডিও ক্লিপকে কেন্দ্র করে এই আদেশ জারি করা হয়, যেখানে ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পাওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। ২৫ মে রোববার আদালত এই আদেশ জারি করে এবং পরদিন ২৬ মে তা বিজ্ঞপ্তি আকারে দুটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ করা হয়। আদালতের আদেশ অনুযায়ী, শেখ হাসিনাকে আগামী ৩ জুন সকাল ১০টায় ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে বলা হয়েছে।
অডিওটি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং এতে একটি বিতর্কিত বক্তব্য উঠে আসে, যেখানে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, “আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, তাই ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি।” আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ফরেনসিক বিশ্লেষণ চালিয়ে নিশ্চিত করেছে যে, অডিও ক্লিপটি শেখ হাসিনার কণ্ঠেই রেকর্ড করা হয়েছে।
এই বক্তব্যকে আদালতের ওপর হুমকি এবং বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আদালত অবমাননার অভিযোগে তাকে হাজির হতে বলা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, “এটি দেশের বিচারিক প্রক্রিয়ার প্রতি প্রকাশ্য অবজ্ঞা এবং হুমকি।”
ঘটনাটি দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণের মধ্যেও উত্তেজনা ও কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, এই পদক্ষেপ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার এক গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে।
শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। তার আইনজীবীরাও সংবাদমাধ্যমের কাছে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এমন একটি প্রক্রিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন।
উল্লেখযোগ্য যে, গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই শেখ হাসিনা আত্মগোপনে রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই।
দেশবাসীর নজর এখন ৩ জুনের দিকে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ট্রাইব্যুনালে উপস্থিতি এবং তার প্রতিক্রিয়ার মধ্য দিয়ে মামলার ভবিষ্যৎ দিক নির্ধারিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন, এটি শুধু একটি মামলার মোড় ঘোরাবে না, বরং দেশের রাজনীতিতেও নতুন মাত্রা যোগ করবে।
Leave a Reply