রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৭ পূর্বাহ্ন
পিরোজপুর প্রতিনিধি ॥ পিরোজপুরের স্বরূপকাঠীতে প্রতিনিয়ত বেরেই চলছে সমবায়ের নিবন্ধর নেয়া সমিতির সংখ্যা। আর উপজেলা থেকে পাড়া মহল¬ায় হিসাবের খাতা খুলে বসেছে সুদের পসরা। অভিযোগ রয়েছে, সমাবায়ের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সমবায় সমিতির নিবন্ধন নিয়ে চলছে গরীবের রক্তচোষা এই অবৈধ ব্যবসা।
সরেজমিনে উপজেলার ইন্দেরহাট ও মিয়ারহাট বাজারে দিনের সকাল ভাগে দেখা মিলবে এমন হরেক নামের সমবায় সমিতির, যাদের কর্মীরা প্রতিদিন কিস্তি তুলছেন।
গ্রামীন বাংলা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির কিস্তি ও সঞ্চয় তুলতে আসা এক কর্মী মিয়ারহাট তরকারি বাজারে নিয়মিত কিস্তির টাকা তোলেন। তিনি জানান, রফিকুল ইসলামকে দশ হাজার টাকা লোণ দেয়া হয়েছে। তিন মাস দশ দিনে দশ শতাংশ সুদে এগার হাজার টাকা নেয়া হবে।
দশ হাজার টাকা লোনের জন্য তাকে এক হাজার টাকা প্রথমে সঞ্চয় ও প্রতিদিন দশ টাকা সঞ্চয় সাথে একশত টাকা কিস্তি দিতে হবে। অর্থাৎ ক্ষেত্রবিশেষে বাৎসরিক ৩০ শতাংশ এবং চক্রবৃদ্ধি হারে ১০৮ শতাংশ বা তার বেশি সুদ দিতে হচ্ছে। সঞ্চয়ের লভ্যাংশের ব্যাপারে তিনি জানান, তিনি একছর যাবৎ সঞ্চয় রাখলে সঞ্চয়কৃত অর্থের উপর একটা লাভ দেয়া হবে। অর্থাৎ সমিতি সুদ নিবে তিন মাস দশ দিনে এবং সঞ্চয়ের লাভ দিবে এক বছর রাখলে।
তবে রফিকুল ইসলাম এবিষয়ে বলেন, আমি তাদের থেকে নয় হাজার টাকা এনেছি যা তিন মাস দশ দিনে প্রতিদিন কিস্তি ও সঞ্চয় দিয়ে শোধ করে দুই হাজার টাকা সুদ দেব অর্থাৎ বাৎসরিক হিসাবে ৬০ শতাংশ পক্ষান্তরে সঞ্চয় বাবদ কেটে রাখা এক হাজার ও নতুন সঞ্চয়ের টাকা ফেরৎ পাব লাভ ছাড়া।
অন্যদিকে ইন্দেরহাট বাজারের একতা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি নামের একটি সমিতি সমবায়ের নিবন্ধন না থাকা সত্ত্বেও সমবায়ের নাম ব্যবহার করে পরিচালিত হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সমবায় অফিস সূত্রে জানা যায়, একতা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি নামে তাদের অফিসের অনুমোদনকৃত কোন সমবায় সমিতি নাই।
এদিকে প্রচেষ্টা শ্রমজীবী সমবায় সমিতি লিঃ নামের সমবায় সমিতির সাওন নামের দৈনিক সঞ্চয় ও কিস্তির পাশ বইয়ে দৈনিক একশত টাকা করে সঞ্চয় সহ ত্রিশ হাজার টাকা ঋনের দৈনিক তিনশত টাকা করে কিস্তি একশত পনের দিনের মধ্যে চার হাজার পাঁচশত টাকা লাভে মোট সুদ আসল সহ চৌত্রিশ হাজার পাঁচশত টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
তবে ভুক্তভোগীদের দাবী, ব্যাংক লোনে জটিলতা ও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও না পাওয়ায় সহজলভ্য অতিসুদি এসব সমিতি থেকে লোণ নিতে বাধ্য গরীব শ্রেণীর মানুষ। তাই যেকোন ব্যবসার থেকে লাভজনক ও সহজলভ্য সমবায় কর্মকর্তার মাধ্যমে সমবায় নিবন্ধনে অবৈধ ব্যবসা বৈধ উপায়ে পরিচালিত হওয়ায় এ ব্যবসাটি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা হাফিজ আহম্মদ জানান, সমবায় সমিতির কমিটি সিদ্ধান্ত করবে তারা কত শতাংশ লাভ নিবে, কিভাবে কিস্তি তোলবে।
এখানে সুদের হার ও কিস্তির কোন নিয়ম সরকারি ভাবে নির্দিষ্ট নয়। আমরা বৎসরিক একটা অডিট করি এবং এর মাধ্যমে সমিতির সকল খরচ বাদে লাভের ৮/১০ শতাংশ সরকারি রাজস্ব নেই।
পিরোজপুর সমবায় কর্মকর্তা আল আমিন বলেন, সমবায় সমিতির নিয়ম অনুযায়ী মাসে একটা কিস্তি ও সর্বোচ্চ ১১শতাংশ লাভ নিতে পারবে।
Leave a Reply