শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৮ পূর্বাহ্ন
ভোলা প্রতিনিধি॥ ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় যৌতুক দিতে অস্বীকার করায় মোসা. আসমা বেগম নামের এক গৃহবধূকে শিকলে বেধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে রক্তাক্ত করেছে তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন।
নির্যাতন শেষে তাকে শিকল দিয়ে বেধে একটি রুমের মধ্যে আটকে রাখে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোরে গৃহবধূর স্বামী মো. সাহাবুদ্দিন ও শ্বশুর মো. আনোয়ার উল্যাহকে আটক করেছে পুলিশ। উপজেলার দেউলা ইউনিয়নের চর টিটিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মামলা ও গৃহবধূ আসমা বেগমের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত চার বছর পূর্বে বোরহানউদ্দিন উপজেলার দেউলা ইউনিয়নের চর টিটিয়া গ্রামের মো. আনোয়ার উল্যাহর ছেলে মো. শাহাবুদ্দিনের সাথে শরীয়াহ মোতবেক বিয়ে হয় আসমা বেগমের। বিবাহের কিছুদিন পর থেকেই স্বামী শাহাবুদ্দিন তার কাছে তিন লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে।
আসমা বেগম টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে বিভিন্ন সময়ে মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে আসমা বেগমের বাবা মেয়ে জামাইকে এক লক্ষ টাকা দেয়। এই টাকা পেয়ে শাহবুদ্দিন ও তার পরিবার কিছু দিন শান্ত থাকলেও গত কয়েক দিন আগ থেকে আবারও দুই লক্ষ টাকা দেওয়ার জন্য আসমা বেগম ও তার পরিবারের উপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।
এমনকি দাবিকৃত দুই লক্ষ টাকা না দিলে শাহাবুদ্দিন আসমা বেগমকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় বিবাহ করবে বলেও হুমকি দিতে থাকে। সর্বশেষ গত (১ সেপ্টেম্বর) রোববার সকাল ১০টার দিকে স্বামী শাহাবুদ্দিন, শ্বশুর আনোয়ার উল্যাহ ও শাশুড়ি নুর জাহান বেগম মিলে আসমা বেগমকে তার বাবার কাছ থেকে দুই লক্ষ টাকা এনে দিতে বলে। সে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা সবাই মিলে তাকে কাটাযুক্ত লাঠি দিয়ে এলাপাথারি মারধর করতে থাকে। পরে তাকে শিকল দিয়ে হাত ও পা তালাবদ্ধ করে একটি রুমের মধ্যে আটকে রাখে।
সোমবার সকালে তারা হাতের শিকল খুলে দিলে আসমা বেগম পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এ অবস্থায় আসমা বেগম তার বাবা ও ভাইকে ফোন করলে তারা এসে তাকে উদ্ধার করে বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে সে বোরহনাউদ্দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় সোমবার রাতে আসমা বেগম বাদী হয়ে স্বামী মো. শাহাবুদ্দিন,শ্বশুর মো. আনোয়ার উল্যাহ ও শাশুড়ি নুর জাহান বেগমকে আসামি করে বোরহানউদ্দিন থানায় মামলা দায়ের করেন।
বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মু. এনামুল হক জানান, এ ঘটনায় গৃহবধূ বাদী হয়ে তিন জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে। ইতোমধ্যে মামলার ১নং ও ২নং আসামিকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
Leave a Reply