শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ১০:২০ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ ইসরায়েলি বাহিনী বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ইরানের রাজধানী তেহরানে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে। আলজাজিরা’র খবরে জানানো হয়েছে, এই অভিযানে ৬০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান অংশ নেয় এবং তারা তেহরানের বিভিন্ন সামরিক ও কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে প্রায় ১২০টি ভারী বোমা ফেলে। ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে, তারা ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনকারী একাধিক শিল্প স্থাপনায় সফলভাবে হামলা চালিয়েছে।
এই আক্রমণের পর ইরানে প্রাণহানির সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। যদিও সরকারি সূত্রে বলা হয়েছে নিহতের সংখ্যা দুই শতাধিক, তবে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার তথ্য অনুযায়ী প্রকৃত সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়ে গেছে। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে বিভ্রান্তি ও উদ্বেগ বিরাজ করছে, কারণ ইরান সরকার সুনির্দিষ্টভাবে হতাহতদের তালিকা প্রকাশ করছে না।
এদিকে, ইরানও পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত রেখেছে। শুক্রবার ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা ইরান থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে। তবে এর কিছুক্ষণ পরেই দক্ষিণ ইসরায়েলের বিয়ারশেবা শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিস্ফোরণ ও আগুন লাগার খবর আসে। টেক পার্ক ও মাইক্রোসফট অফিসের নিকটবর্তী এলাকাগুলো বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
জরুরি সেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, দমকল বাহিনী বিয়ারশেবার বিভিন্ন অংশে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এতে ওই অঞ্চলের বাসিন্দারা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এবং অনেকেই এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েল-ইরানের মধ্যকার এই সংঘাত এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে নিয়ন্ত্রিত সীমান্ত লড়াইয়ের সীমা অতিক্রম করে তা সরাসরি যুদ্ধ পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। এতে শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা বিশ্ব অর্থনীতি ও রাজনীতি ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে, যাতে দুই দেশের মধ্যে সহিংসতা বন্ধ করে কূটনৈতিক সমাধানের পথ খোঁজা যায়। তবে বাস্তবতা হলো, এখন পর্যন্ত কোন পক্ষই আলোচনায় বসার ইঙ্গিত দেয়নি। বরং হামলা-পাল্টা হামলার প্রবণতা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
Leave a Reply