শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৪ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: ঘরের দাওয়ায়, কখনো ধান কাটা মাঠে গা-শিউরানো বাতাসের চাঁদোয়ায়, চন্দ্রালোকে ভিজে অথবা হয়তো হ্যাজাক বাতির অল্প আলোতে আর বাকিটা আঁধারে ঢাকা কোনো রহস্যঘেরা রাতে গাওয়া গীতিকাব্যের মধ্যে সর্বাধিক প্রসিদ্ধ ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’। এই গীতিকার এক অমর প্রেমকাহিনী ‘মহুয়া’ পালা প্রায় ৪’শ বছর আগেকার।সেই কাহিনী নিয়ে বরিশালে অন্যতম নাট্য সংগঠন খেয়ালী গ্রুপ থিয়েটার সৃস্টি করেছে ৯৭ তম প্রযোজনা। এই নাটকটি শনিবার থিয়েটার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। নাটকটির প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান।
নাটকটির কাহিনী সংক্ষেপে বলা যায়, ৬ মাসের পথের দূরত্বে গারো পাহাড়ের ওপর হিমানী পর্বত। এর উত্তরের সাগর পাড়ের চান্দ সূরুজ নাই আন্দারিতে ঘেরা গভীর বনে বাস করে ডাকাত সর্দার বেদে হুমরা বাইদ্যা। ১৬ বছর আগে ধনু নদীর পাড়ের কাঞ্চনপুর গ্রামের এক ব্রাহ্মণের ছয় মাসের কন্যাকে চুরি করে আনে সে। তাকে লালন-পালন করে বড় করে, বিভিন্ন কসরত শেখায় আর খেলা দেখিয়ে বেড়ায়। উপচে পড়া রূপ ‘আন্দাইর ঘরে থুইলে কন্যা জ্বলে কাঞ্চা সোনা’ নাম মহুয়া সুন্দরী। একবার বামনকান্দা গ্রামের ব্রাহ্মণ নদ্যার চান ঠাকুরের বাড়িতে খেলা দেখাতে যায় বাপ-বেটি। মহুয়ার কসরতে মুগ্ধ রূপবান নদ্যার ঠাকুর হুমরা বাইদ্যার দলকে উলুইয়াকান্দা নামক স্থানে বসতের অনুমতি দেন।
নদের চাঁদ ঠাকুরের সঙ্গে মহুয়ার মন দেয়া-নেয়া, বাধাঁ বিপত্তি নিয়ে দুই হতভাগ প্রেমিক-প্রেমিকার কাহিনী ফুটে উঠেছে এই নাটকটিতে। ময়মনসিংহের এক পালাকার ব্রাহ্মণ দ্বিজ কানাই তার কুঁড়েঘরে বসে যে পালা লিখেছেন তাই একদিন এক দেশ থেকে অন্য দেশে বয়ে যায়, সময়ের পাখায় চড়ে, ভাষা পরিবর্তন করে ইউরোপের কালজয়ী রোমান্স ‘ট্রিস্টান অ্যান্ড ইসল্ড’ হয়ে। মহুয়া পালায় মোট ৭৫৫ ছত্র আছে। দীনেশচন্দ্র সেন এই পালাকে ২৪টি অধ্যায়ে বিভক্ত করেছেন। এই নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন অপূর্ব কুমার রায় অপু। লোকসংস্কৃতি সাধনায় খেয়ালী গ্রুপ থিয়েটারের ৯৭তম প্রযোজনা মহুয়া। থিয়েটারের সভাপতি এ্যাড. নজরুল ইসলাম চুন্নু আশা প্রকাশ করেছেন, এক ঝাঁক নবীন ও তরুণ নাট্যকর্মীর দীর্ঘ পরিশ্রমের ফসল মহুয়া দর্শকদের আপ্লুত করবে।
Leave a Reply