সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন
পিরোজপুর প্রতিনিধি॥ কচাঁ, সন্ধ্যা ও কালীগঙ্গা নদীবেষ্টিত পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা। এ উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় বেড়িবাঁধ না থাকায় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে কয়েকশ একর ফসলি জমি ও বেশকিছু ঘরবাড়ি। এসব জমি সাধারণ জোয়ারের পানিতে ডুবে যাওয়ায় রবিশস্য উৎপাদন করতে পারেন না কৃষক।
অসময়ে জমি পানিতে ডুবে যাওয়ায় কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে প্রতি বছর। কৃষকদের অভিযোগ, ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনের ৩ বছর পার হলেও অর্থের অভাবে হয়নি বেড়িবাঁধ নির্মাণ। আর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছে, অর্থ বরাদ্দ পেলেই ওই এলাকায় নির্মাণ হবে বেড়িবাঁধ।
কাউখালীর শিয়ালকাঠী ইউপির কৃষক রুস্তম আলী ও দেলোয়ার হোসেন জানান, কৃষি ফসল ও বাড়িঘর রক্ষার জন্য স্বাধীনতার পর অল্পকিছু বেড়িবাঁধ নির্মাণ হলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যা, জলোচ্ছ্বাসসহ সিডর, আইলা ও আম্পানের মতো বড় বড় ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে বেড়িবাঁধগুলো। মাঝে মধ্যে বাঁধগুলো পুন:নির্মাণ হলেও তা বড় ধরনের জলোচ্ছ্বাসের ধাক্কায় ধুয়ে মুছে যায়।
স্থানীয় সাংবাদিক এনামুল হক জানান, এলাকাবাসীর দাবির পেক্ষিতে ২০১৮ সালের ২১ এপ্রিল সরকারের তৎকালীন পানিসম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ভিটাবাড়িয়া থেকে শিয়ালকাঠী পর্যন্ত কচাঁ নদীর তীরবর্তী এই বেড়িবাঁধ পুন:নির্মাণের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রকল্পটি ভান্ডারিয়া অংশে কাজ শেষ করে কাউখালী অংশের কাজ ধরার শুরুতেই বন্ধ হয়ে যায়। অদ্যাবধি অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় প্রকল্পের বাকি কাজ সমাপ্ত করতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে ক্ষুব্ধ ভুক্তভোগীরা।
একই ইউপির সাফলেজা গ্রামের জেলে মো. বেল্লাল জানান, নদীর পাড়ের দুর্গত এই এলাকায় ভোটের সময়ই দেখা মেলে এমপি-মন্ত্রী বা সরকারি আমলাদের। ভোট শেষে কেউ রাখে না উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি।
কাউখালী উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মো. মৃদুল আহম্মেদ সুমন শিকার করছেন কাউখালীর নদীর পাড় গ্রামগুলোর মানুষের দুর্ভোগের কথা।
তিনি বলছেন, নদী রক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবি উপজেলার সার্বিক উন্নয়নের মাসিক মিটিংয়ে বার বার তুলে ধরেন। তবে মাসের পর মাস পার হলেও হচ্ছে না সুরাহা।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহাবুবে মওলা মো. মেহিদী হাসান জানান, আগামী বাজেটে অর্থ বরাদ্দ পেলেই ওই এলাকায় নির্মাণ হবে বেড়িবাঁধ। প্রতিবছরই উপকূলীয় জেলা পিরোজপুরে আঘাত হেনেছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যা, আইলা,সিডর, আম্পানের মতো বড় বড় ঘূর্ণিঝড়। দ্রুতই বাধ নির্মাণ না করা হলে সামনে আরো ক্ষতি পোহাতে হতে পারে এসব এলাকার সাধারণ মানুষদের।
Leave a Reply