আগামীকাল ভোট উৎসব, প্রস্তুত বাংলাদেশ Latest Update News of Bangladesh

রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৫ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:




আগামীকাল ভোট উৎসব, প্রস্তুত বাংলাদেশ

আগামীকাল ভোট উৎসব, প্রস্তুত বাংলাদেশ




ডেস্ক রিপোর্ট : নানা কারণে আলোচিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টায় আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। এখন শুধু অপেক্ষা ভোট উৎসবের। আগামীকাল রবিবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হচ্ছে ভোটযুদ্ধ, চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

বিএনপি-জামায়াতসহ তাদের সমমনা দলগুলো এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তার মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পাশাপাশি দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার পথ খোলা রাখায় বিপুলসংখ্যক প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদসহ সব মিলিয়ে ২৮টি রাজনৈতিক দলের এক হাজার ৯৭০ জন প্রার্থী এবার ভোটে অংশ নিচ্ছেন।

তফসিল ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত বড় কোনো অঘটন ঘটেনি।

তবে বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে। এসব ঘটনায় একজন উপজেলা চেয়ারম্যানসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নির্বাচন ঘিরে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সারা দেশে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট নিশ্চিত করে দেশে-বিদেশে এই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছে ইসি।

কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতির জন্য ইসি ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর পক্ষ থেকে ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে আজ শনিবার সকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডাকা হলেও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিগত দিনে ভোটের দিন যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ থাকলেও এবার গণপরিবহন চালু রাখার নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। ফলে যাতায়াতের সুবিধার কারণে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করাই আমাদের লক্ষ্য।

এ জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া দরকার, এর সবই নেওয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে ব্যালট পেপারও পাঠানো হয়েছে। শেষ সময়ের প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে, যাতে কোনো ধরনের দুর্বলতা বা ত্রুটি না থাকে। ভোটাররা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটদান করতে পারবেন বলে আশা করি।’

ইসি নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা জানিয়েছে, প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনের নির্বাচন স্থগিত করায় রবিবার ২৯৯টি আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আগের রাতে কারচুপি রোধ করতে এবারই প্রথম প্রথম বেশির ভাগ কেন্দ্রে ভোটের দিন সকালে ব্যালট পেপার যাচ্ছে। আগামীকাল ভোটের দিন সকালে ৯৩ শতাংশ কেন্দ্রে, অর্থাৎ ৩৯ হাজার ৬১টি কেন্দ্রে ব্যালট পেপার যাবে। আর ৭ শতাংশ কেন্দ্রে, অর্থাৎ দুই হাজার ৯৬৪ কেন্দ্রে শনিবার ব্যালট পেপার পৌঁছাবে। দুর্গম এলাকাগুলোতে আজ শনিবার ব্যালট পেপার পৌঁছাবে। কোথাও কোথাও হেলিকপ্টারে ব্যালট পেপার পাঠানো হচ্ছে।

এই নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ১৪৮টি এবং ভোটকক্ষ দুই লাখ ৬১ হাজার ৫৬৪টি। এসব কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে এরই মধ্যে ৯ লাখ ৯ হাজার ৫২৯ জন ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাকে (প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার) প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এতে প্রিজাইডিং অফিসার চার লাখ ছয় হাজার ৩৬৪ জন, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার দুই লাখ ৮৭ হাজার ৭২২ জন এবং পোলিং অফিসার পাঁচ লাখ ৭৫ হাজার ৪৪৩ জন রয়েছেন।

এই নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন ১১ কোটি ৯৩ লাখ ৩২ হাজার ৯৩৪ জন, যার মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ছয় কোটি পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ১৯৭, নারী ভোটারের সংখ্যা পাঁচ কোটি ৮৭ লাখ ৩৯ হাজার ৮৮৯ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ৮৪৯ জন। এবার নারীর চেয়ে ১৮ লাখ ৫২ হাজার ৩০৮ পুরুষ ভোটার বেশি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুরুষ ভোটার ছিল পাঁচ কোটি ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৫ জন এবং নারী ভোটার ছিল পাঁচ কোটি ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩১২ জন। নারীর চেয়ে সে সময় ৯ লাখ ছয় হাজার ৫৩ জন পুরুষ ভোটার বেশি ছিল।

এই নির্বাচনে আদালতের নির্দেশনায় বিভিন্নজনের প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার পর মোট প্রার্থী দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৯৭০ জন। এর মধ্যে ৯০ জন নারী প্রার্থী, আর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর রয়েছেন ৭৯ জন প্রার্থী। নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত ২৮টি রাজনৈতিক দল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নিচ্ছে। ওই দলগুলোর প্রার্থীর সংখ্যা এক হাজার ৫৩৪। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী ৪৩৬ জন। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সংখ্যা ২৬৬। আর বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ২৬৫ জন প্রার্থী রয়েছেন। এ ছাড়া তৃণমূল বিএনপির ১৩৫ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ৯৬ জন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির ৭৯ জন, জাসদের ৬৬ জন, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের ৬৩ জন, বাংলাদেশ জাতীয়বাদী আন্দোলনের ৫৬ জন, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের ৪৫ জন, ইসলামী ঐক্যজোটের ৪২ জন, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের ৩৯ জন, তরীকত ফেডারেশনের ৩৮ জন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের ৩৭ জন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ৩০ জন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ২৬ জন, জাকের পার্টির ২১ জন, গণফ্রন্টের ২১ জন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ১৬ জন, জাতীয় পার্টি-জেপির ১৩ জন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের ১১ জন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের ১০ জন, গণতন্ত্রী পার্টির ১০ জন, গণফোরামের ৯ জন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির পাঁচজন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) পাঁচজন, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের চারজন এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) চারজন প্রার্থী রয়েছেন।

গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে কঠোর অবস্থানে ইসি

নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে শুরু থেকে ইসি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক শোকজ, তলব, সতর্ক ও জরিমানার পরও প্রার্থীদের বাগে আনতে পারছে না ইসি। এর পরও সারা দেশে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের হুমকি-ধমকি, হামলা, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলাসহ নানা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চলেছেন অনেক প্রার্থী। এসব অভিযোগে শুক্রবারও কয়েকজন প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থককে শোকজ করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ তাঁদের সমর্থকদের এ পর্যন্ত ৫৮৯টি শোকজ ও তলব নোটিশ দিয়েছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। এর মধ্যে ঢাকা অঞ্চলে সর্বোচ্চ ১৩১টি এবং সিলেট অঞ্চলে সর্বনিম্ন ২১টি নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশের জবাবে এ পর্যন্ত ৩৮৪ প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থক অনুসন্ধান কমিটির কাছে সরাসরি অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে লিখিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এ পর্যন্ত ইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১০ প্রার্থীসহ ৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তা। প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকদের সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হয়েছে। একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। যদিও ওই প্রার্থী উচ্চ আদালতে আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।

এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা ছয় শর মতো অভিযোগ পেয়েছি। এর মধ্যে প্রায় ৪০০ অভিযোগ এন্টারটেইন করেছি। এন্টারটেইন করে নির্বাচন কমিশন কার্যালয় থেকে কী করণীয় বা কী পদক্ষেপ গৃহীতব্য সেটা আমরা সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারদের জানিয়েছি। বিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

নির্বাচনী মাঠে ৬৫৩ জন বিচারিক হাকিম

ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন অপরাধের সংক্ষিপ্ত বিচারকাজ সম্পন্ন করতে শুক্রবার থেকে ৬৫৩ জন বিচারিক হাকিম নির্বাচনী মাঠে দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন। তাঁরা ভোটের আগে-পরে পাঁচ দিন নিয়োজিত থাকবেন। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, তাঁরা ব্যালট পেপার ছিনতাই, ব্যালট পেপার ধ্বংস করা, ব্যালট বক্স ছিনতাই, ভোটদানে বাধা দেওয়া বা বাধ্য করা, ভোটকেন্দ্রের পরিবেশকে ভোটের উপযোগী না রাখা—এসব অপরাধের সংক্ষিপ্ত বিচার করবেন। তাঁদের হাতে কারো বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত বা বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে তিন থেকে সাত বছর জেল ও জরিমানার ক্ষমতা রয়েছে।

অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে গত বুধবার নির্বাচনী মাঠের নিরাপত্তায় মাঠে নেমেছেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। এর আগে গত ২৯ ডিসেম্বর মাঠে নামেন পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। তাঁরা নির্বাচনী মাঠে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করছেন। ভোটকেন্দ্রের ভেতরে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও আনসার সদস্যরা শুক্রবার থেকে মাঠে নেমেছেন। এর আগে ভোটের মাঠের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছে ইসি। বৈঠকে বাহিনীগুলোর প্রধানরা মাঠের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির পুরোটাই ইসিকে অবহিত করেছেন। ইসির পক্ষ থেকেও তাঁদের সর্বশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা নির্বাচনে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দেবেন। এ ছাড়া কিছু এলাকায় বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করবেন তাঁরা। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত ইসি এবং স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দেবেন। তাঁরা জেলা, উপজেলা, মেট্রোপলিটন এলাকার নোডাল পয়েন্ট ও অন্যান্য সুবিধাজনক স্থানে থাকবেন। এর মধ্যে সেনাবাহিনী ৬২টি জেলায় নিয়োজিত থাকছে। সমতলে সীমান্তবর্তী ৪৫টি উপজেলায় বিজিবিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সেনাবাহিনী সীমান্তবর্তী ৪৭টি উপজেলায় বিজিবির সঙ্গে এবং উপকূলীয় চার উপজেলায় কোস্ট গার্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করবে। অন্যদিকে উপকূলীয় ছয় জেলার ১১টি আসনে নৌবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ইসির চাহিদা অনুসারে নৌবাহিনী উপকূলীয় অঞ্চলে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় বেসামরিক প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে। বিমানবাহিনী দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলের ভোটকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় হেলিকপ্টার সহায়তা দেবে। জরুরি প্রয়োজনে নির্বাচনী সহায়তা প্রদানে বিমানবাহিনীর প্রয়োজনীয়সংখ্যক হেলিকপ্টার প্রস্তুত রয়েছে।

গণপরিবহন চালু থাকছে

নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে এবারই প্রথম গণপরিবহন চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে আগামী ৬ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২টা থেকে ৭ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত ট্যাক্সি ক্যাব, পিকআপ, মাইক্রোবাস, ট্রাক ইত্যাদি চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ৫ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২টা থেকে ৮ জানুয়ারি মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা বিশেষ ক্ষেত্রে শিথিল করা যাবে। সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক অথবা জরুরি কোনো কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল রিটার্নিং অফিসারের অনুমোদন সাপেক্ষে চলাচল করতে পারবে।

ভোটার নম্বর ও কেন্দ্র জানতে নির্বাচনী অ্যাপ

ভোটার, প্রার্থী ও নাগরিকদের বিভিন্ন তথ্যের নিশ্চয়তা দিতে ‘স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বিডি’ নামের একটি অ্যাপ চালু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই অ্যাপে ভোটার নম্বর, কেন্দ্রের নাম ও লোকেশন, ভোট পড়ার হার, প্রার্থীদের হলফনামাসহ নির্বাচনের বিভিন্ন তুলনামূলক চিত্র ঘরে বসেই যে কেউ জেনে নিতে পারবেন। অ্যাপে কেন্দ্রভিত্তিক দুই ঘণ্টা পর পর ভোট পড়ার হার জানা যাবে। ভোটার, নাগরিকরা যেন ম্যাপ দেখে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন, সেই ব্যবস্থা আছে অ্যাপে। এ ছাড়া প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে তথ্য নিয়ে দুই ঘণ্টা পর পর আসনভিত্তিক ভোট পড়ার হার জানা যাবে। প্রার্থীর ছবিসহ তথ্যও পাওয়া যাবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, অ্যাপটি ফোনে ইনস্টল করার পর ভোটের ফলাফল, আইন ও বিধি, নিবন্ধিত দলের তালিকা, আসনভিত্তিক প্রার্থীর তালিকা, ভোট পড়ার হার, দলভিত্তিক প্রাপ্ত আসনসংখ্যাসহ নানা পরিসংখ্যান বা তুলনামূলক চিত্রও পাওয়া যাবে। এ ছাড়া মিলবে আগের নির্বাচনের তথ্যও। অ্যাপটি ব্যবহার করতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্ম তারিখ ও মোবাইল নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে হয়। পরবর্তী সময়ে কেন্দ্রের নাম, কেন্দ্রের লোকেশন, ভোটার নম্বর, প্রার্থীদের নাম ও ছবি প্রভৃতি তথ্য জানতে জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম তারিখ দিলে নিমেষেই চাহিদা মোতাবেক তথ্য পাওয়া যাবে।

উল্লেখ্য, গত ১৫ নভেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন সিইসি। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার শেষে ১৮ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসাররা। ওই দিন থেকেই আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হয়।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD