সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ০৩:০০ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের সাম্প্রতিক হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে নতুন প্রজন্মের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘কাসেম বাসির’। ইরানের কুদস বাহিনীর নিহত প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানির নামে নামকরণ করা এ ক্ষেপণাস্ত্র ইতোমধ্যে অঞ্চলজুড়ে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোববার রাতভর চলা এই হামলায় ইসরায়েলের অন্তত ডজনখানেক স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে এবং শতাধিক মানুষ হতাহত হয়েছেন। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বহু মানুষ।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ফার্স জানিয়েছে, এই আক্রমণে ব্যবহৃত ‘হাজ কাসেম গাইডেড ব্যালিস্টিক মিসাইল’ হচ্ছে একটি উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন অস্ত্র, যার পাল্লা ১২০০ কিলোমিটার এবং এটি কঠিন জ্বালানিভিত্তিক। এতে অত্যাধুনিক নেভিগেশন সিস্টেম ও ইলেকট্রনিক যুদ্ধ প্রতিরোধ ব্যবস্থা রয়েছে, যা এটিকে হাইপারসনিক গতিসম্পন্ন ও অত্যন্ত নির্ভুল করে তোলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি বিদ্যমান আকাশ প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিকে অকার্যকর করে দিতে সক্ষম।
ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদেহ বলেন, “যদি আমাদের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া হয়, আমরা শক্ত হাতে জবাব দেব।” ক্ষেপণাস্ত্রটি মে মাসেই উন্মোচন করা হয় এবং তখনই দাবি করা হয়েছিল যে এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থাড সিস্টেম এবং ইসরায়েলের আয়রন ডোমকে ভেদ করতে সক্ষম। সর্বশেষ হামলায় এই দাবির বাস্তব প্রমাণ মিলেছে।
ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় রেখেও কাসেম বাসির ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে, যা দেশটির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা প্রকাশ করেছে। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন সামরিক উত্তেজনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিশ্ব সামরিক শক্তির তালিকায় ইরান বর্তমানে ১৪তম স্থানে রয়েছে। দেশটির আছে বিশাল সেনাবাহিনী, প্রচুর ট্যাংক, যুদ্ধবিমান এবং শক্তিশালী নৌবহর। এই ঘটনার মাধ্যমে ইরান স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে, তারা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও নিজস্ব প্রযুক্তির ওপর ভর করে প্রতিরক্ষা খাতে অগ্রগতি চালিয়ে যাচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরানের এই কৌশল শুধু সামরিক সক্ষমতা প্রদর্শন নয়, বরং আঞ্চলিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠারও একটি কৌশলী পদক্ষেপ। এখন দেখার বিষয়, পশ্চিমা বিশ্ব এই চ্যালেঞ্জের কী জবাব দেয়।
Leave a Reply