শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৫ অপরাহ্ন
আরিফ বিল্লাহ নাছিম,কলাপাড়া (কুয়াকাটা) প্রতিনিধি:
লুটপাট না করেও লুটপাট ও মারধরের ঘটনা সাজিয়ে আদালতে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে এমন অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভূক্তভোগী দুই পরিবার। শনিবার বেলা ১১টায় পটুয়াখালী জেলার মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়নের তুলাতলী গ্রামের আঃ কুদ্দুস সিকদার গংরা কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, হাসেম সিকদার, আঃ হাই সিকদারসহ ভুক্তভোগী দুই পরিবারের সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আঃ কুদ্দুস সিকদার বলেন, আমার দাদা মোঃ কালু শিকদার ওরফে কালাই শিকদার।
তাঁর তিন ছেলে আব্দুল হাসেম শিকদার, আব্দুল রাজ্জাক শিকদার ও আব্দুল হাই শিকদার। দাদা মোঃ কালু শিকদার জীবিত থাকা অবস্থায় যৌথ সংসারের যৌথ খরচে ৩৪নং জেএল লতাচাপলী মৌজার ০১নং খাস খতিয়ানের ৮৮৭৯, ৮৮৭৮, ৮৬৫৭/১ নং দাসমূহের জমি থেকে মেজো চাচা আব্দুল রাজ্জাক শিকদারের নামে ৩.০০ একর এবং আব্দুল হাসেম শিকদারের নামে ১.৫০ একরসহ মোট ৪.৫০ একর সরকারি খাস জমি বন্দোবস্ত নেয়। যাহা ০৭/০৭/১৯৭১ খ্রিঃ তারিখ ১৭১নং কবুলিয়ত দলিল মূলে ১৩০২নং খতিয়ান সৃজিত হয়। কিন্তু আমার পিতা আব্দুল হাই শিকদারের বয়স অল্প থাকায় তার নামে কোন জমি বন্দোবস্ত আনা সম্ভব হয়নি। উক্ত জমি সকলে মিলেমিশে ভোগদখল করে এবং বাড়ি ঘর নির্মাণ করে বসবাস করতে থাকেন। এমতাবস্থায় দাদা কালু শিকদার পরলোকগমন করার কিছু দিন পরে আমার পিতা আব্দুল হাই শিকদার তার ভাই আব্দুল রাজ্জাক শিকদারের নিকট ১.০০ একর জমির রেজিষ্ট্রি দলিল চাইলে আজ কাল বলে সময় ক্ষেপন করে আসতে থাকেন।
পরবর্তীতে বিগত ১৯৮৮ সালের ১০ ডিসেম্বর লতাচাপলী ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল হাই মিয়া, গণ্যমান্য আবুল হাসেম মোল্লা, ইউপি সদস্য মো.আবুল হোসেন হাওলাদার, ইউপি সদস্য মো. আর্শ্বেদ মাষ্টার ও গণ্যমান্য মো.মকবুল হাওলাদার স্থানীয়দের নিয়ে সালিশ বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আব্দুল রাজ্জাক শিকদার তার দুই ভাই আব্দুল হাসেম শিকদার ও আব্দুল হাই শিকদার প্রত্যেককে ১ করে ২ একর জমি রেজিষ্ট্রি দলিল দিবেন মর্মে একটি রোয়েদাদ সম্পাদন করে দেন। কিন্তু তারপরও আঃ রাজ্জাক শিকদার আজ কাল বলে সময় ক্ষেপন করে আসতে থাকেন। পরবর্তীতে আমার পিতা আব্দুল হাই শিকদার বাদী হয়ে তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক মোল্লার নিকট একটি আবেদন করেন। তিনি উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে পূর্বের সালিশগণের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। তখন আঃ রাজ্জাক শিকদার জমি রেজিষ্ট্রি করে না দিলে আঃ বারেক মোল্লা পুনরায় রোয়েদাদ দেন। এরপর চাচা আঃ রাজ্জাক শিকদার কলাপাড়া আদালতে একটি দেওয়ানী মোর্কদ্দমা দায়ের করলে আদালত মামলাটি খারিজ করে দেয়। পরবর্তীতে তিনি পটুয়াখালী সাব জজ আদালতে একটি আপীল মামলা করলে ওই মামলায়ও আদালতে খারিজ হয়। আবারও তিনি হাইকোর্টে অভিযোগ দায়ের করেন। মামলাটি হাইকোর্টে চলমান আছে।
লিখিত বক্তব্যে কুদ্দুস সিকদার অভিযোগ করেন, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের মামলাটি আদালতে বিচারাধীন থাকার পরও চাচা রাজ্জাক সিকদার গত দুই বছর যাবৎ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে আসছেন। স্থানীয় সালিশ মিমাংসা না মেনে বিভিন্ন ভাবে আমাদের হয়রানী করে আসছে। বর্তমানে আমাদের হয়রানী করার জন্য তার পুত্র বধুকে দিয়ে কলাপাড়া ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মারধর ও বসত ঘর লুটপাটের মামলা দায়ের করেন।
হয়রানী করার উদ্দেশ্যে নিজেদের বসত ঘর নিজেরা কুপিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা করেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাজ্জাক সিকদার বলেন, তিনি কারো বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন না। গভীর রাতে বিরোধীয় জমি দখল করে হালচাষ করে।
এতে বাধা দিলে আমার পুত্র ও পুত্রবধু এবং আমাকে রশি দিয়ে বেধে অমানবিক নির্যাতন করেছেন। বসতঘর কুপিয়ে নগদ ৬৪ হাজার টাকা, স্বর্ণালংকারসহ মালামাল লুটপাট করে নিয়ে গেছে। এরা খুবই প্রভাবশালী বিধায় আমার জমি চাষাবাদ করতে পারছি না।
Leave a Reply