বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৫ পূর্বাহ্ন
বানারীপাড়া প্রতিনিধি ॥ বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলায় বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের ভরসা যেন গোলাম মাহমুদ (মাহবুব মাস্টার)। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রতিষ্ঠার পরে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দেশ পূর্ণগঠনের প্রচেষ্টায় বহু উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়। যার অংশ হিসেবে খাল খনন কর্মসূচি ছিল অন্যতম। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের দেশব্যাপী খাল খনন কর্মসূচি নিজ তত্ত্বাবধানে পরিচালনা কালে তিনি বানারীপাড়ায় পদার্পণ করেন।
১৯৭৯ সালে সরকারি ফজলুল হক কলেজের তরুণ ছাত্রনেতা গোলাম মাহমুদ (মাহবুব) দেশ প্রধানের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়ে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এর হাত ধরে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতিতে যোগ দেন। তখন কলেজ শাখায় জিএস, এজিএস,ভিপি নির্বাচন থাকায় রমরমা রাজনীতিতে ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ইসলামি ছাত্র শিবির, জাতীয় ছাত্র সমাজ, ছাত্র জোট, ডান-বামসহ সকল রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের পদচারণা ছিল।
১৯৮২ সালে বানারীপাড়া সদর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ও উপজেলা ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচনিত হয় এই উদ্যোমী ছাত্রনেতা। ছাত্র রাজনীতি থেকে বেড়ে ওঠে যুবদলের কর্মী থাকা কালে পরিবারের ব্যয় বহুল ভরণপোষণের তাগিদে শিক্ষকতা পেশা বেছে নেয়। সংগ্রামের দীর্ঘদিনে থেমে থাকেনি উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ও অসহায় মানুষের সহায় হয়ে পাশে দাঁড়ানো। যার প্রতিচ্ছবি হিসেবে দেখা যায় উপজেলার উত্তরকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক থাকাকালে অজপাড়া গাঁয়ে সুবিধাগ্রস্থ ছেলেমেয়ের শিক্ষা অঙ্গনে প্রবেশের সুযোগ,বিনামূল্যে টিউশন ও কোচিং করানো, বাল্য বিবাহ রোধ, নারী শিক্ষায় এগিয়ে আসতে জনসচেতনতা সৃষ্টি। এছাড়াও সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক হয়ে নিজ অর্থায়নে প্রথম বানারীপাড়া খেয়াঘাট থেকে বাংলাবাজার পারাপারের জন্য ইঞ্জিন চালিত ট্রলারের ব্যবস্থা করেন।
প্রাণের সংগঠন বিএনপির আদর্শকে বুকে লালন করে যুবক মাহবুব মাস্টার সভা,সমাবেশ ও মিছিলে ছিলেন সরব। ১৯৯৮ সালে বানারীপাড়া-নেছারাবাদ(স্বরূপকাঠি) সংসদীয় আসনের সাংসদ ছিলেন সৈয়দ শহিদুল হক জামাল। এই এমপির উৎসাহে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ফুলের শুভেচ্ছা জানিয়ে বানারীপাড়া পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদের দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হয়। ২০০৭ সালে এক-এগারো সরকারের রোসানলে পড়ে ৩১ দিন কারাবরণ করে জামিনে বের হয়।
মাহবুব মাস্টারের মেধা,প্রজ্ঞা ও সময় নিষ্ঠার দ্বারা দলকে করে তোলে অত্যাধিক শক্তিশালী যার ফলশ্রুতিতে ২০০৮ সালে নেতাকর্মীদের অনুরোধে দেয়া হয় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের গুরু দায়িত্ব। একই বছর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এস. সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু’র প্রধান সমন্বয়কারীর ভূমিকা পালন করে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর থেকে ৬০০০ ভোটের ব্যবধানে বানারীপাড়া উপজেলা বিএনপি এগিয়ে থাকে।
বর্তমানে বিএনপির প্রবীণ নেতারা বলে থাকে মাহবুব মাস্টারের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন সময় ছিল বানারীপাড়া উপজেলা বিএনপি জন্য স্বর্নযুগ। তবে কালক্রমে ২০১৫ সালে তাকেও নানা অভিযোগ ও অভিমান নিয়ে সাধারণ সম্পাদকের পদ ছাড়তে হয়। দীর্ঘ সময় দলের বাহিরে থাকার পরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশক্রমে বরিশাল-২ আসনের সাংসদীয় অভিভাবক এস. সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু তাকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে রাখার জন্য সুপারিশ করেন। দলের পদ বঞ্চিত হয়েও থেমে থাকেনি তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। দলের দুর্দিনের নেতা কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সকল দলীয় কর্মসূচি পালন করেছেন আওয়ামীলীগের বাধা বিপত্তি মামলা হামলা কে উপেক্ষা করে।
বরিশালে ৫ই নভেম্বর এর বিভাগীয় মহাসমাবেশের লিফলেট বিতরণ কালে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয়েও বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে বরিশালে কর্মসূচি পালন করেন। ২০২২ সালে বরিশাল জেলা বিএনপির সদস্য ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি সেলিম ভুঁইয়া গ্রুপের আহ্বায়ক নির্বাচিত করা হয়।
এদিকে মাহবুব মাস্টার জানান, আমি বিএনপির স্বার্থে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছি বিনিময়ে অর্থ সম্পদের পরিবর্তে পেয়েছি অসংখ্য ত্যাগী ও দুর্দিনে নির্যাতিত বিএনপির কর্মী। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান,দেশ নায়ক তারেক রহমান নির্দেশনায় ও বরিশাল-২ আসনের কান্ডারী এস. সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু ভাইয়ের নেতৃত্বে দলের কর্মী হিসেবে কাজ করে যাবো।
এদিকে দীর্ঘদিন উপজেলা বিএনপির বাইরে থাকা এই নেতাকে নিয়ে আগামীর আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে থাকার জল্পনার জাল বুনতে শুরু করেছে সাধারণ নেতাকর্মী। বানারীপাড়ায় বিএনপির নেতাকর্মীদের ধারণা মাহবুব মাস্টার উপজেলা বিএনপির নেতৃত্বে আসলে বিগত দিনের থেকেও অধীক শক্তি নিয়ে অপশক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র বানারীপাড়া উপজেলা।
Leave a Reply