শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ্যত্যাগের পরদিন মঙ্গলবার বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে সারাদেশের সাথে একযোগে কর্মবিরতি ঘোষণা বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। দেশের সর্ববৃহত আইন-শৃংখলা বাহিনীর নিস্ক্রিয়তার সুযোগে অনেক এলাকায়ই ছোট বড় ঘটনা ঘটলেও তা প্রতিরোধে কার্যকরি কোন উদ্যোগ নেই পুলিশের। ফলে চাপা আতংকের রয়েছে নগরবাসী।
এদিকে গত বুধবার নতুন আইজিপি পুলিশ সদস্যদের কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেওয়ার পর বুধবার রাত থেকেই থানাগুলোতে কিছু পুলিশ সদস্য যোগ দিলেও মাঠ পর্যায়ে কোন কর্মকান্ড শুরু করেনি। এছাড়া কোন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও স্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিতে জোড়ালো কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। তবে সড়কে পরিচ্ছন্নতা ফিরিয়ে আনা এবং ট্র্যাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাঠপর্যায়ে কাজ করছে শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয়রা জানান, শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা বিজয়ের আনন্দ নিয়েই মেতে আছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতদিন বিরোধী দলের নাম ভাঙিয়ে টোকাই ও কিশোর গ্যাং সমাজের অনেকের ঘুম হারাম করে দিচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব টোকাই ও কিশোর গ্যাংয়ের বেশীরভাগই এতদিন সরকারি দলের সভা সমাবেশ থেকে শুরু করে মিছিলে নানা রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক কর্মকান্ডে দলভারী করেছে। এদিকে বুধবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নেতাকর্মীদেরকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানোর পর দলীয় পদধারী বেশিরভাগ নেতারা পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য কর্মীদের নির্দেশ দিচ্ছেন। এছাড়া বৃহস্পতিবার দলীয় নেতাকর্মীদেরকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বরাত দিয়ে দেশের সংকটময় পরিস্থিতিতে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে নগরীতে মাইকিং করতে দেখা গেছে।
এদিকে বরিশাল নগরীতে কোন ট্রাফিক পুলিশ না থাকার মধ্যেই গত দুদিন ধরে নগর জুড়ে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রন সহ পরিবহন ব্যবস্থায়‘ কার্যকর শৃংখলা’ ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এসব শিক্ষার্থীর সাথে বিএনসিসি, রোভার স্কাউটস সদস্য ছাড়াও ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীরাও অংশ নিচ্ছেন। ফলে বরিশালে অনেকটাই স্বাভাবিক রয়েছে সাধারণ মানুষের চলাচল। দোকানপাটসহ, বিপনি-বিতান ও অফিস আদালত খোলা থাকায় সেসব জায়গাতে লোকসমাগম বেড়েছে। ফলে বিগত কয়েকদিনের তুলনায় সড়কগুলোতে রিকশা, ব্যাটারি রিকশা, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন ধরনের গণপরিবহন এবং মোটরসাইকেলসহ ব্যক্তিগত গাড়ির চলাচল বেড়েছে। নগরবাসীর মতে, স্কুল কলেজের ছেলেমেয়ারা রোদে পুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে যে কঠিন দায়িত্ব পালন করছে, তা ভবিষ্যতের জন্য উদহারন হয়ে থাকবে। আর সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, এ দেশটা যেমন আপনার তেমনি আমারও। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা দেশটাকে সুন্দর-স্বাভাবিক রাখতে যেমন চাই, তেমনি সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের যানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সবাইকে নিয়ে বসবাসও করতে চাই। সুবিধাবাদীর সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালালেও আমরা সাধারণ মানুষের পাশে ছিলাম থাকবো। আর সাধারণ মানুষও আমাদের পাশে রয়েছে।
অপরদিকে বৃহস্পতিবারও বরিশাল মহানগরী সহ রেঞ্জের তেমন কোন থানায় পুলিশের দৃশ্যমান কোন কার্যক্রম দেখা যায়নি। তবে মহানগর পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পুলিশ সক্রিয় আছে, তারা কাজে ফিরছে। মহনগরীর সবগুলো থানাতেই পুলিশ রয়েছে এবং যথাযথ দায়িত্ব পালন করছে বলেও দাবী তাদের।
এসব বিষয় নিয়ে বৃহস্পতিবার বরিশাল মহানগর পুলিশ কমিশনার ও বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি’র সাথে দাপ্তরিক সেল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply