শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২১ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। বুধবার সকাল ১১টার দিকে কলেজের শহিদ মিনার এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন তারা। মিছিলটি নবগ্রাম রোড হয়ে চৌমহনী মোড় পেরিয়ে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে অবস্থান নেয় এবং ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে।
শিক্ষার্থীরা বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত মহাসড়কে অবস্থান নেয়। এর ফলে নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডে যান চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়। যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে ওঠে। বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন এবং তাদের দাবিসমূহ বাস্তবায়নের জন্য সরকারের দৃৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাদের যৌক্তিক ছয় দফা দাবি উত্থাপন করা হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। বাধ্য হয়েই তারা রাজপথে নেমেছেন এবং দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
তাদের ছয় দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে: কারিগরি ও উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয় নামে একটি স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির বিরুদ্ধে হাইকোর্টের রায় বাতিল করা, যেকোনো বয়সে ভর্তি বাতিল, চার বছর মেয়াদি কারিকুলাম চালু, কারিগরি শিক্ষায় ইংরেজি মাধ্যম চালু করা এবং বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন।
বিক্ষোভের একপর্যায়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন। পরে সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় শিক্ষার্থীরা বিকেল ৩টার পর মহাসড়ক থেকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। তবে যানজট এতটাই দীর্ঘ ছিল যে, অবরোধ প্রত্যাহারের পরেও প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। ফলে যাত্রীরা দীর্ঘ সময় ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাতে বাধ্য হন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এবং প্রয়োজনে আবারো কর্মসূচি দিতে পারেন। তারা সরকারের কাছে দ্রুত দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। শিক্ষার্থীরা আরও জানান, সরকারের আন্তরিক সহযোগিতা না পেলে তারা ধারাবাহিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে। কারিগরি শিক্ষার উন্নয়ন ছাড়া দেশের শিল্প খাতে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি সম্ভব নয় বলেও জানান তারা।
এদিকে হঠাৎ মহাসড়ক অবরোধের কারণে দূরপাল্লার বাস ছাড়াও শহরের ভেতরের যান চলাচল ব্যাহত হয়। অনেক যাত্রী, বিশেষ করে নারী ও বৃদ্ধরা দীর্ঘ সময় রোদে দাঁড়িয়ে থাকেন। অনেকে বিকল্প পথে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন।
Leave a Reply