রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৬ পূর্বাহ্ন
মাসুদ রানা, স্টাফ রিপোর্টার: বিদ্যালয় ভবন অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, এ জন্য খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান। কোন রকমের মেঘ দেখলেই ছুটি দিতে হচ্ছে স্কুল। এভাবেই চলছে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার ৫৬নং বুইচাকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। ছাদ ও দেয়ালের একাধিক স্থানে ফাটল ও ধ্বসে পড়ায় দুই মাস আগে ভবনটিতে ক্লাস নেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এরপর থেকে বিদ্যালয়ের সামনে খোলা আকাশের নিচে ১২০জন শিক্ষার্থীকে নিয়মিত পাঠদান দেয়া হচ্ছে। তবে শিক্ষা অফিসার বলছে, খোলা আকাশের নিচে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যাপারে তিনি অবগত নয়।
বিষয়টি নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছে ক্ষোভ। অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন এলাকায়ও আসতে দিতে চাইছেন না। এতে দিনে দিনে স্কুলটিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
পুরো বিদ্যালয় ভবনের ভেতর ও বাইরের বিভিন্ন অংশের দেয়ল খসে পড়ছে। ফাটল ধরেছে ভবনের বিভিন্ন স্থানে। তাছাড়া শ্রেণি কক্ষের ভেতরের মূল পিলারেও ধ্বসে রড দেখা যাচ্ছে। ফলে ভবনটি যেকোন সময় ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঝুঁকি মধ্যে সময় পার করছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, উপজেলার ৫৬নং বুইচাকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৪২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৫-৯৬ সালে নির্মিত হয় স্কুল ভবন। কিন্তু এরপর ভবনটি আর কোনো সংস্কার হয়নি। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে বিদ্যলয়ের ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে গেছে।
বর্তমানে স্কুলটিতে ১২০জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। তাদের শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করানো হচ্ছে। শিক্ষক রয়েছেন ৫ জন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি, বিদ্যালয়ে নেই কোন বিশুদ্ধ পানি ও বিদ্যুৎতের ব্যবস্থা। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানিসহ নতুন একটি ভবন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা হাসিনা খানম জানান, স্কুল ভবনটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় যেকোন সময়ে ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আবার যেন বরগুনার মত দুর্ঘটনা না ঘটে তাই শিক্ষা অফিসারদের সাথে আলোচনা করে শিশু শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কারণে বাইরে খোলা মাঠে পাঠদান করছি এবং এই বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা প্রশাসনকে একাধিকবার অবহিত করা হলেও এখনো কোন ব্যবস্থা হয়নি।
এদিকে নাজিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শিকদার আতিকুর রহমান জুয়েল বলছেন, খোলা আকাশের নিচে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যাপারে তিনি অবগত নন তবে, বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা তৈরি করার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি এসেছে। সে তালিকা ওই বিদ্যালয়টির নাম রয়েছে। খুব দ্রুত নতুন ভবন করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
বিদ্যালয়টির সমস্যা সমাধান করে, ছাত্রছাত্রীদের জন্য নিরাপদ পানি ও বিদ্যুৎতের ব্যবস্থা করবে সরকার এমনটাই প্রত্যাশা শিক্ষার্থীরা।
Leave a Reply