রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দেশের সব গুম সেল ও আয়না ঘর জাতির সামনে উন্মোচনসহ ছয় দফা দাবিতে বরিশালে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বরিশাল নগরের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে ভয়েস ইন ফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ার্ড পারসন (ভোয়েড) নামের একটি সংগঠনের উদ্যোগে এ কর্মসূচি হয়।
মানববন্ধনে গুমের শিকার ব্যক্তি ও মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়া ভুক্তভোগীরা বক্তব্য দেন। তারা গুম ও রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের অবসান, গুমের ঘটনার বিচার, ভুক্তভোগীদের মুক্তি ও ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন। বক্তারা অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকারের আমলে রাজনৈতিক মতভেদ ও অন্যায়ভাবে দমননীতির অংশ হিসেবে অসংখ্য মানুষ গুম ও হয়রানির শিকার হয়েছেন।
২০১৮ সালে ঢাকার নতুন বাজার থেকে গুম হওয়া রেজাউল করিম মানববন্ধনে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তিনি অভিযোগ করেন, তার এক বন্ধু ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়ার পর তাকেও গুম করা হয়। ১৩ দিন নিখোঁজ থাকার পর তাকে ‘জঙ্গি’ সাজিয়ে গ্রেফতার দেখানো হয়। বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত রয়েছেন। তিনি বলেন, “দেশে যেন আর কোনো স্বৈরাচার সরকার গুম ও আয়না ঘরের নামে অন্যায় আচরণ করতে না পারে, সে বিষয়ে বর্তমান সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
গুমের শিকার কাইয়ুম হাওলাদারও তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একটি মামলায় সাক্ষী না হওয়ায় তাকে চার মাস গুম করে রাখা হয়েছিল। বরিশাল বিভাগে এমন আরও অন্তত ৫০ জন রয়েছেন, যারা গুম ও মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ভোয়েড-এর সমন্বয়ক ইমরান হোসেন, আবদুল কাইয়ুম ও আলামিন। তারা বলেন, “গুম ও রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। নির্যাতনের শিকার পরিবারগুলো ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা চাই, সরকার দ্রুত এই অন্যায় বন্ধ করুক।”
তারা ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন, যার মধ্যে রয়েছে— দেশে বিদ্যমান গুম সেল ও আয়না ঘর জাতির সামনে উন্মোচন এবং সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা; গুম, খুন ও গণহত্যার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী নেতাকর্মী ও সরকারি কর্মকর্তাদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের ব্যবস্থা করা; ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া; গুম ও রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ; এবং সন্ত্রাস বিরোধী কালো আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা।
Leave a Reply