রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ১১:৪৩ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা নতুন মাত্রায় প্রবেশ করেছে। রবিবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি হামলায় ইরানের ভেতরে অবস্থিত তিনটি পরমাণু স্থাপনায় বিস্ফোরণ ঘটেছে। এ হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ও সদ্য পুনরায় নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হামলার পর বিশ্বজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে উদ্বেগ ও প্রতিক্রিয়ার ঝড়।
যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক অঙ্গনে ‘অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও উত্তেজনাকর’ ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে ইরানের অভ্যন্তরীণ পরমাণু স্থাপনায় সরাসরি আঘাত হানার ঘটনা পূর্বে নজিরবিহীন।
ইসরায়েলের এক জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এ হামলার পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ পরিকল্পনা ও সমন্বয়ের একটি প্রক্রিয়া কাজ করেছে। তিনি দাবি করেন, হামলার পূর্বপ্রস্তুতি থেকে শুরু করে আক্রমণকালীন সময় পর্যন্ত উভয় পক্ষ তথ্য আদান-প্রদান করেছে এবং পরস্পরের সঙ্গে সমন্বয় রেখেছে।
এই ঘটনার পরপরই ইসরায়েলের হোম ফ্রন্ট কমান্ড দেশজুড়ে জারি করেছে সর্বোচ্চ সতর্কতা। সব স্কুল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং নাগরিকদের জন্য কঠোর চলাচল নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, আতঙ্কিত ইসরায়েলি নাগরিকরা খাবার, পানি ও ওষুধ কিনে মজুত করছে এবং অনেকেই জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাচ্ছে। জনমনে আতঙ্ক চরমে পৌঁছেছে।
এদিকে ইরান সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, তেহরানের পক্ষ থেকে কঠিন প্রতিশোধ আসতে পারে। এর ফলে অঞ্চলজুড়ে আরও ভয়াবহ সংঘাতের সূচনা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া এবং চীনসহ বিশ্বের প্রভাবশালী শক্তিগুলো এ ঘটনার পর পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। বেশ কয়েকটি রাষ্ট্র শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানালেও বাস্তবতা বলছে, সংঘর্ষ আরও তীব্র হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের অভ্যন্তরে এমন হামলা শুধু পরমাণু কর্মসূচির ওপর নয়, বরং দেশটির সার্বভৌমত্বের ওপর সরাসরি আঘাত। এটি মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা কাঠামোকে আরও দুর্বল ও বিপজ্জনক করে তুলেছে।
Leave a Reply