মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মেসার্স অমৃত কনজুমার ফুড প্রোডাক্টস লি.। গরীব অসহায় দু:স্থ মানুষদের নানা সহযোগিতার পাশাপাশি হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে এই কোম্পানিকে ঘিরে। বিভিন্ন কোম্পানিতে কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন বোনাস সহ নানা সমস্যা থাকলেও এ প্রতিষ্ঠানে নেই এ ধরনের জটিলতা। যে কারণে দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দাদের কাছে জনপ্রিয় কর্মসংস্থানের বিশ্বস্ততা অর্জন করেছেন অমৃত কনজুমার ফুড প্রোডাক্টস লি.।
জানা গেছে, সেমাই, লাচ্ছা, নুডলস, পানি, ম্যাকারনি সহ প্রায় ৫০টির অধিক পণ্য তৈরি করে থাকে। একটা সময় প্রতিষ্ঠানটি নুডুলস, চকলেট, সেমাই, সরিষার তেলসহ বিভিন্ন পণ্য তৈরি করলেও সর্বশেষ প্যাকেটজাত পানির প্রস্তুতকারক যোগমায়া ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লি. নামক প্রতিষ্ঠানটি পানি বাজারজাত করে বরিশাল সহ দেশের সর্বত্র বাজারে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। যা বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের গণ্ডি পেড়িয়ে দেশের বিভিন্ন মার্কেটে পৌঁছে যাচ্ছে। প্রায় ১০ থেকে ১২ টি ধাপ পেরিয়ে তৈরি করা হয় এ বোতল জাত পানিটি। অটোমেটিক মেশিনের মাধ্যমে পানি রিফাইন করে সম্পূর্ণ হাতের স্পর্শ ছাড়াই এ পানিটি বোতলজাত করা হয়। যে বোতলে পানি ধারণ করা হয় সেটিও তাদের নিজস্ব কারখানায় তৈরি হয়। শুধু বোতলটি তৈরি করতে প্রয়োজন হয় কাঁচামালের। বরিশালের ভূগর্ভস্থ থেকে তোলা পানি সুমিষ্ট হওয়ায় এতে অধিক পরিমাণে ব্যবহার করা হয় না কোন ধরনের কেমিক্যাল। যার ফলে পানিটি খেতে অনেকটা সুস্বাদু লাগে।
অমৃত লাল দে কনজ্যুমার ফুড প্রোডাক্ট ফ্যাক্টরির ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজার আবির দে জয় বলেন, “বর্তমানে আমাদের ফ্যাক্টরির আশেপাশে জনবসতির ঘনত্ব অনেক বেড়ে গেছে। প্রতিবছর এই সময়টাতে এ অঞ্চলের টিউবওয়েলগুলোতে পানি তুলনামূলকভাবে কম উঠে। অন্যদিকে, আশপাশের অধিকাংশ পুকুর, ডোবা ও খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবও এর অন্যতম কারণ।”
তিনি আরও বলেন, “এলাকার অনেকেই অনেক আগেই গভীর নলকূপ (ডিপ টিউবওয়েল) বসিয়েছেন, যার গভীরতা ৬০০ থেকে ৮০০ ফুট পর্যন্ত। তাই এসব নলকূপে এখন পানি কম ওঠা স্বাভাবিক। আমরা ফ্যাক্টরিতে একটি ২ এইচপি পাম্প ও ২ ইঞ্চি পাইপ ব্যবহার করে ১০৪০ ফুট গভীরতা থেকে পানি উত্তোলন করি। প্রতিদিন ১১ থেকে ১৪ হাজার লিটার পানি উত্তোলন করা হয়, যা একটি সাধারণ পরিবারের ব্যবহারের সমপরিমাণ।”
জয় দে দাবি করেন, “আমাদের পানি ব্যবহারের পরিমাণ এলাকায় কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না। বরং আমরা যতটুকু পানি উত্তোলন করি, তা খুবই সীমিত এবং নিয়ন্ত্রিত।
যোগমায়া ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লি. এর প্রোডাকশন ম্যানেজার বিজয় কৃষ্ণ ঘোষ ও জগন্নাথ বাইন জানান, আমাদের তৈরিকৃত পণ্যের গুণগত মান ও সুস্বাদু করার জন্য আমরা সব সময় প্রস্তুত থাকি। শুধু তাই নয়- পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে যাতে আমাদের শ্রমিকরা খাবার জাত পণ্যগুলো তৈরি করতে পারে এদিকে আমরা সর্বদা লক্ষ্য রাখি। যাতে শ্রমিকরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে কাজ করতে পারে এর জন্য প্রতিষ্ঠানের ভিতরে আলাদাভাবে তাদের ড্রেসের ব্যবস্থা করা হয়। যাতে করে বাহির থেকে এসে ধুলাবালি এবং অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্নভাবে কোন কর্মী আমাদের পণ্য তৈরি না করে এর জন্য সর্বদা মনিটরিং করা হয়। আমাদের তৈরি করা পণ্য আমরা নিজেরা যেভাবে খাই ঠিক তেমনি বাহিরে একজন ভোক্তাও খায়। তাই সবকিছু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং খাবারের গুণ ও মান ধরে রাখার চেষ্টা আমরা সর্বদা করে থাকি।
তাছাড়া বরিশালের বিভিন্ন কোম্পানিতে নানা সময় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা গেলেও এই কোম্পানির মধ্যে শ্রমিকদের মধ্যে কোনো অসেন্তাষই নেই । বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দেখবেন বেতন ভাতা ছুটিসহ নানা ধরনের সমস্যা রয়েছে। কিন্তু অমৃত কোম্পানিতে এ ধরনের কোনো সমস্যা নেই।
প্রতিষ্ঠানটির এইচ আর এডমিন রাকেশ জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠানটি বরিশাল জেলার বাহিরে আমরা করতে পারতাম। কিন্তু যেহেতু এখানকার মালিকের বাড়ি বরিশালে, তাই বরিশালের মানুষের কর্মসংস্থানের কথা চিন্তা করে ;এখানে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হয়। আমাদের প্রতিষ্ঠানে নারী-পুরুষ মিলে কয়েক হাজার শ্রমিক রয়েছে। তাদের বেতন ভাতা সহ সকল সুযোগ সুবিধা আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে দেয়া হচ্ছে। এমনকি অসহায় দুস্থ পরিবারের পাশেও আমাদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় সহযোগিতা করা হয়। শুধু তাই নয় আপনারা জানেন আমাদের প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা তিনি একজন দানবীর মানুষ তাই অসহায় মানুষের পাশে তিনি সর্বদা থাকার জন্য এ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন যাতে করে বরিশালের মানুষ কর্ম করে খেতে পারে। আর তাইতো তিনি তার প্রতিষ্ঠানের একটা স্লোগান দিয়েছেন “কর্মই হোক ধর্ম “। আমাদের তৈরিকৃত অন্য বরিশাল বিভাগের প্রত্যেকটি জেলা উপজেলায় পৌঁছে গেছে শুধু তাই নয় বরিশালের গণ্ডি পেরিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।
যোগমায়া ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লি. এর কর্মরত একাধিক শ্রমিক জানান, পানি বোতলজাত তৈরি থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছা পর্যন্ত প্রায় ১০ থেকে ১২ টি ধাপ অতিক্রম করতে হয়। পানিটির গুণগত মান ও সুস্বাদু পরীক্ষা করার জন্য কয়েক দফায় ল্যাব টেস্ট করানো হয়। শুধু তাই নয় আমাদের তৈরিকৃত এ বোতল জাত পানিটির বোতলটি অত্যন্ত সুন্দর হওয়ায় ক্রেতাদের মন কেড়েছে। শ্রমিকরা জানান, আমাদের চিকিৎসা সহ সকল দিকই কোম্পানী থেকে দেখভাল করা হয়, তাছাড়া যাতায়াত ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা কোম্পানী দেখে থাকে।
Leave a Reply