শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ১২:১৬ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ সারা দেশে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও কোরবানির ত্যাগের মহিমায় পালিত হয়েছে মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। শনিবার ভোর থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলো ঈদের আনন্দে ভরে ওঠে। ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য মানুষ সমবেত হন স্থানীয় মসজিদ ও ঈদগাহে। জাতীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয় দেশের প্রধান ঈদ জামাত, যেখানে অংশ নেন রাষ্ট্রের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা। নামাজ শেষে পরস্পরের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন মুসল্লিরা এবং কোরবানির উদ্দেশ্যে পশু জবাইয়ের প্রস্তুতি শুরু হয়।
ঘরের আঙিনা থেকে শুরু করে খোলা মাঠ ও মহল্লার নির্ধারিত স্থানে কোরবানির পশু জবাই করা হয় এবং তা দ্রুততার সঙ্গে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। অধিকাংশ পরিবার কোরবানির মাংস আত্মীয়, প্রতিবেশী ও দরিদ্রদের মধ্যে ভাগ করে দেন। সমাজসেবামূলক অনেক সংগঠন দরিদ্র জনগণের কাছে কোরবানির মাংস পৌঁছে দিতে সক্রিয় ভূমিকা নেয়।
এবারের ঈদুল আজহায় কোরবানির ব্যবস্থাপনায় দেখা গেছে আশাজাগানিয়া পরিবর্তন। পূর্ব প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি করে এবং জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে। ফলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আসে নজিরবিহীন গতি ও শৃঙ্খলা। সিটি কর্পোরেশনের সূত্র জানায়, ঈদের দিন দুপুরের মধ্যেই অধিকাংশ ওয়ার্ডে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শেষ হয় এবং রাতের মধ্যেই পুরো শহর পরিচ্ছন্ন রাখার পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়ন হয়।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কোরবানির পরপরই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু হয় এবং বাসিন্দারাও এতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। নির্ধারিত স্থানে কোরবানি দেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে, যা শহরের পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এই উদ্যোগের প্রশংসা করছেন নাগরিকরা।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. ইউনূস ঈদের শুভেচ্ছা বার্তায় শান্তি, সহানুভূতি ও ত্যাগের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। ঈদুল আজহা শুধু ধর্মীয় অনুশীলন নয়, বরং এটি সহানুভূতি, সামাজিক সমতা এবং পরিচ্ছন্নতা রক্ষার একটি মানবিক উৎসবে পরিণত হয়েছে—এবারের আয়োজন তারই উদাহরণ।
Leave a Reply