সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২২ অপরাহ্ন
এম.কে. রানা ।। বরিশালে প্রচন্ড তাবদাহ ও লোডশেডিংয়ের ভেল্কিবাজীতে নাকাল হয়ে পড়েছে জনজীবন। তীব্র ভ্যাপসা গরমে মানুষ অস্থিরতার মধ্যে কষ্টে দিনাতিপাত করছে। একদিকে গরম অপরদিকে লোডশেডিং কোনটা সহ্য করবে মানুষ। এমন ভয়াবহ গরমে মানুষ কুলকিনারা হারাচ্ছে।
অপরদিকে দুপুর হওয়ার আগেই নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, আজ মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুর ১০টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
নগরীর বিভিন্ন বর্তমানে প্রচন্ড তাপদাহ চলতে থাকায় এলাকায় পানির লেয়ার নিচে নেমে যাওয়ায় অনেক টিউওয়েলে অল্প অল্প করে পানি উঠছে। কোথাও কোথাও টিউবওয়েল একেবারেই অকেজো হয়ে পড়েছে। তবে গত কয়েকদিন ধরেই নগরবাসীর পানির চাহিদা মেটাতে বিসিসি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর উদ্যোগে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিশুদ্ধ খাবার পানি বিতরণ করা হচ্ছে।
এদিকে রোদ্রের প্রচ- তাপের কারণে মনে হয় চৈত্রের খরতাপে অস্বস্তিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। বাড়ছে ডায়রিয়া ও ডিসেনট্রিজনিত রোগ। সাধারণ মানুষের মধ্যে হাহাকার পড়ে গেছে। বরিশাল জেলা শহরে প্রায় ৭দিন ধরে অব্যাহত দাবদাহে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রচন্ড-খরতাপে হাঁপিয়ে উঠছে মানুষ ও পশুপাখিসহ সবপ্রাণী।
ছড়িয়ে পড়ছে ডায়রিয়া, জন্ডিস ও ভাইরাসজনিত জ্বর। প্রচন্ড-গরম এবং ঘন ঘন বৈদ্যুতিক লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। রাতে গরমের কারণে মানুষ ঘুমাতে পারছে না। ফলে দেখা দিচ্ছে সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগ শোক। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে রোজাদারদের।
এছাড়া বয়স্ক এবং শিশুদেরও নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। অনেক নারী ও পুরুষের শরীরে দেখা দিয়েছে ফোসকা, ঘামাচি। অস্বাভাবিক হারে ডায়রিয়া রোগীর ভিড় বাড়ছে হাসপাতালগুলোতে। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। দুপুরের পর রাস্তাঘাট জনশুন্য হয়ে পড়ে। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। অসহায় হয়ে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। গরমের কারণে দুপুর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশিরভাগ দোকানি দোকানপাট বন্ধ করছেন।
নগরীর কাউনিয়া এলাকার নির্মাণ শ্রমিক নেতা আবুল সর্দার জানান, দুপুরের কাঠফাটা রোদ আর প্রচন্ড-গরমে রাস্তায় বের হতে পারছিনা। আবার নিজ ও কন্ট্রাক্টের কাজকর্ম না করলে চলাফেরা ও জীবনধারন করা অত্যান্ত কষ্ট হয়ে পড়বে। তাই
জানা গেছে বরিশাল নগরীর চেয়ে মফস্বল এলাকায় প্রচুর লোডশেডিং হচ্ছে। মানুষ গরমে অসহ্য হয়ে পল¬ী বিদ্যুতের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিভিন্ন বিদ্রুপ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে প্রতিবাদ করছেন।
বরিশাল সদর হাসপাতালসহ উপজেলার প্রত্যেকটি হাসাপাতালে প্রচন্ড-গরমে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর প্রচুর ভিড় রয়েছে। প্রতিদিন আউটডোর ও ইনডোরে অর্ধশত রোগী আসছে চিকিৎসা নিতে।
এদের বেশিরভাগই হচ্ছে বয়স্ক ও শিশু। বর্তমানে রোগীদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে ডাক্তাররা। দিনে রাতে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের ব্যাপারে জেলার কারও মাথা ভ্যাথা নাই বললেই চলে। এতা প্রচন্ড-তাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কোথাও কোথাও হাল্কা বৃষ্টি হলেও চৈত্রের মাঝামাঝি থেকে বৈশাখের এ পর্যন্ত বৃষ্টি একেবারে নেই। বৃষ্টি না থাকায় প্রখর তাপ এবং ভ্যাপসা গরমে সকাল থেকে মানুষজন কাজ ছাড়া বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না।
দুপুরে শহরের রাস্তাঘাট একেবারে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। মানুষ তৃষ্ণা নিবারণে ডাব, শরবত, খাবার স্যালাইন, তরমুজ, শসা ও কলা কেনার দিকে ঝুঁকে পড়েছে।
এব্যাপারে বরিশাল সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: দেলোয়ার হোসেন জানান, অসহ্য গরম শুরুর পর থেকে হাসপাতালে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগি বাড়ছে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি চিকিৎসা সেবা দিতে।
Leave a Reply