রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১৩ অপরাহ্ন
আকতার ফারুক শাহিন॥ একদিকে পদ্মা পাড়ি দিয়ে দক্ষিণমুখী মানুষের স্রোত আর অন্যদিকে ঈদ মার্কেটে অগণিত নারী-পুরুষের ভিড়। এই দুইয়ে মিলে ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দক্ষিণের ৬ জেলার করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি ঠেকানোর সব চেষ্টা।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ খোদ প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে বরিশালসহ দক্ষিণের ৩ জেলায় ফের দোকান মার্কেট শপিংমল বন্ধ ঘোষণা করা হলেও এরই মধ্যে ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে।
মাত্র ৮ দিনে নতুন করে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭৮ জন। বর্তমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে পুরো দক্ষিণাঞ্চলে করোনা পরিস্থিতি সামাল দেয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার।
বরিশালে প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হয় গত ১২ এপ্রিল। ওইদিন থেকে ১০ মে পর্যন্ত ২৮ দিনে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাড়ায় ৫০। ১০ মে থেকে সীমিত পরিসরে দোকান পাট খোলা রাখার অনুমতি দেয় সরকার। এরপর মাত্র ৮ দিনে এই সংখ্যা বেড়ে দাড়ায় ৭৯।
বরিশালের সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন বলেন, যেভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে সেটা অবশ্যই ভীতিকর। এখনই পরিস্থিতি সামাল দেয়া না গেলে সবকিছু আয়ত্তের বাইরে চলে যাবে।
বরিশালের মতোই করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি বিভাগের অন্য ৫ জেলায়। মাত্র ৮ দিনে বিভাগের ৬ জেলায় করোনা সনাক্তের সংখ্যা ১৫৬ জন থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩৪ জনে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর বরিশালের বিভাগীয় পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার বলেন, ১০ তারিখ থেকে খুলেছে দোকান মার্কেট। এসব জায়গায় এখন অগণিত মানুষের ভিড়। সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। এই জায়গা থেকেই বেশি ছড়াচ্ছে করোনা।
তিনি বলেন, আরেকটি সমস্যা হচ্ছে ঢাকাসহ বাইরের জেলাগুলো থেকে লোকজন আসা। লঞ্চ বাস বন্ধ থাকলেও মানুষের এই আসা কিন্তু পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। সচেতনতার অভাবে পণ্যবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনে বোঝাই হয়ে আসছে তারা। এতে করে নিজেদের পাশাপাশি আশেপাশের মানুষের সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ছে বহুগুণে। এসব কারণেই বরিশাল বিভাগে বেড়ে গেছে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা।
সোমবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জারি করা এক গনবিজ্ঞপ্তিতে ওষুধ এবং নিত্যপণ্যের দোকান ছাড়া সব ধরনের দোকান পাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিকেল ৪ টার পর ঘর থেকে বেরুনোসহ যানবাহন চলাচলের ওপরও জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
বরিশালের জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়ার রহমান বলেন, দফায় দফায় অভিযান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ক্রেতা বিক্রেতাকে জরিমানা করেও সচেতনতা লক্ষ্য করা না যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে সবরকম দোকান পাট আবার বন্ধ থাকবে।
বরিশালের পাশাপাশি রোববার থেকে পটুয়াখালী এবং গতকাল সোমবার থেকে ভোলা জেলাতেও দোকান পাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সেখানকার জেলা প্রশাসন। তবে বরগুনা, ঝালকাঠি এবং পিরোজপুর থেকে এ ধরনের কোনো উদ্যোগের খবর এখনো মেলেনি।
Leave a Reply