শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:বরিশাল নগরীর ৯১ নং কিশোর মজলিস সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক জায়েদা ইয়াসমিন শুক্রবার(১৫.০৩.১৯)সকালে নিজ ফেইজবুক ওয়েল পেপারে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি আবেদন পত্র লেখেন,সেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোর নানা সমস্যাও দাবীসহ দেশের উন্নয়ন তুলে ধরেন ওই আবেদন পত্রে লেখেন,যা কয়েক মিনিটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইজবুকে ভাইরল হয়ে যায়। এক হাজারের উপরে শেয়ার ও লাইক কমেন্ট পরে থাকে।
জায়েদা ইয়াসমিন তার ফেইজবুকে যা লিখেছেন তা তুলে ধরা হলো ।
বরাবর,
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপা
আসসালামু আলাইকুম।প্রথমে আমার সহস্র কদমবুচি নিবেন।
আমি জায়েদা ইয়াসমিন।আমি সহকারী শিক্ষক এবং ইডেন কলেজের সাবেক ছাত্রলীগের কর্মী।একসময়ে( ২০০১-২০১০) ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের পতাকা কাঁধে নিয়ে হেঁটেছি।কোনদিন কোন চাওয়া ছিল না।
১/১১দেখেছি।দেখেছি আপনাকে বন্দী হতে।সৌভাগ্য হয়েছিল আপনার সান্নিধ্যে যাওয়ার।সেই অধিকারবোধ থেকে আপনার কাছে আজ আমি এই মিডিয়াতে দু কলম লিখতে বসেছি।
মমতাময়ী নেত্রী,আপনার নজরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো আছে সেটা আমি জানি।কেননা আমার চাকুরী হবার পর আপনার কাছে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল।আজও আমার কানে ভাসে বলেছিলেন গ্রাম শহর হবে, আর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন হবে। দেশরত্ন প্রিয় নেত্রী,উন্নয়ন নিয়ে কিছু বলা নেই। কেননা ৪০,০০০/-প্রতি বছর বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য।প্রাক-প্রাথমিকের জন্য ৫০০০/-বরাদ্ধ।অন্যান্য বরাদ্ধ রয়েছে।
মমতাময়ী মা,কারো পেটে ক্ষুধা থাকলে সে ছুটাছুটি করবে এটাই স্বাভাবিক।আমি মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যেটুকু বুঝেছি সেটুকুই তুলে ধরব।ভুল ত্রুটি মার্জনার চোখে দেখার অনুরোধ রইল।
১/আমাদের সঃপ্রাঃবিদ্যালয়ের ৬০%নারী কোটা।সেখানে সকাল ৯-থেকে ৪.৩০পর্যন্ত বিদ্যালয় থাকতে হয়।কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় যে,আমাদের অনেক শিক্ষক রয়েছে তাদের সন্তান প্রসব হবার পর বাসায় রেখে আসার মত কোন লোক থাকে না সেক্ষেত্রে বিদ্যালয়ে সন্তান নিলেও অনেক বাধাবিঘ্ন সম্মুখীন হতে হয়।এক্ষেত্রে আপনার কাছে অনুরোধ নার্স ও ডাক্তারের জন্য বেবী কেয়ারের যে ব্যবস্হা করা হয়েছে আমাদের জন্য করলে কৃতজ্ঞতা থাকিব মমতাময়ী মা
২/আমাদের টিফিন ভাতা ২০০/বর্তমান বাজারের এককাপ চা ৫/-চিকিৎসাভাতা ১৫০০/সেক্ষেত্রে একজন ডাক্তারের ভিজিট৬০০-৮০০/।দেশরত্ন প্রিয় নেত্রী কোন শিক্ষকের ক্যান্সার হলে সে জমানো জিপি ফান্ডের টাকা,কোন মাসিক সমন্বয়ে প্রতিজন শিক্ষকের কাছ থেকে চাঁদা তুলে চিকিৎসা করানো হয়।হয়ত আপনার দ্বারপ্রান্তে গিয়ে পৌঁছায় না।আমি দেখেছি ধুকে ধুকে একজন ক্যান্সারের শিক্ষক শিক্ষকতা চালিয়ে মারা যান।
৩/আমরা সহঃশিঃরা ভাল কাজ করলে তাহার মূল্যায়নটা কম হয়।অথচ উপবৃত্তি থেকে শুরু করে ওয়াসব্লক পর্যন্ত আমাদের নজরে রাখতে হয়।
৪/আমরা আনন্দ পরিবেশ পাঠদান করাতে গিয়ে অনেকভাবে বাধাগ্রস্হ হই।৪০ঃ১ বললে সেখানে আমরা ৬০/৮০:১পাঠদান করাই।উল্লেখ্য যে,অনেক বিদ্যালয় ক্লাস রুম সংকট নতুবা শিক্ষক সংকট।প্রানপ্রিয় আপা,আমাদেরকে শ্রেনি কার্যক্রমের চেয়ে আনুসঙ্গিক কাজ অনেক বেশি।
৫/আমরা সহঃশিঃ যে গ্রেডটাতে আছি সেটা আমাদের জন্য অপমানজনক।আমাদের ১১তম গ্রেড দিয়ে এই অপমানজনক হাত থেকে আপনি বাঁচাতে পারেন।মমতাময়ী মা আপনি বিশ্বের দরবারে একজন সফল তাই আমি যতটুকু জানি ও চিনি আপনার নজরে পড়লে আমরা ১১তম গ্রেড পাব ইনশাল্লাহ।
৬/আমরা শিক্ষকরা খাওয়া+প্রার্থনার জন্য ৩০মিনিট সময় পাই। হয়ত অনেক খেতে পারে বা নামাজ পড়তে পারে।পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে জোহরের নামাজের রাকাত বেশি।তাই টিফিনের সময়টা দিকটা বিবেচনার জন্য অনুরোধ রইল।
জায়েদা ইয়াসমিন।
Leave a Reply