সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৭ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ সরকারি উচ্চ-মাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের স্কুল থেকে প্রয়োজনীয় শিক্ষা এবং অন্যান্য সেবা পাচ্ছে না। প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবা না পাওয়ায় এসব শিক্ষার্থী তাদের অসন্তুষ্টির কথা প্রকাশ করেছে। নিজেদের স্কুল থেকে শিক্ষা না পেয়ে বিকল্প হিসেবে একটা বড় অংশ কোচিং সেন্টারমুখী হচ্ছে। চড়া মূল্যে কোচিং সেন্টার থেকে শিক্ষা কিনছে তারা। সেখানেও মানসম্পন্ন শিক্ষার অভাব রয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা পরিষদের অর্থায়নে পরিচালিত শিক্ষার মান-সংক্রান্ত এক জরিপে এমন ফলাফল পাওয়া গেছে। সোমবার এনইসি সম্মেলন কক্ষে এক অনুষ্ঠানে ‘সরকারি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান: চাহিদা এবং শিক্ষা প্রদানের মধ্যে শূন্যতা’ শিরোনামে এ প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। জরিপ পরিচালনায় নেতৃত্ব দেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মামুন- উর-রশিদ। অনুষ্ঠানে গবেষণার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন তিনি।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, শিক্ষা ও গবেষণায় বৈশ্বিক মানের তুলনায় অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ। গবেষণার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা ও সাহস প্রয়োজন। এক্ষেত্রে অনেক ঘাটতি রয়েছে। তিনি বলেন, ‘জিন-ভূত কোথায় আছে খোঁজার মতো উদ্ভট গবেষণার জন্য অর্থায়ন করা হবে না। মানসম্মত গবেষণার প্রস্তাব এলে পরিকল্পনা কমিশন অর্থায়ন করবে।’ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগের সদস্য মোহাম্মদ জয়নুল বারী।
গত বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে গণনমুনার ভিত্তিতে জরিপ পরিচালনা করা হয়। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৬০১ জন ছাত্রছাত্রীর কাছে প্রশ্নোত্তরের ভিত্তিতে এ জরিপ পরিচালনা করা হয়। শিক্ষকের কাছে নির্ভয়ে প্রশ্ন করতে পারা, লাইব্রেরি সুবিধা, খেলার মাঠ, ক্লাসরুমে পর্যাপ্ত সুবিধা থাকা, বই, ডায়েরি, নোটিশ ইত্যাদি বিষয়কে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা হিসেবে ধরা হয়েছে। বরিশাল, ঝালকাঠি ও ভোলা- এ তিন জেলায় জরিপ পরিচালনা করা হয়। অধ্যাপক ড. মামুন-উর-রশিদ বলেন, তিন জেলায় জরিপে পাওয়া তথ্য সারাদেশের জন্যই প্রযোজ্য। তিনি বলেন, প্রত্যাশা অনুযায়ী স্কুল থেকে সেবা না পাওয়া শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশই কোচিং সেন্টার অথবা প্রাইভেট পড়ে শূন্যতা পূরণ করার চেষ্টা করছে। সেখানেও মানহীন শিক্ষার শিকার হয় তারা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ পর্যায়ে মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত হলে পরবর্তী পর্যায়ে সুশিক্ষায় আর কোনো সমস্যা হয় না। আবার এ পর্যায়ে ঘাটতি নিয়ে শুরু হলে সারা জীবন ভুগতে হয়। মানবসম্পদ উন্নয়নেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এ কারণে শিক্ষা ও শিখন পদ্ধতি উন্নত করা প্রয়োজন। শিক্ষকের কাছে নির্ভয়ে প্রশ্ন করতে পারার পরিবেশ তৈরি, শিক্ষার্থীদের অপূরণীয় প্রত্যাশা পূরণ, ক্লাসরুমকে শিক্ষাসহায়ক করার সুপারিশ করা হয় এ প্রতিবেদনে।
Leave a Reply