রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৮ পূর্বাহ্ন
আমতলী সংবাদদাতা : ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবেলায় প্রস্তুত আমতলী ও তালতলী উপজেলার উপকূলীয় এলাকার ৫ লক্ষাধিক মানুষ। প্রস্তুত রাখা হয়েছে দুই উপজেলায় ১৪৫টি সাইক্লোন সেল্টার। উপকূলীয় মানুষ ও জেলেদের নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য কাজ করছে দুই হাজার ৫২০ জন সেচ্ছাসেবী। ইতিমধ্যে বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মৎস্যজীবীরা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
জানাগেছে, ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে আমতলী- তালতলীর উপকূলীয় এলাকায় গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। সাগর উত্তাল রয়েছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পেতে পারে এমনটাই জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে উপকূলের মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ফণী মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আমতলী ও তালতলীতে মাইকিং ও সতর্কীকরণ সংকেত পতাকা উত্তোলন এবং সাগর ও তৎসংলগ্ন নদ-নদীতে চলাচলরত সকল প্রকার মাছ ধরা ট্রলার ও নৌযানকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে যেতে বলা হয়েছে। মানুষকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার জন্য আমতলীতে এক হাজার ৬৫০ ও তালতলীতে ৮৭০ জন ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির সেচ্ছাসেবীরা কাজ করছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাহির ও চরাঞ্চল এলাকার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে যেতে বলা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে দুই উপজেলায় ১৪৫টি সাইক্লোন সেল্টার।
বৃহস্পতিবার খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, তালতলী উপজেলার বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন আশারচর, খোট্টারচর, নিদ্রাসকিনা, ফকিরহাট, বালিয়াতলী, জয়ালভাংঙ্গা, তেতুঁলবাড়িয়া, নিউপাড়া, চরপাড়া, গাবতলী, ছোটবগী, পচাঁকোড়ালিয়া, আমতলী উপজেলার পশুরবুনিয়া, লোচা, ফেরীঘাট, আমুয়ারচর, বৈঠাকাটা, আঙ্গুলকাটা, গুলিশাখালীর নাইয়াপাড়া ও হরিদ্রাবাড়িয়া এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাহিরে বসবাসরত লোকজনকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। অনেক মানুষ নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। উপকূলীয় এলাকার সকল মাছ ধরা ট্রলার ও নৌকা তীরে ফিরে এসেছে।
তালতলীর তেতুঁলবাড়ীয়া এলাকার জেলে বাবুল হাওলাদার, সেলিম মিয়া, আসাদুল, হিরন হাওলাদার ও রুবেল জানান, বইন্যার খবর পাইয়্যা মোরা নাও জাল লইয়্যা বাড়তে আইছি। সিডরের লাহান ভুল আর করমু না।
তালতলী ট্রলার মালিক সমিতির সদস্য আলমগীর হোসেন হাওলাদার বলেন, বন্যার খবর শুনে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন নদ-নদীর সকল মাছ ধরা ট্রলার ও নৌকা তীরে অবস্থান করছে।
তালতলীর ফকিরহাট মৎস্য আড়ৎ ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি মোঃ আবদুস ছালাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর খবর পেয়ে বঙ্গোপসাগরের সকল মাছ ধরা নৌকা এবং চরের জেলেরা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
আমতলী ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (রেড ক্রিসেন্ট) কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আছাদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় মাইকিং, প্রচার -প্রচারণা করে মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এ জন্য মাঠে কাজ করছে দুই হাজার ৫২০ জন সেচ্ছাসেবক। উপকূলীয় মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১৪৫টি সাইক্লোন সেল্টার।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরোয়ার হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে কাজ করছে সেচ্ছাসেবীরা। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
Leave a Reply