মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৪ পূর্বাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি॥ বরগুনার আলোচিত শাহনেওয়াজ রিফাত (রিফাত শরীফ) হত্যা মামলায় প্রাপ্ত বয়স্ক ১০ আসামির রায় ঘোষণা হবে আজ। এ মামলায় প্রধান সাক্ষী থেকে আসামি করা হয়েছে রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে। শেষ পর্যন্ত কী আছে মিন্নির ভাগ্যে, এর উত্তর জানতে সবার মাঝে কৌতুহলের শেষ নেই।
২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে খুন করা হয় রিফাত শরীফকে। এ সময় মিন্নি তার স্বামীকে বাঁচানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে হেরে যান হত্যাকারীদের সঙ্গে। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান রিফাত।
এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে মিন্নির প্রশংসা করেন অনেকেই। এরপর ২৭ জুন রিফাতের বাবা আ. হালিম দুলাল শরীফ একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলায়ও মিন্নিকে সাক্ষী করা হয়।
মামলা তদন্তের একপর্যায়ে তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ুন কবির নয়নের সঙ্গে মিন্নির সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায়। মিন্নির আগের বিয়ের তথ্য গোপন, মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ডের সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা, হত্যা পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রিফাত হত্যার ২০ দিন পর ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই মিন্নিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রধান সাক্ষী থেকে আসামি হয়ে যান মিন্নি। এ নিয়ে মামলাটি মোড় নেয় অন্যদিকে।
এরপর নানা জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে হাইকোর্ট থেকে বিচারিক কার্যক্রম চলমান থাকাকালীন সময় পর্যন্ত বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরের জিম্মায় জামিন পান মিন্নি। বিচারিক কার্যক্রম শেষ হওয়ায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলামের জিম্মায় জামিনে রয়েছেন তিনি।
মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, আদালতের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় আমরা শুরু থেকেই বলেছি মিন্নি নির্দোষ। মিন্নির স্বামী রিফাত শরীফ তার বাবার কাছে মৃত্যুর আগে যে জবানবন্দি দিয়েছেন তাতে এমন কিছু কথা বলে গেছেন যার একমাত্র সাক্ষী মিন্নি। রিফাত শরীফ মৃত্যুর আগেও বলেছে মিন্নি তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে এবং সে সাক্ষী। কিন্তু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে আসামি করেছে। মিন্নির বিরুদ্ধে যেসব যুক্তি তর্ক ও তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করেছে আমরাও মিন্নিকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য সব তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করেছি। আশা করি মিন্নি এই মামলা থেকে অব্যাহতি পাবে। তারপর আদালত যে সিদ্বান্ত দিবে সেটা আমরা মেনে নিবো।
তিনি আরো বলেন, মিন্নিকে অভিযুক্ত করে আদালত রায় দিলে অন্য আসামিদের সঙ্গে মিন্নিকেও কারাগারে যেতে হবে। সেই সঙ্গে উচ্চ আদালতে মিন্নির আপিল করা সুযোগ থাকবে বলেও তিনি জানান।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এম মজিবুল হক কিসলু বলেন, এই মামলায় ৮ আসামি ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। মিন্নি নিজেও রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা বলে জবানবন্দি দিয়েছে। এছাড়া মোবাইল রেকর্ড ও মিন্নির সঙ্গে নয়ন বন্ডের বিবাহ ও গোপন সম্পর্কের বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হয়েছে। এই মামলার অন্যতম প্রধান পরিকল্পনাকারী মিন্নি। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ আশাবাদী, আদালত এই মামলায় মিন্নিকে অভিযুক্ত করে রায় প্রদান করবে।
Leave a Reply