রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৮ পূর্বাহ্ন
ইমতিয়াজুর রহমান।।ভোলায় লালমোহনে মেঘনা নদী সংলগ্ন লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছে একটি প্রভাবশালী মহল। ফলে ঝূঁকির মধ্যে আছে বেড়িবাঁধের আশে পাশে আশ্রয় নেয়া কয়কে শতাধিক ভূমিহীন পরিবার। আসন্ন বর্ষায় মৌসুমে শহর রক্ষা বাঁধটি হুমকির মুখে পড়বে বলে আশংকা করছেন এলাকাবাসী। অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় চেয়ারম্যান এর নেতৃত্বে বেড়ি বাধেঁর মাটি কাটা হচ্ছে। আর জেলা প্রশাসক বলছে দ্রুত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে
ভোলার লালমোহনে উপজেলার লর্ড হার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের ফাতেমাবাদ এলাকার বেতুয়া সুইজ গেইট এলাকায় বেড়িবাঁধের ও ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে ইট ভাটায়।
দীর্ঘদিন ধরে বেড়িবাঁধের পাশে ভেকু ব্যবহার করে মাটি কেটে ট্রাক্টর এবং ট্রলিতে করে পার্শ্ববর্তী রওনক ঝিকঝাক ব্রিকস, চরফ্যাশনের বেতুয়া ব্রিকস, জনতা ব্রিকস, ফ্যাশন ব্রিকস এর ইট ভাটাগুলোতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এই মাাটি। ফলে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি বাড়ছে বেড়িবাঁধের পাশে আশ্রয় নেয়া হাজারো পরিবারে মাঝে। মাটি কেটে নেয়ায় প্রতিনিয়ত দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে। ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। পুরো এলাকাই যেন ধূলাময়। অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় লর্ড হার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের কাশেম চেয়ারম্যান এর নেতৃত্বে এই মাটি কেটে ইট ভাটায় ব্যাবহার করা হচ্ছে। ফলে পুকুর থেকে শুরু করে বাড়ী ঘর ভেঙ্গে পরছে। আতংকে দিন কাটছে ঐ পরিবারগুলোর।
স্থানীয় আব্দুল কফুর বলেন, নদী ভাঙ্গা হাজারো পরিবার এখানে এক টুকরো জমি নিয়ে ২৫-৩০ বছর ধরে আশ্রয় নিয়ে বসবাস করছে। কিন্তু এখন ইট ভাটায় মাটি কেটে নেওয়াতে এখন অনেক সমস্যা হচ্ছে। সাধারন মানুষ এখন ধুলাবালিতে মধ্যে বসবাস করছে। শুধু তাই নয় মাটি কাটায় পাশের শত শত বিঘা জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় আবদুর রহিম বলেন, সরকার নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষার জন্য কোটি কোটি টাকা ব্লক দিচ্ছে। এখন ইট ভাটার জন্য মাটি কেটে নিয়ে গিয়ে সেই জায়গাগুলো ঝূঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। মনে হচ্ছে খাল কেটে কুমিড় আনছে। তাই আমরা মটি কাটা বন্ধের জন্য স্থানীয় এমপি নুরনবী চৌধুরী শাওন এর সুদৃষ্টি কামনা করছি।
স্থানীয়রা আরো বলেন, সরকার বেড়ীবাঁধ দিয়েছে সাধারন মানুষ যাতে নিরাপদে থাকতে পারে। কিন্তুু এখানে যেভাবে মাটি কাটা হচ্ছে তাতে করে আগামী বর্ষায় এই বাধঁ ভেঙ্গে পরতে পারে। তখন শত কোটি টাকার ফসলাদী জমিজমা, বাড়ীঘর ক্ষতি হবে। সেই ক্ষতির আগেই মাটি কাটা বন্ধ করা উচিত বলে জানায়।
স্থানীয় লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, মাটি কাটার ফলে বেড়িবাঁধের কোন ক্ষতি হচ্ছে না। পরিত্যাক্ত বেড়িবাঁধের মাটি কাটা হচ্ছে। আর কিছু জমি হচ্ছে মালিকানা তাদের কাছ থেকে টাকা দিয়ে জমির মাটি কিনে নেয়া হচ্ছে। আর যারা মাটি কাটছে তারা পার্শ্ববর্তী বেতুয়া ব্রিকস, জনতা ব্রিকস, ফ্যাশন ব্রিকস এসে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যে তাদের সাথে বসছি। অচিরেই তারা মাটি কাটা বন্ধ করবে বলে জানায়। এতে রাস্তার কিছু ক্ষতি হচ্ছে বলে জানান। এছাড়া যারা বেড়িবাঁধের পাশে ঝূঁকিতে আছে বলে জানিয়েছেন তাদেরকে গুচ্ছগ্রামে, আশ্রয়প্রকল্প স্থানতরীত করে স্থায়ীভাবে বসবাসের ব্যবস্থা করে দিবো।
আর জেলা প্রশাসক মো: মাসুদ আলম ছিদ্দিক বলেন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রন) আইন অনুযায়ী ইট তৈরির জন্য কৃষি জমি কিংবা টিলা থেকে মাটি কাটা নিষেধ। যদি কেউ এই আইন অমান্য করে মাটি কাটে আইন অমান্যকারীদের দুই বছর সাজা এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ড দেয়ার বিধান আছে। আমরা অচিরেই এর বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভোলা জেলাজুড়ে ইটভাটা আছে ১০৫টি। এরমধ্যে প্রায় ৭৬টি আধুনিক জিগজ্যাগ পদ্ধতি অনুসরণ করলেও বাকিগুলো ক্ষতিকর চিমনি পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়।
উল্লেখ্য রওনক ব্রিকস, জনতা ব্রিকস লাইসেন্স নবায়ন নেই আর বাদি দুটির অবৈধভাবে কাঠ পুড়িয়ে ইট ভাটা পরিচালন করছে বলে জানাযায়।
Leave a Reply