শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫০ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল : বরিশাল শহরের একটি সরকারি ব্যাংকের অভ্যন্তরে এক শিক্ষকের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ছিনতাইকারী ক্যাশ কাউন্টারের সামনে আসনে বসে থাকা ওই শিক্ষকের টাকার ব্যাগ নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। অথচ ওই সময় ব্যাংকের গ্রাহকদের নিরাপত্তায় পুলিশের একটি টিম নিয়োজিত ছিল। তাছাড়া ব্যাকের নিরাপত্তা প্রহরীরও সেখানে দায়িত্ব পালন করছিল। ফলে এই কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে ছিনতাইয়ের ঘটনাটি নানা প্রশ্নের মুখোমুখি করেছে। বিশেষ করে সোনালী ব্যাংকের ভেতরে প্রকাশ্যে ছিনতাইয়ের ঘটনাটি গ্রাহকদের মাঝেও আতঙ্ক বাড়িয়ে তুলেছে।
যে কারণে পুলিশের দায়িত্ব নিয়েও কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন। ছিনতাইরে শিকার মো. হোসেন আলী খান বরিশাল বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরামদ্দী ইউনিয়নের বাসিন্দা। তবে তিনি সদর উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক। এই শিক্ষক পুরো ঘটনাটির বর্ণনায় জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বেলা আনুমানিক দেড়টার দিকে ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টার থেকে ৩০ হাজার ৬৪০ টাকা উত্তোলন করেন।
পরবর্তীতে টাকাগুলো ব্যাগ ভর্তি করে সেখানে নির্ধারিত আসনে বসে মেয়ে জাইমাইয়ের আসার অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে এক ব্যক্তি এসে সেই টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে দৌড়ে পালায়। এক্ষেত্রে বিষ্ময়কর বিষয় হচ্ছে- ছিনতাইকারী দৌড়ানোর প্রাক্কালে স্কুল শিক্ষক চিৎকার দিলেও পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে আসেনি বা ছিনতাইকারীকে আটকেও কোন পদক্ষেপ নেয়নি। বরং তাদের খোশগল্পে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ব্যাংকের ভেতরে এত নিরাপত্তার পরেও ছিনতাইয়ের ঘটনাটি গ্রহকদের বেশিমাত্রায় আতঙ্কিত করে তুলেছে। ফলে অনেকেই অনুমান করছে ব্যাংকে কোন কর্মচারী বা পুলিশ সদস্যদের সাথে ছিনতাইকারী চক্রের কোন যোগসূত্র রয়েছে। অবশ্য এমন ধারনা অমূলকও নয়। কারণ শিক্ষকের টাকা যে আসন থেকে নেয়া হয়েছে সেখান থেকে ব্যাংকের প্রধান ফটকের দূরত্ব আনুমানিক ৩০ ফুট। আর সেখানেই অবস্থান করছিলেন দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা। যদিও সেখানে বেশ কয়েকজন কনস্টেবলকে দেখা গেলেও কোন অফিসার ছিলেন না। তবে তাদের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে পুলিশে ইনচার্জ এসআই জসিম পরীক্ষায় ব্যস্ত থাকায় দায়িত্বে রয়েছেন নায়েক আরিফুল ইসলাম।
কিন্তু ঘটনার প্রায় ঘন্টাখানেক পরেও তাকে কেন দেখা যায়নি বা আসেননি এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে অপরাপর পুলিশ সদস্যরা বলছেন- স্যার বাইরে রয়েছেন, খবরটি তাকে জানানো হয়েছে। পরবর্তীতে বেলা বেলা পৌনে ৩টার দিকে নায়েক আসলেন। এক্ষেত্রে এই পুলিশ কর্তার অভিব্যক্তি হচ্ছে বিষয়টি অনাকাঙ্খিত। কিন্তু তিনি কোথায় ছিলেন সেই প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই ছিনতাইয়ের টাকা উদ্ধারে প্রস্তুতির বিষয়টি অবহিত করেন।
এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম সরদার বলেন- ছিনতাইয়ের শিকার ব্যক্তি অভিযোগ করলে সিসি টিভির ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা হবে। এমনকি এই বিষয়টিতে থানা পুলিশেরও হস্তক্ষেপ চাইবেন। তবে দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশের নিষ্ক্রিয় থাকার বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে নারাজ।
অনুরুপ একই বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি দক্ষিণ) বলেন- অভিযোগ পেলে ব্যাংকের সিসি টিভির ফুটেজ পরীক্ষা নিরীক্ষা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি এই ঘটনায় পুলিশ সদস্যদের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও যথাযথ আইনে ব্যবসথা গ্রহণ করা হবে।’’
Leave a Reply