শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৫ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক :
পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), নাজিরপুর থানার ওসি এবং হেল্পলাইনে সহায়তা চেয়েও বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পায়নি মুফিজা আক্তার মীম (১৩) নামে অষ্টম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী। গত শুক্রবার বিকেলে উপজেলার মালিখালী ইউনিয়নের পেনাখালী গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ীতে বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার বরবুনি গ্রামের মোশারেফ হোসেনের ছেলে কামরুল ইসলাম (২৮) এর সাথে মীমের বাল্যবিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে।
মীম জেলার স্বরুপকাঠী উপজেলার বিন্না বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী এবং ওই উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের খেজুরবাড়ী গ্রামের বালুর জাহাজের শ্রমিক মহিউদ্দিন হাওলাদারের মেয়ে।
মীমের বাবা মহিউদ্দিন জানান, মীম মেধাবী ছাত্রী। মীমের মামা বাড়ী নাজিরপুর উপজেলার শাখারীকাঠী ইউনিয়নের গিলাতলা গ্রামে। মীমের মামা নুরুল ইসলাম মীমকে বিয়ে দেয়ার কথা জানালে তিনি মীম বাচ্চা মেয়ে এবং মেধাবী ছাত্রী, এ কারণে তিনি এই মুহুর্তে মীমকে বিবাহ দিবে না বলে তার মামাকে জানিয়ে দেন। কয়েক দিন আগে মীমের মা বেড়ানোর কথা বলে মীমকে নিয়ে মামার বাড়ীতে আসেন। শুক্রবার দুপুরে মহিউদ্দিন জানতে পারেন। মীমের মামা নুরুল ইসলাম পেনাখালী গ্রামে তার শ্বশুরবাড়ীতে নিয়ে মীমের বাল্য বিয়ের আয়োজন করেছেন।
এ ঘটনা জানতে পেরে তিনি প্রথমে নাজিরপুর থানার ওসির মুঠোফোনে কল করে মেয়েকে বাল্য বিয়ে থেকে রক্ষা করার আবেদন জানান। প্রথমে ওসি তাকে ইউএনওকে জানানোর পরামর্শ দেন। পরে বলেন থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দিলে তিনি ব্যবস্থা নিবেন। পরে মহিউদ্দিন ইউএনওর মুঠোফোনে কল করে ঘটনাটি তাকে অবগত করেন। তিনি মহিউদ্দিনকে জানিয়ে দেন ওসির কাছে যান তিনিই বাল্য বিয়ে বন্ধ করবেন। এ সময় তিনি জানতে পারেন ওই বাড়ীতে তার মেয়ের বাল্য বিযের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে।
তখন তিনি হেল্পলাইনে ফোন করে মেয়েকে বাল্য বিয়ে থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন কিন্তু তাতেও কোন ফল হয়নি। অবশেষে তিনি সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান।এ ঘটনা জানতে পেরে সংবাদকর্মী পরিচয়ে নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোজী আকতারের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি প্রথমে বলেন ওসি সাহেবের সাথে যোগাযোগ করেন, তিনিই ব্যবস্থা নিবেন। তখন তার কাছে বাল্য বিয়ে বন্ধ করার দায়িত্বটা মুলত কার জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা মহিলা বিষযক অধিদপ্তরের দায়িত্ব।
মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার সাথে একটু কথা বলেন। ঘটনার বিষয়ে নাজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম সুলতান মাহমুদের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, আইন শৃংখলা রক্ষার দায়িত্ব পুলিশের। মারামরি বা অন্য কোন ঘটনা ঘটলে পুলিশ সেখানে ব্যবস্থা নিবে। বাল্য বিয়ের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন দেখবে। সেখানে আমাদের সহায়তা চাইলে আমরা সহায়তা করবো। ঘটনার বিষয়ে কথা হলে মীমের মামা নুরুল ইসলাম জানান, মীম নাবালিকা তাই এই এখন রেজিষ্ট্রি করে তাকে বিবাহ দেয়া সম্ভব নয়। তাই শুধুমাত্র বিয়ের কথা চূড়ান্ত করে আংটি পরানো হয়েছে মাত্র।
Leave a Reply