রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪১ পূর্বাহ্ন
মো:আমিন হোসেন:বৃটিশ শাসনামলে উপমহাদেশ কাঁপানো, হৃদয়বিদারক, নৃশংস, লোমহর্ষক ও কলঙ্কময় এক ঘটনার নাম ‘কুলকাঠি হত্যাযজ্ঞ’। যা ‘দ্বিতীয় জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ড’ নামেও পরিচিত। আজ থেকে ৮৩ বছর আগে, বাংলা ১৩৩৩ সনের ১৮ ফাল্গুন ও ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দের ২ মার্চ এ ঐতিহাসিক ঘটনাটি ঘটে। ঝালকাঠির কুলকাঠিতে এ দিনে মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা করতে যেয়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইএন ব্লান্ডির হুকুমে গুর্খা সৈন্যদের গুলিবর্ষণে শাহাদাতবরণ করেন ১৯ জন ধর্মপ্রাণ মুসলমান।
আহত হন অসংখ্য মানুষ। সেই থেকে প্রতিবছর নানা কর্মসূচির মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টিকারী, মর্মান্তিক ও বেদনাময় দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, কুলকাঠির শহীদদের স্মৃতি আজ বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে ১৯ শহীদের কবর। অনেক কবরের চিহ্ন পর্যন্ত নেই। এতবড় ঘটনা কালের স্বাক্ষী হিসেবে থাকলেও বর্তমান প্রজন্মের কাছে সে ইতিহাস অজনাই থেকে যাচ্ছে।
তাই প্রতি বছরের মত আজ ২ই মার্চ নলছিটি উপজেলার কুলকাঠি ইউনিয়ন গণহত্যা দিবস পালিত হয়। নিহতের পরিবার আজও এ দিনটিকে স্মরণ করে রেখেছে।
নিহতের স্বজনরা জানায়, শিবরাত্রি উপলক্ষে রথযাত্রা করে হিন্দুরা ঢোল বাজনা বাজিয়ে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কুলকাঠি মসজিদের পাশ দিয়ে শিববাড়ি আসতেন। এতে মসজিদে নামাজের ব্যাঘাত এবং মসজিদের সন্মান নষ্ট হয় ভেবে স্থানীয় মুসলমানরা রথযাত্রায় বাধা দেয়ার প্রস্তুতি নেন।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুসলমান ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বিলম্ববনা দেখা দেয়। নলছিটি কুলকাঠির গণহত্যাকান্ড উপ-মহাদেশের ইতিহাসে ইংরেজ রাজত্বের কলঙ্কময় অধ্যায়। কুলকাঠিবাসী এ ঘটনাকে স্মৃতির পাতায় রাখতে ওই গ্রামের নামকরণ করেছেন শহীদিয়া। দিনটি উপলক্ষে স্হানীয়রা আজ বিকেলে শহীদিয়া চত্বরে নিহতের স্বজনদের উদ্যোগে স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ও তাদের দাবী এ দিনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে যেনো শোক পালন করা হয়।
Leave a Reply