বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৮ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ বোরো মৌসুমে ধান কাটতে কৃষক ও দিনমজুরদের পাশাপাশি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করে এই সমস্যা যাতে দেশে না হয় সেজন্য সবাইকে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। শনিবার (১৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের সপ্তম অধিবেশনে শোক প্রস্তাবে অংশ নিয়ে সমাপনী বক্তব্য রাখার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আহ্বান জানান।
সংসদে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সবদেশে ব্যাপক প্রাণহানি ও পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাবের ওপর বক্তব্য রাখার সময় সাবেক সহকর্মী ও দলীয় নেতার স্মৃতিচারণার পর করোনাভাইরাস ঠেকাতে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।এসময় দেশ ও বিশ্বের খাদ্য পরিস্থিতির কথা বলতে গিয়ে দেশে বোরো মৌসুমের সূচনাকে স্বাগত জানান তিনি। সারা দেশে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এখন ধানকাটার মৌসুম শুরু হয়েছে, দিনমজুর যারা এখন কাজ পাচ্ছেন না তাদের জন্য এটা একটা সুযোগ। তারা এখন ধান কাটতে যেতে পারেন। কেবল দিনমজুর নয় সকলেই যাওয়া উচিত। এখানে কেবল উঁচু-নিচু নয়, কাজ করা সকলের দায়িত্ব।
যেসব এলাকায় ধানকাটার শ্রমিকের সংকট আছে সেসব এলাকার ছাত্র-শিক্ষক সকলকে এ কাজে নেমে পড়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ছাত্র-শিক্ষক বিশেষ করে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আমি বলবো, তারা যেন একটু এগিয়ে আসে। সকলে মিলে ধানটা যদি কাটতে পারি আমরা ভালোভাবে চলতে পারবো। আমাদের খাবারের কোনও অভাব হবে না।
তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া আছে যারা যেখানে ধান কাটতে যেতে চায় তাদের সেখানে পৌঁছে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, বিশ্ব থেকে ইতিমধ্যে খাদ্য দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে। কিন্তু, আমাদের মাটি আছে, মানুষ আছে, আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা যে যা পারি তরিতরকারির ব্যবস্থা করতে হবে। টবে হোক, ছাদে হোক, মাটিতে হোক উৎপাদন করতে পারি আমরা। নিজেরা চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদেশকে দিতে পারি। এজন্য সমাজের সবস্তরের মানুষকে আমি জমি-জায়গা ফেলে না রেখে সব জায়গায় ফসল ও সবজি উৎপাদনের আহ্বান জানাচ্ছি।
মহামারী নভেল করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সারা দেশে অচলাবস্থার মধ্যে সংবিধানের ‘নিয়ম রক্ষায়’ দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময়ের সংসদ অধিবেশন হয়ে গেল। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শনিবার বিকেল ৫টায় সংসদের সপ্তম অধিবেশন শুরু হয়, যা চলে দেড় ঘণ্টারও কম সময়।
অধিবেশনের সমাপনী সম্পর্কে রাষ্ট্রপতির আদেশ পাঠ করে শোনানোর আগে স্পিকার শিরীন শারমিন দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘আসুন আমরা ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে এই সংকট উত্তরণ ঘটাই। আতঙ্কিত না হয়ে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলি, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখি, নিয়মিত ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করি। নিজ বাড়িতে অবস্থান করি। আমাদের সকলের দায়িত্বশীল আচরণ এই সংকট উত্তরণের পথ সহজ করবে।’
পরে স্পিকার রাষ্ট্রপতির আদেশ পাঠ করেন। রাষ্ট্রপতি তার আদেশে বলেন, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের ১ দফায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আমি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে আহূত একাদশ জাতীয় সংসদের সপ্তম অধিবেশন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসমাগম পরিহার করার জন্য জনস্বার্থে …সমাপ্তি করিতেছি।’
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে এ অধিবেশনে সাংবাদিকদের সশরীরে সংসদে না গিয়ে বরং নিজেদের জায়গায় থেকে সংসদ টেলিভিশনে সরাসরি প্রচারিত অধিবেশন দেখে সংবাদ করতে বলা হয়েছে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ অধিবেশন শেষ হওয়ার ৬০ দিন বিরতির পর চলতি ২০২০ সালের এ দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী, একটি অধিবেশন শেষ হওয়ার পর পরবর্তী অধিবেশন বসার মাঝে ৬০ দিনের বেশি বিরতি থাকতে পারবে না। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ গত ৬ এপ্রিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের (১) দফায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ অধিবেশন আহ্বান করেন। সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ অধিবেশন মাত্র একদিন বসতে পারে।
Leave a Reply