শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২২ পূর্বাহ্ন
আমতলী প্রতিনিধি॥ বরগুনার আমতলী উপজেলার দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামে মাঝির খালটি খননের ফলে জমিতে পানি দেওয়ার জন্য এখন আর বৃষ্টির অপেক্ষা করতে হবে না। খালটি খননে ওই এলাকার ৫ শতাধিক কৃষক ও দুই পারে বসবাসরত ১০ হাজার মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। ফলে এখন বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছে তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের ৫ শতাধিক কৃষক ৬০০ বিঘা জমি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। পানি দেওয়ার বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় জমি চাষের পর ফাল্গুন-চৈত্র মাসের শেষের দিকে কৃষকদের বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে হতো। আবার বৈশাখে ঝড়-বৃষ্টিতে তাঁদের কষ্টার্জিত ফসল বাড়িতে নিতে আসতে অনেক বেগ পেতে হতো। দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের এমন দুর্ভোগ দেখে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিকের উদ্যোগে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন বিএডিসির মাধ্যমে ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য মাঝির খালটির খননকাজ শুরু করে। খাল খননের পর স্থানীয় কৃষক এবং দুই পারে বসবাসরত প্রায় ১০ হাজার মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। খাল খননে পানির সমস্যা দূর হওয়ায় এখন সহজেই কৃষকরা তাঁদের জমির ধান বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, এখন আর জমিতে পানি দেওয়ার জন্য বৃষ্টির অপেক্ষা করতে হবে না। খননের ফলে খালে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে কৃষকরা সহজেই জমিতে পানি দিতে পারবেন।
স্থানীয় কৃষক আব্দুল লতিফ গাজী বলেন, ‘মরে যাওয়া মাঝির খালটি খনন প্রকল্পের কারণে এখন আর জমিতে পানির অভাব হবে না। খালের দুই পারে প্রশস্ত রাস্তা হওয়ার কারণে কোলা (বিল) থেকে ধান আনতে আর কোনো অসুবিধা হবে না। এখন ট্রলির মাধ্যমে আমরা ধান আনতে পারব।’
কৃষক মোকলেছ হাওলাদার ও মো. গফুর আকন জানান, মাঝির খালটি খননের আগে অন্যত্র থেকে পানি এনে জমিতে দিতে হতো। এখন খালের পানি জমিতে ব্যবহার করে বাম্পার ফলন ফলাতে পারব।
একই গ্রামের কৃষক ও ইউপি সদস্য মো. আবু সালেহ জানান, ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মাঝির খালটি খননের মাধ্যমে এলাকার কৃষকদের পানি সমস্যার সমাধান হয়েছে।
বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মোহাইমিনুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামের কৃষকরা পানি অভাবে দুশ্চিন্তায় থাকত। ধান বের হওয়ার সময় পানির অভাবে অধিকাংশ ধানেই চিটা হতো। এ বিষয়ে ওই গ্রামের কৃষকরা আমাদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছিল। মাঝির খালটি খননের মাধ্যমে ওই এলাকার ৫ শতাধিক কৃষকদের দীর্ঘদিনের ওই সমস্যা দূর হয়ে যাবে। উপকৃত হবে দুই পারে বসবাসরত ১০ হাজার মানুষের।’
হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক মুঠোফোনে বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামের কৃষক ও মাঝির খালের দুই পারে বসবাসরতদের পানির সমস্যা ছিল। আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরে তাদের কথা চিন্তা করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন বিএডিসি মাধ্যমে প্রকল্প দাখিল করি এবং খাল খনন করে দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামের কৃষক ও বসবাসকারীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি।’
Leave a Reply