সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৩ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) তিনশ’ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। ক্যাম্পাসে ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন চলছে। হল ত্যাগের নির্দেশ অমান্য করে বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রী ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে ভিসির পদত্যাগের একদফা দাবিতে অনড় রয়েছেন। এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা হলো।
জানা গেছে, প্রশাসনিক কাজে বাধা, গুলিবর্ষণ এবং হত্যার উদ্দেশ্যে মারধরের অভিযোগ এনে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অজ্ঞাতনামা তিনশ’ শিক্ষার্থীকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল হান্নান বাদী হয়ে গতকাল সোমবার রাতে নগরীর জালালাবাদ থানায় মামলাটি করেন।
এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন। উপাচার্যকে অপসারণের জন্য ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, ক্যাম্পাস যখন শ্লোগানে উত্তাল তখনই শিক্ষার্থীরা জানতে পারে তাদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশ।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, দিন যতোই যাক, আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি পালন করে যাবো। আমাদের ভাই-বোনদের ওপর যে হামলা হয়েছে, সেই হামলার নির্দেশ যিনি দিয়েছেন সেই ভিসিকে আমরা চাই না।
তবে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আজবাহার আলী শেখ বলেন, পুলিশের ওপর আক্রমণ, পুলিশকে আহত করা, পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপ করার কারণে ডিউটিরত পুলিশ কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার এসআই মো. আব্দুল হান্নান বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
মামলার ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, এটা পরিষ্কার মিথ্যাচার। যে জায়গায় আমরা বই-খাতা নিয়ে ঢুকি সেখানে কীভাবে অস্ত্র পাবো আমরা! আমাদের মধ্যে কেউ অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করেনি। সেখানে কোথা থেকে গুলি ছোঁড়া হয়েছে তা স্পষ্ট দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের হাতে গুলি পাওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, হাস্যরস সৃষ্টি ছাড়া তার অন্য কোনো অর্থ নেই।
অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার নিন্দা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। সেইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেছেন তারা। মঙ্গলবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭ জন শিক্ষকের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, শাবিপ্রবিতে যা ঘটেছে, তার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের নেই। পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে কেবল যে উপাচার্য ব্যর্থ হয়েছেন তাই নয়, বরং শিক্ষার্থীদের ওপরে হামলার নির্দেশ দিয়ে ফৌজদারি অপরাধ করেছেন তিনি। আন্দোলনের মুখে প্রভোস্ট পদত্যাগ করলেও শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলা ইতিমধ্যে ঘটে গিয়েছে। অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারাবাহিকতায় শাবিপ্রবিতেও প্রশাসনের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করছে পুলিশ। লাঠিচার্জ থেকে শুরু করে সাউন্ড গ্রেনেড ইত্যাদি নানা উপায় অবলম্বন করে পুলিশ শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত করেছে, হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে অনেককে।
Leave a Reply