বরিশালে ছেলের আশকারায় বেপরোয়া বউ Latest Update News of Bangladesh

বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:০৯ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




বরিশালে ছেলের আশকারায় বেপরোয়া বউ

বরিশালে ছেলের আশকারায় বেপরোয়া বউ

বরিশালে ছেলের আশকারায় বেপরোয়া বউ




গৌরনদী প্রতিনিধি॥ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বার্থী গ্রামের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ বেপারী (৭০)। পেশায় তিনি দিনমজুর। তবে বয়সের কারণে এখন কাজ করতে পারেন না। তার স্ত্রী আলেয়া বেগম (৬৫) নানা জটিল রোগে ভুগছেন। তাদের তিন ছেলে ও তিন মেয়ে। ছেলেমেয়ের মুখে খাবার জোটাতে কখনো কখনো নিজেদের পেটে দানা পড়েনি এই বাবা-মায়ের। এভাবেই একে একে সবাইকে বড় করেছেন, বিয়ে দিয়েছেন। সবাই যার যার সংসার নিয়ে ব্যস্ত।

 

 

তিন ছেলের মধ্যে মেজ ছেলে মকবুল বেপারী মালয়েশিয়া প্রবাসী। ১০ বছর আগে জমি বিক্রি ও ধার-দেনা করে বহু কষ্টে ছেলেকে বিদেশে পাঠান নুর মোহাম্মদ। এর আগে তাকে বিয়েও দেন অনুষ্ঠান করে। এখন তার অবস্থা বেশ ভালো। বছর পাঁচ আগে বাবার ভিটের পাশে পাকা দালান করেছেন। সেখানেই মকবুলের স্ত্রী লাকি বেগম দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে থাকেন।

 

 

নুর মোহাম্মদ বেপারী ও আলেয়া বেগম তাদের মেজ ছেলে মকবুলকে একটু বেশি ভালোবাসতেন। তার নানা বায়না-আবদার মেটাতে পিছু পা হতেন না। এ কারণে তার অন্য ছেলেমেয়েরা অভিমান করতেন। তখন নুর মোহাম্মদ ও আলেয়া বলতেন, ‘মকবুল বিদেশ গিয়ে আমাদের সংসারের হাল ধরবে। বিদেশ থেকে টাকা পাঠাবে। আমাদের সব দুঃখ ঘুচে যাবে।

 

 

এখন মকবুল ঠিকই বিদেশ থেকে টাকা পাঠান। তবে সে টাকা আসে স্ত্রী লাকি বেগমের ব্যাংক হিসেবে। সে টাকা চোখেও দেখেন না নুর মোহাম্মদ ও আলেয়া বেগম।

 

 

শুধু তাই নয়, গত চার বছর ধরে বাবা-মায়ের খোঁজ নেন না মকবুল। এর কারণ স্ত্রীর কথামতো বাবার ভিটেবাড়িসহ ২০ শতাংশ জমি লিখে দিতে বলেছিলেন মকবুল। বিদেশ থেকে প্রায় চার বছর আগে দেশে এসে জমির লোভে বাবার হাতে কিছু টাকাও তুলে দিয়েছিলেন। তবে নুর মোহাম্মদ তাকে ১০ শতাংশ জমি লিখে দেন। এতেই পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে।

 

 

মকবুল মালয়েশিয়া গেলে তার স্ত্রী লাকি বেগম শ্বশুর-শাশুড়ির ওপর মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। হুমকি-ধমকি দিয়ে বের করে দেয়ার চেষ্টা করেন। অকথ্য ভাষায় গালাগালি দেন। ছেলের বউয়ের কারণে তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।

 

 

এতেও ক্ষান্ত হননি ছেলের বউ লাকি বেগম। সম্প্রতি বাঁশের বেড়া দিয়ে শ্বশুর-শাশুড়ির যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দেন। ফলে নুর মোহাম্মদ ও আলেয়া বেগম ঘরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। গত রোববার অসহায় এই দম্পতি ঘরের সামনে বেড়া দেয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ জানান। এ সময় তার ছেলে বউ লাকি বেগমের সঙ্গে তাদের ঝগড়া বেধে যায়। লাকি বেগম এ ঘটনায় তার বাবা-মা ও স্বজনদের খবর দেন। মঙ্গলবার সকালে (২৬ জানুয়ারি) তারা লকি বেগমের বাড়িতে আসেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাকি বেগম ও তার স্বজনরা নূর মোহাম্মদ বেপারী ও আলেয়া বেগমকে ঘর ছেড়ে চলে যেতে বলেন। এ নিয়ে কাথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তারা হামলা চালিয়ে আহত করেন এই দম্পতিকে।

 

 

প্রতিবেশীরা আহত অবস্থায় তাদের গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। নুর মোহাম্মদ বেপারী চিকিৎসা নিয়ে ছাড়া পেলেও আঘাত গুরুতর হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন আলেয়া বেগম।

 

 

নুর মোহাম্মদ বেপারী বলেন, ‘সন্তান বড় হলে তাদের নিয়ে বাবা-মা হাজারো স্বপ্ন দেখেন। কোনো কোনো সন্তান বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করে আবার কেউ তাদের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেয়। আমাদের ক্ষেত্রেও এমনটা ঘটবে ভাবতেও পারিনি। ওই ছেলের জন্য অনেক কষ্ট সহ্য করেছি। কিন্তু সেই ছেলের কারণেই আজ আলেয়া হাসপাতালে।’

 

 

তিনি বলেন, ‘ছেলেকে বারবার ফোন করে লাকি বেগমের কথা জানিয়েছি। তবে লাভ হয়নি। মকবুল তার স্ত্রীকে ভয় পায়। তার বিরুদ্ধে কোনো কথা বলবে না। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানিয়ে কোনো সুরাহা পাইনি। পরে এলাকার কয়েকজন থানায় মামলা করা জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। ভাবছি এবার মামলা করব।

 

 

স্থানীয়রা জানান, স্বামী বিদেশ থাকায় লাকি বেগম বেপরোয়া জীবনযাপন করছেন। তার সঙ্গে এক প্রভাবশালী ব্যক্তির সখ্যতা রয়েছে। ওই ব্যক্তিকে দিয়ে হাসপাতাল থেকে আলেয়া বেগমের নাম কাটিয়ে দেয়ারও চেষ্টা করা হয়েছে। তবে গুরুতর আহত হওয়ায় চিকিৎসকরা আলেয়া বেগমের নাম কেটে দেননি।

 

 

নুর মোহাম্মদের অন্য ছেলেরাও লাকি বেগম ও প্রভাবশালী ওই ব্যক্তির কাছে অসহায়। তাই এত কিছু ঘটলেও এলাকার কেউ তাদের পাশে দাঁড়াতে সাহস পাচ্ছেন না।

 

 

এ বিষয়ে গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘এ ধরনের কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। এখন জানলাম। পুলিশ পাঠিয়ে খবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD