রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৭ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:বরিশাল আইন মহাবিদ্যালয়ের (ল কলেজ) পিকনিক বাসে হামলার ঘটনাটি ক্রমশই চাপা পড়ে যাচ্ছে। ঘটনার সময় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও সেই কমিটি ১ মাসেও প্রতিবেদন দিতে পারেনি। এমনকি এই হামলার ঘটনায় অভিযুক্তরা চিহ্নিত হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। অথচ তদন্ত কমিটিকে ৫ দিনের মাথাই প্রতিবেদন দিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইকবাল আকতার।
কিন্তু এই কর্মকর্তার নির্দেশ মানাতে যেন নারাজ উপাধ্যক্ষ জহিরুল ইসলাম (!) এমনকি তিনি বিষয়টি নিয়েও সামনে যেন অগ্রসর হতে চাইছেন না ! ফলে এই কর্মকর্তার প্রতি হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ দিনে দিনে বাড়ছে। পাশাপাশি তিনি হামলাকারীদের একজনের মোটরসাইকেল আটকের পর গোপনে ছেড়ে দেয়ায় এই ক্ষোভ আরও বেগবান হয়েছে। এমতাবস্থায় প্রশ্নও উঠেছে- উপাধ্যক্ষের সাথে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের কিসের আপোষ বা সখ্যতা ? মোটরসইকেলই বা কেন তিনি হামলাকারীকে দিয়েদিলেন। অবশ্য এই বিষয়টিনিয়ে কলেজ প্রশাসনেও তোলপাড় চলছে। কিন্তু প্রতিষ্টানের গুরু দায়িত্বে থাকায় শিক্ষক জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলছেন না।
তবে একাধিক শিক্ষার্থী এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন- কলেজ কর্তৃপক্ষ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিলে তারাই সামনে অগ্রসর হবেন। এমনকি একই কলেজের ছাত্র হামলাকারী সাইফুল ইসলামকে কলেজ থেকে তাড়াতে উদ্যোগও নিবেন। এক্ষেত্রে কলেজে অনাকাঙ্খিত কোন পরিস্থিতি তৈরি হলে তার দায় উপাধ্যক্ষকে বহন করতে হবে। কারণ হামলাকারীর বিরুদ্ধে কোন ধরণের ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তিনি মোটরসাইকেলটি গোপনে দিয়ে দিয়েছেন।অবশ্য এই হামলাকারীর মোটরসাইকেলটি উপাধ্যক্ষ নিজেইে আটক করে কলেজ ক্যাম্পাসে রেখেছিলেন।নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন- করেজের পিকনিকে উপধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের সাথে একই বাসে যাওয়ার বিধান থাকলেও তিনি গেছেন পরিবার নিয়ে প্রাইভেটকারে। এমনকি হামলা ঘটনার আগেই তিনি বরিশালে চলে আসেন। এই বিষয়টি নিয়েও শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ সঞ্চার হয়েছে।
জানা গেছে- গত ১৫ মার্চ ল কলেজ শিক্ষক শিক্ষার্থীদের আয়োজনে কুয়াকাটায় পিকনিক অনুষ্ঠিত হয়। পিকনিক থেকে ফেরার পথে বাসে সামান্য বিষয় নিয়ে ওই সাইফুল ইসলামের সাথে শিক্ষার্থীদের কথার কাটাকাটি হয়। এতে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বাসা থেকে নেবে মোটসাইকেল যোগে দ্রুত নিজ এলাকা নলছিটির শিমুলতলায় এসে অবস্থান নেন। এমনকি স্থানীয় অন্তত ২০ থেকে ২৫ সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে পিকনিকের বাসটি গতিরোধ করেন। একপর্যায়ে নলছিটি থানা পুলিশের উপস্থিতিতে তারা বাসের ভেতরে ঢুকে শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হন। এতে অন্তত ১০ শিক্ষার্থী আহত হন।
মূলত এই ঘটনার পর পরই অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নির্দেশে কলেজের শিক্ষক মোস্তফা জামাল খোকনকে প্রধান করে ৩ সদস্য নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। সেই সাথে কলেজ ক্যাম্পাসে সাইফুলের রেখে যাওয়া ব্যক্তি মালিকানাধীন মোটরসাইকেলটি আটক করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে মোটরসইকেলটি উপাধ্যক্ষর নির্দেশে ক্যাম্পাসের এক কোনে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। প্রতিষ্ঠান প্রধানের প্রাথমিক এমন আচারণে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা স্বস্তি পেলেও মোটরসাইকেলটি ছেড়ে দেয়ার পর ক্ষোভ যেন বেড়েই চলছে।
যদিও উপাধ্যক্ষ এখন বলছেন- মোটরসাইকেলটি ঘটনার সাথে জড়িত নয়। যে কারণে মালিককে তার মোটরসাইকেল ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু ১ মাসেও কেন তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়নি এমন প্রশ্নে রেগে গিয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনার পরামর্শ দেন।এ বিষয়ে জানতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইকবাল আকতার ও তদন্ত কমিটির প্রধান অ্যাডভোকেট মোস্তফা জামান খোকনকে একাধিকবার ফোন দিয়ে তাদের নম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
Leave a Reply