রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন
ইমতিয়াজুর রহমান।।ভোলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের জেলেদের পূনঃবাসনের “চাল নিয়ে চালবাজী”র অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলেদের পূনবাসনের প্রথম ধাপে ২, ৪, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের চাল বিতরণে ৪০ কেজির জায়গায় ১৩ থেকে ১৫ কেজি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ২নং পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হাছনাইন আহমেদ হাছান মিয়ার বিরুদ্ধে। চাল কম দেওয়ায় জেলেরা চাল না নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। তারা এ অনিয়মের বিচার দাবী করে চাল না নিয়ে চলে যান।
সরজমিনে গিয়ে দেখে গেছে, সরকার মেঘনা ও তেতুলিয়ায় দুই মাস সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারী করে। এই দুই মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকায় সরকার চার ধাপে প্রত্যেক জেলেকে পুর্নবাসনের জন্য ৪০ কেজি করে চাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথম ধাপে ভোলার সদরের ২নং পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের পুর্নবাসনের চাল বিতরণ শুরু হয়। ইউপি চেয়ারম্যান হাছান মিয়ার নির্দেশে ইউপি সচিব মোঃ নোমান ও টেক অফিসার মোঃ জহির হোসেন ‘জেলেদের পুনবাসনের চাল নিয়ে চালবাজী’ শুরু করেন। জেলেরা ইউপি পরিষদে চাল আনতে গেলে তাদেরকে ৪০ কেজির যায়গায় ১৩, ১৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন জেলেরা। তারা চাল না নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। জেলেরা এ অনিয়মের বিচার চেয়ে চাল না নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে চলে যান।
একাধিক জেলে অভিযোগ করেন বলেন, সরকার মেঘনা-তেঁতুলিয়ায় দুই মাস সবধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এই দুই মাস জেলেদের পুর্নবাসনের জন্য চার ধাপে ৪০ কেজি করে চাল বরাদ্ধ করা হয়। প্রথম ধাপে প্রত্যেক জেলেকে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা। কিন্তু আমরা চাল আনতে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে ইউপি সচিব ও টেক অফিসারের নেতৃত্বে আমাদেরকে ৪০ কেজির যায়গায় ১৩ থেকে ১৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। কেনো চাল কম দেওয়া হচ্ছে এ কথা জিজ্ঞেস করলে ইউপি সচিব আমাদেরকে বলেন চেয়াররম্যান সাহেব এভাবে চাল বিতরণ করতে বলেছেন। পরে আমরা চাল ফিরিয়ে দিয়ে এ অনিয়মের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করি। জেলেরা বলেন আমাদের নামে সরকার যে বরাদ্ধ দিচ্ছে সেগুলো যাতে আমরা ঠিকমত পাই সে জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইউপি সদস্য বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের পুর্নবাসনের জন্য সরকার চার ধাপে ৪০ কেজি করে চাল বরাদ্ধ করেছে। চাল বিতরণের প্রথম ধাপে প্রত্যেক জেলে ৪০ কেজি করে চাল পাওয়ার কথা। চেয়ারম্যানের নির্দেশে ইউপি সচিব ও টেক অফিসার ৪০ কেজির যায়গায় জেলেদেরকে ১৩, থেকে ১৫ কেজি করে চাল বিতরণ করে। এতে জেলেরা ক্ষোভ প্রকাশ করে এই অনিয়মের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। তারা বরাদ্ধকৃত চাল সঠিক ভাবে বিতরণের দাবী করেন। ইউপি সদস্যরা বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান হাছান মিয়া কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে তার ইচ্ছা মতো ইউপি পরিষদ চালাচ্ছেন। জেলেদের চাল বিতরণেও সে অনিয়ম করছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে ইউপি সচিব মোঃ নোমানের ০১৭১৭৮০৮৬৩২ নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের টেক অফিসার মোঃ জহির হোসেন এর সাথে জেলেদের চাল বিতরণের অনিয়মের ব্যাপারে জানতে তার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তার ছেলে ফোনটি রিসিভ করে বলেন, আব্বুর জ্বর উঠেছে তিনি এখন কথা বলতে পারবেন না।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হাছনাইন আহমেদ হাছান মিয়া বলেন, আমার ইউনিয়নে ৩৭’শ জেলে রয়েছে। এবার ১৬ জেলের জন্য ৪০ কেজি করে ৬৪ মেঃ টন চাল বরাদ্ধ পেয়েছি। বাকিদেরকে সমন্বয় করার জন্য চাল বিতরণে হয়তো একটু উনিশ বিশ হতে পারে। এ বিষয়টি ইউএনও মহোদয় জানে।
জেলা প্রশাসক মোঃ মাসুদ আলম ছিদ্দিক বলেন, জেলেদের বরাদ্ধকৃত পুনবাসনের চাল বিতরনের অনিয়মের বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখবো। চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply