রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতাসীন হওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা নেই বলে দাবি করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ওপর নির্ভর করতে চান।
বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে পৌঁছান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে তার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের আগে এক সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ ইস্যুতে প্রশ্নের মুখে পড়েন ট্রাম্প।
একজন সাংবাদিক জানতে চান, বাইডেন প্রশাসনের আমলে বাংলাদেশের ক্ষমতা পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই ধারাবাহিকতা কি ট্রাম্প প্রশাসনও বজায় রাখবে?
ট্রাম্প বলেন, “এ ক্ষেত্রে আমাদের ডিপ স্টেটের কোনো ভূমিকা ছিল না। এটা এমন একটি বিষয় যেটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন এবং সত্য বলতে, শত শত বছর ধরে এ বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। কিন্তু আমি এটা প্রধানমন্ত্রীর হাতে ছেড়ে দিচ্ছি।”
ট্রাম্পের বক্তব্যে যে ‘প্রধানমন্ত্রী’র কথা বলা হয়েছে, তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথাই বলেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি মোদি।
এর আগে গত বছরের অক্টোবরের শেষ দিকে বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলেছিলেন ট্রাম্প। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে তিনি বলেছিলেন, “আমি বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিস্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর বর্বরোচিত সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। দেশটিতে দলবদ্ধভাবে হামলা ও লুটপাট চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন পুরোপুরিভাবে বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যে রয়েছে।”
গত ৫ আগস্ট শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতে আশ্রয় নেন তিনি, আর এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে।
আওয়ামী লীগ এবং দলটির সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, শেখ হাসিনার সরকার পতনের নেপথ্যে কলকাঠি নেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। তবে বাইডেন প্রশাসন বরাবরই এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। এই সরকার গঠনের ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের ভূমিকা ছিল কি না, তা নিয়েও বিতর্ক চলছে।
ট্রাম্পের বক্তব্যের পরও এ বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কোনো মন্তব্য করেননি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশের ক্ষমতা পরিবর্তন বা রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি।
বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশ ইস্যুতে মোদির নিরবতা ইঙ্গিত দেয় যে, ভারত হয়তো কূটনৈতিকভাবে সতর্ক অবস্থান নিচ্ছে।
Leave a Reply