শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৮ পূর্বাহ্ন
খোকন আহম্মেদ হীরা: আওয়ামী লীগের জেলা ও মহানগর কমিটিতে জড়িত না
থাকলেও যুব বয়সী বিশিষ্ট শিল্পপতি আরিফিন মোল্লার একমাত্র পরিচয় তিনি আওয়ামী লীগের
একজন কর্মী। তার পরেও সাংগঠনিক সকল কর্মসূচিতে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে শোডাউন
দিয়ে প্রবীণ নেতাদের চেয়ে তিনি প্রথমভাগে নজর কেড়েছেন।
অন্যদিকে এলাকা ও দলীয় অসহায় নেতাকর্মীদের ভাগ্য উন্নয়নে নিজস্ব অর্থায়ন বিনিয়োগ
করায় রাজনীতিতে সক্রিয় থেকে সৃষ্টি করেছেন নতুন এক ক্রেজ। এতেই নানা ষড়যন্ত্রের কবলে
পরতে হচ্ছে তাকে। আরিফিন মোল্লা বলেন, আমি ষড়যন্ত্র ও প্রতিহিংসার রাজনীতিতে
বিশ্বাসী নই। যেখানে বঙ্গবন্ধুর নাম আছে সেখানেই আমি উন্নয়নের ছাঁপ রাখতে চাই।
ব্যানার ও ফেস্টুন ঝুলিয়ে নিজেকে জাহির করার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে ব্যাপক উন্নয়ন
কর্মকান্ডে অংশগ্রহনের মাধ্যমে গত কয়েকদিনে বরিশাল সদর আসনে ব্যাপক আলোচিত ব্যক্তি
হয়েছেন আরিফিন মোল্লা।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বরিশালের ছয়টি সংসদীয় নির্বাচনী এলাকার মধ্যে বিভাগীয় শহর
বরিশাল-৫ (সদর) আসনের প্রার্থীতা নিয়ে বরাবরই সকলের দৃষ্টি থাকে। বিএনপি প্রভাবিত
এ আসনে বিএনপির প্রার্থী কে হচ্ছেন তা আগেভাগেই ধারণা মিলে যায়। বিজয়ের
ব্যাপারে তারা থাকেন নির্ভার। কারণ এখানে আওয়ামী লীগ অপেক্ষা বিএনপির ভোটব্যাংক
দ্বিগুন। তদুপরি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে তুমুল লড়াই
চলে। গত দুটি নির্বাচন থেকে প্রেক্ষাপট ভিন্নতর দেখা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রয়াত
নেতা শওকত হোসেন হিরন ২০০৮ সালে সিটি মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর বরিশাল নগরীতে
বিএনপির সেই আধিপত্যে ভাটা পরে। বিশেষ করে মাঠের রাজনীতিতে। বিএনপি ভোটের
রাজনীতিতে কিছুটা ভারসাম্য বজায় রাখতে সক্ষম হলেও ২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারির পর থেকে
পাল্টে যায় এখানকার রাজনীতির গোটা চিত্রপট। এখানে সাংসদ কিংবা মেয়র সবক্ষেত্রেই
আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীর বিজয় সহজতর হয়ে ওঠে।
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল সদর আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন
প্রত্যাশী প্রার্থী হিসেবে আরিফিন মোল্লা বর্তমান সাংগঠনিক কর্মকান্ডে আপাদমস্তক
রাজনীতিবিদের কাতারে নিজেকে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। ফলে আরিফিনকে নিয়ে যখন
নগরীতে নানা আলোচনা চলছে ঠিক সেই মুহুর্তে নিজ দলের মধ্যকার দায়িত্বশীল নেতৃত্বের
একটি অংশ তার উত্থান প্রশ্ন তুলে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। আরিফিন মোল্লার শুভেচ্ছা
পোস্টার ও ব্যানার ছিড়ে ফেলাসহ তার উন্নয়ন কর্মকান্ডে নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হলে
আপনা-আপনি প্রকাশ পেয়ে যায় তার বিরুদ্ধে ঘরোয়া ষড়যন্ত্রের বিষয়টি।
নেতা হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে আবুল হাসানাত
আব্দুল্লাহকে প্রাধান্য দিয়ে আরিফিন মোল্লা বলেন, তার ওপরই নির্ভর করছে নির্বাচনে
অংশগ্রহণ করা না করার বিষয়টি। ঘরোয়া ষড়যন্ত্র যতোটাই বৃদ্ধি পাচ্ছে ফুরফুরে মেজাজে
থাকা আরিফিন মোল্লা এখন আরও বেশি উন্নয়ন কর্মকান্ডে জোর দিচ্ছেন। তার এই
অগ্রসরতার প্রেক্ষাপটে নিজ দলীয় অপর প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে একধরনের মনোস্তাত্ত্বিক লড়াই
শুরু হয়েছে। কে কার চেয়ে বেশি প্রচারণায় এগিয়ে থাকবে সে প্রতিযোগিতায় নানা কৌশল
প্রয়োগে প্রতিহিংসা চরিতার্থে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনায়
রাজনৈতিক মাঠ সরগরম হয়ে উঠেছে।
দলীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এ আসনের বর্তমান সাংসদ জেবুন্নেছা আফরোজের এবার
মনোনয়ন পাওয়া অনেকটাই অনিশ্চিত বলে কথা উঠেছে। তবে সংরক্ষিত মহিলা আসনে তাকে
প্রার্থী করা হতে পারে বলেও আভাস পাওয়া গেছে। ফলে দুই নবীন মনোনয়ন প্রত্যাশী
আরিফিন মোল্লা ও সালাহউদ্দিন রিপন উন্নয়ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে ব্যতিক্রমী প্রচারণা
চালিয়ে সাধারন ভোটার থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের
আলোচনার অগ্রভাবে রয়েছেন।
ষড়যন্ত্রে কান না দিয়ে আরিফিন মোল্লা শুধুমাত্র বিষয়টি জেলার দলীয় কান্ডারী মন্ত্রী
আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহকে অবহিত করেছেন। সকল বিরোধিতা টপকে মনোনয়ন প্রত্যাশী
আরিফিন মোল্লা এবারই প্রথম বরিশালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বার্ষিকী পালনে
স্মরণকালের সর্ববৃহত আয়োজন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
Leave a Reply