ববি ভিসি’র ক্ষমতা ! Latest Update News of Bangladesh

বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৩৬ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:
দুই সহযোগী অধ্যাপকের পুনর্বহালের দাবিতে শেবাচিম শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন যে কারণে বাবরের মুক্তি এখনই নয় ক্যানসার প্রতিরোধী টিকা তৈরি করেছে রাশিয়া, বিনামূল্যে বিতরণের ঘোষণা জিয়াউল আহসানের দুর্নীতির অনুসন্ধানে দুদক আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে ওসমানীর অনুপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক, যা বললো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশ্ব ইজতেমার মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহত ৪: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লাকুটিয়া খাল পরিস্কারের পরও জনদুর্ভোগ, উদাসীন সিটি কর্পোরেশন বরিশাল পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান, ২ দালাল আটক বরিশালে ট্রাকচাপায় মায়ের মৃত্যু, অক্ষত শিশু কন্যা অন্তর্বর্তী সরকারই তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে: অ্যাটর্নি জেনারেল




ববি ভিসি’র ক্ষমতা !

ববি ভিসি’র ক্ষমতা !




অনলাইন ডেস্ক// বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হকের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ একাধিক আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গত ৩ ও ৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের ৩ সদস্যের অডিট কমিটি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের সংশোধিত এবং ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের মূল বাজেট পরীক্ষা করে ১৮ টি আর্থিক অনিয়ম চিহ্নিত করে। এর মধ্যে ১০টি অনিয়মের সাথে ভিসি এবং ট্রেজারার সরাসরি সম্পৃক্ত বলে ওই অডিট রিপোর্ট বিশ্লেষনে দেখা যায়। ২০১১ সালের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। প্রফেসর ইমামুল হক বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় উপাচার্য।

২০১৬ সালের ২৭ মে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন তিনি। ইউজিসি’র অডিট দল যে ১৮টি অনিয়ম চিহ্নিত করেছে তার মধ্যে অন্যতম হলো নিয়ম অনুযায়ী কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ১ম বর্ষের ভর্তি ফরম বিক্রির মোট অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা করে সর্বোচ্চ ৬০ ভাগ টাকা ভর্তি সংক্রান্ত কাজে খরচের বিধান আছে। বাকী ৪০ ভাগ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিলে জমা রাখতে হবে। কিন্তু ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ¯স্নাতক ১ম বর্ষ ভর্তি ফরম বিক্রি বাবদ মোট আয়ের ৮২ ভাগ ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজে খরচ দেখানো হয়েছে। ওই বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফরম বিক্রি বাবদ মাত্র ১৮ ভাগ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা দেখানো হয়েছে। অডিট বিশ্লেষনে দেখা যায় ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ভর্তি ফরম বিক্রির অর্থ থেকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ দেখানো হয়েছে। ভর্তি সংক্রান্ত কাজ যেমন প্রশ্নপত্র প্রনয়ন, ছাপানো, পরিবহন, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পারিতোষিক এবং কেন্দ্র ফি বাবদ এত বিপুল পরিমান অর্থ খরচ হওয়া অস্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন ভর্তি সংক্রান্ত কাজে সম্পৃক্ত একজন শিক্ষক। তার দাবী, ইউজিসি’র নির্ধারন করে দেওয়া ৬০ ভাগ অর্থের মধ্যে সমুদয় খরচ করার পরও বিপুল অংক বেঁচে যায়। যা ভিসি, ট্রেজারার, ডিন সহ সংশ্লিস্টরা পরবর্র্তীতে ভাগাভাগি করেন।

সে ক্ষেত্রেও ইউজিসি’র নির্ধারন করে দেওয়া ৬০ ভাগের বেশী অর্থ খরচ দেখিয়ে ভিসি ও ট্রেজারার অন্তত ৫০ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ করেন ওই শিক্ষক। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরেও ভর্তি ফরম বিক্রির মাত্র ১৮ ভাগ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা রাখলেও ২০১৬-১৭ এবং ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ১ম বর্ষের ভর্তি ফরম বিক্রির সংখ্যা এবং সমূদয় অর্থের কোন হদিস ইউজিসি’র অডিট কমিটি পায়নি বলে তাদের রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসে সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের একটি শাখা রয়েছে। এরপরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সোনালী ব্যাংকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এরমধ্যে ঢাবি শাখা সোনালী ব্যাংকে ‘বেতন-ভাতা’ নামে হিসেব নম্বরে (০৪৪০৫৭৩৬০০০৩১৩) ২০১৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ১৪ হাজার ৫শ’ ৭৮টাকা এবং একই ব্যাংকে ‘ভর্তি ফরম’ বিক্রয় নামের হিসেব নম্বরে (০৪৪০৫৭৩৬০০০৩০৫) একই তারিখে জমা অর্থের পরিমান ছিলো ৫১ লাখ ১১ হাজার ৪শ’ ৩০টাকা। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সোনালী ব্যাংকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ব্যাংক হিসাব থাকার পরও ঢাবি শাখা সোনালী ব্যাংকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি ব্যাংক হিসাব নম্বর থাকা যুক্তিযুক্ত নয় বলে ওই অডিট প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।

উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক বরিশাল নগরীর রূপাতলী হাইজিংয়ে মাসিক ২০ হাজার টাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়া করা ফ্লাটে থাকেন। অথচ বেতন থেকে প্রতিমাসে বাড়ি ভাড়া বাবদ কর্তন করেন মাত্র ৩ হাজার টাকা। যদিও বেতন স্কেল অনুযায়ী প্রতি মাসে প্রায় ৩২ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ভাতা পেয়ে থাকেন উপাচার্য। এখানেই শেষ নয়, ড. ইমামুল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্র্রহনের পরও ৬ মাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসা তার দখলে রাখেন। ওই বাসার ভাড়া প্রতিমাসে ৪০ হাজার টাকা হলেও তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহনের কারনে তাকে দ্বিগুন ভাড়া অর্থাৎ ৮০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হয়। যা পরিশোধ করা হয় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে। এতে ৬ মাসে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা আর্থিক ক্ষতি হয় বলে অডিট প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসা ছেড়ে দেওয়ার পরও বরিশাল নগরীর রূপাতলীতে উপাচার্যের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মাসিক ভাড়া ২০ হাজার টাকায় বাসা ভাড়া করলেও উপাচার্য বাসা ভাড়া বাবদ প্রতিমাসে কর্তন করছেন মাত্র ৩ হাজার টাকা। এ ক্ষেত্রেও ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে গত প্রায় ২ বছরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৪ লাখ ৮ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

একইভাবে ট্রেজারার প্রফেসর ড. একেএম মাহবুব হাসানও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়া করা বাসায় থাকেন। তিনিও বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে বাড়ি ভাড়া বাবদ প্রতিমাসে কর্তন করেন মাত্র ৩ হাজার টাকা। এরপরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারের ভাড়া বাবদ প্রতিমাসে প্রায় ২৫ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয় বরিশাল বিশ্ব¦বিদ্যালয়ের তহবিল থেকে। যা আর্থিক বিধির পরিপন্থী বলে অডিট প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। গত প্রায় ৩ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসা ভাড়া পরিশোধ বাবদ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৮ লাখ টাকা। ভিসি তার দপ্তরে আপ্যায়ন ব্যয় বাবদ প্রতিমাসে ২৫ হাজার টাকা খরচ করছেন। গত ২ বছরের অধিক সময়ে আপ্যায়ন বাবদ ভিসি মোট ১০ লাখ টাকার বেশী অতিরিক্ত ব্যয় করেছেন। যা বিধি বর্হিভূত বলে বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধুমাত্র ভিসি’র দপ্তরে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাসিক মূল বেতনের ১০ ভাগ হারে অতিরিক্ত অধিকাল (ওভারটাইম) ভাতা প্রদান করা হয়।

যা আর্থিক বিধির পরিপন্থী বলে অডিট প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে। এদিকে শুধুমাত্র ভিসির দপ্তরে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অধিকাল ভাতা দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য দপ্তরে নিয়োজিত-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃস্টি হয়েছে। অডিট প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিধি বর্হিভূতভাবে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেনীর বিভিন্ন পদের বিপরীতে দৈনিক সাড়ে ৪শ’ টাকা মজুরীতে ৪৪ জন কর্মচারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। শুধু এই ৪৪জনই নয়, এরপরও বিভিন্ন সময় আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে রেজিস্ট্রারের যোগসাজসে ভিসি বহু কর্মচারী নিয়োগ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন একজন শিক্ষক নেতা। ভিসি, ট্রেজারার এবং রেজিস্ট্রার সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগন দাপ্তরিক প্রয়োজনে বিভিন্ন স্থানে ভ্রমন করে টিএ-ডিএ বিল উত্তোলন করেন। কিন্তু ওই বিলের সাথে কোন নোট (অফিস আদেশ) সংযুক্ত করা হয় না। যা আর্ধিক বিধির পরিপন্থী বলে অডিট প্রতিবেদনে বলা হয়।

প্রফেসর ইমামুল হক মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য। এ কারনে নিয়োগ সহ বিভিন্ন কাজে বিভিন্ন সময়ে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের সভায় অংশগ্রহন করেন তিনি। রিজেন্ট বোর্ডের সভায় অংশগ্রহন করার সুবাদে প্রফেসর ইমামুল হক মাওলানা ভাষানী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে টিএ-ডিএ সহ যথাযথ সন্মানী পেয়ে থাকেন। কিন্তু তারপরও তিনি মাওলানা ভাষানী বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া বাবদ বিধি বর্হিভূতভাবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবলি থেকে অতিরিক্ত টিএ-ডিএ নিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও অডিট প্রতিবেদনে আরও কিছু আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ করেন ইউজিসি’র অডিট কমিটি। ইউজিসি অডিট দলের ১৮টি আর্থিক অনিয়ম চিহ্নিত করার বিষয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক বলেন, ইউজিসি’র অডিট টিমের যেসব বিষয়ে আপত্তি রয়েছে, তার প্রত্যেকটির সু-ষ্পস্ট জবাব দেওয়া হয়েছে।

২০১৬-১৭ এবং ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ভর্তি ফরম বিক্রির সংখ্যা এবং মোট টাকার বিষয়ে ইউজিসি’র অডিট দল কোন হিসেব না পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, ওই দলের প্রধান (ইউজিসি’র অর্থ ও হিসাব বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. রেজাউল করিম হাওলাদার) জামায়াতের লোক। তাই তিনি তাকে (উপাচার্য) বিপদে ফেলার জন্যই এসব অডিট আপত্তি দিয়েছেন। তিনি সবগুলো আপত্তির জবাব দিয়েছেন। ইউজিসি’র অর্থ ও হিসাব বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. রেজাউল করিম হাওলাদার মুঠোফোনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি অডিট আপত্তির বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অভিযোগ আপনি (রেজাউল করিম হাওলাদার) জামায়াতের লোক হওয়ায় তাকে (উপাচার্য) বেকায়দায় ফেলার জন্যই এই অডিট আপত্তি দিয়েছেন- এর জবাবে তিনি বলেন, আমি জামায়াতের লোক নাকি আওয়ামী লীগের লোক তা ইউজিসি কর্তৃপক্ষ ভালোভাবেই জানেন। এ বিষয়ে তার কিছুই বলার নেই।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD