রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪১ পূর্বাহ্ন
বাবু সুমন চন্দ্রশীল :দক্ষিণ চরদুয়ানী নেগাবানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এক অজপাড়াগায়ে বিদ্যালয়টি জরাজীর্ণ। জরাজীর্ণ না বললেও ভুল হবেনা। এ ভবনটি সম্পুর্ণ ব্যবহারের অনুপযোগি বললেও ভুল হবেনা। উপর-নিচসহ চারদিক থেকে পলেস্তাতার খসে পড়ছে। বারান্দার খুটি দেখলে মনেই হবেনা এটি কোন বিদ্যালয়ের বিল্ডিং এর খা¤¦া। জানালা ও দরজারও করুণ অবস্থা। বিদ্যালয়ের একটি কক্ষের ছাদ দুই বছর আগে ভেঙ্গ পড়লে সেখানে এখন টিনের ছাদ।
এ যেন দেখার কেউ নেই। সম্প্রতি স্লীপের টাকা দিয়ে ছাদের চুনকাম করে ফাটলগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ জ্ঞানপাড়া নেগাবানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় ১৯৫৯ সালে। ১৯৯০ সালে এ ভবনটি নির্মাণ হয়। বছর দুয়েক আগে এই ভবনের একটি ক্লাস রুমের সম্পুর্ণ ছাদ ভেঙ্গে গেলেও কোন হতাহত হয়নি তখন। সেই সময় ওই কক্ষে ছাদের বিকল্প টিন দিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে।
পাথরঘাটা উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পাথরঘাটা উপজেলায় মোট ১৪৯ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৭৪টি বিদ্যালয় ঝূঁকিপুর্ণ। কয়েকদিন আগে ঝূকিপুর্র বিদ্যালয়ের তালিকা মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। ১০টি রয়েছে পরিত্যাক্ত। ঝূকিপুর্ণ বিদ্যালয়গুলোতে পলেস্তারা খসে পড়ছে, ফাটল দেখা দিয়েছে অধিকাংশ বিদ্যালয়ের ভবনে, বৃষ্টির মৌসুমে ছাদ চুইয়ে পানি পড়ছে অনেক বিদ্যালয়ে।
সরেজমিন গিয়ে ওই বিদ্যালয় গিয়ে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহফুজা আক্তার ও নদী আক্তারের সাথে কথা হলে তারা বলেন, প্রতিদিনই বিদ্যালয় আসি। ক্লাস চলাকালীন ভয়ে থাকি। সব সময় ডর লাগে, কোন সময় মাথায় পড়ে ছাদ। মাঝে মধ্যে ক্লাসের মধ্যেই ইট পড়ে। তারপরেও ক্লাস করি। বৃষ্টির দিনে বেশি ভয় লাগে। বাতাস হলে এই বুঝি বিল্ডিং ভেঙ্গে মাথায় পড়বে।
ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. ইসা মৃধা বলেন, আমরা সব সময়ই ঝুঁকিতে থাকি। বিশেষ করে কচিকাচা শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয় বেশি। দ্রুত নতুন ভবন না দেয়া হলে তালতলীর মত যে কোন সময় বড় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে দ্রুত ভবনের দাবি জানান তিনি। নেগাবানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাধিক অভিভাবক জানান, বিদ্যালয় ভবনের অবস্থা দেখে বাচ্চাদের পাঠাতে ভয় হচ্ছে।
তারপরেও পাঠাতে হয়। তারা সব সময়ই দুশ্চিন্তায় থাকে।বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইউসুফ নেগাবান বলেন, ২ বছর আগে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষের ছাদ সম্পুর্ণ ভেঙ্গে যায়, ভাগ্যক্রমে কোন হতাহত হয়নি। সেই সময়ই বিদ্যালয় ভবনের জন্য চাহিদা দেয়া হয়েছিল।
বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে ভবনের বাহ্যিক দিক বিবেচনা করে বিদ্যালয়গুলোকে ঝূঁকিপুর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে পাথরঘাটাসহ বরগুনার ৬টি উপলোর ঝূকিপুর্ক বিদ্যালয়ের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। তালিকা মন্ত্রনালয়ে পাঠানোর পরে মন্ত্রনালয় থেকে পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
Leave a Reply