শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৯ পূর্বাহ্ন
সৈয়দ বাবু ॥ বিসিসি নির্বাচনে প্রশাসনের তোরজোর থাকলেও ঢাকা-বরিশাল নিরবছিন্ন প্রায় ১০ ঘন্টার লঞ্চ যাত্রায় রয়েগেছে নজরদারীর বাহিরে। বিভিন্ন প্রার্থী ও জনসাধারনের আশংকা কোন চেকপোষ্ট না থাকার কারনে নিরাপদে এ রুটের মাধ্যমে বরিশালে ঢুকতে পারে অবৈধ অস্ত্র ও মাদক।
অনুসন্ধানে জানগেছে, বরিশাল থেকে ঢাকা ও ঢাকা থেকে বরিশাল প্রতিদিন প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার লোক যাওয়া আসা করে লঞ্চযোগে। প্রায় ১০ঘন্টার এ যাত্রা পথে কোন ধরনের বিরতি বা চেক পোষ্ট নেই। এমনকি সকাল বেলা লঞ্চ থেকে নামার সময় এবং রাতের বেলা লঞ্চে ওঠার সময়ে যাত্রীদের কোন ধরনের চেক করা হয় না। প্রতিটি লঞ্চে ৮শ’ থেকে ১হাজার যাত্রী থাকেন। ঢাকা বরিশাল লঞ্চে ইতো মধ্যে নানা ধরনের অপরাদ সংগঠিত হয়েছে। এমনকি হত্যা কান্ডর মতো ঘটানাও ঘটেছে একধিকবার।
উদ্ধার হয়েছে মাদক। এসব ধরনের ঘটনার পরে কায়েক দিন প্রশাসনের নজরদারী বারানো হলেও কিছু দিন পরে আর থাকেনা। যারা ফলে এ যাত্রা পথের অপরাদগুলো বেশিরভাগ সময় রয়ে যায় ধরা ছোয়ার বাইরে। অথবা কোন নিরাপরাদ লোক ফেসে যান আইনের মারপ্যাচে। এতো সব ঘটানার পরেও কি কারনে বরিশাল ঢাকা লঞ্চ যাত্রায় প্রশাসনের নজরদারী বাড়ানো হ”েছনা তার কোন সঠিক জবাব নেই কারো কাছে।
গতাকাল বরিশাল থেকে সুন্দরবন লঞ্চে ঢাকা যা”েছন রুপাতলী এলাকার আমির হোসেন নামে এক যাত্রী। তার কাছে লঞ্চের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রায় ১হাজার যাত্রি নিয়ে লঞ্চটি যাত্রা করবে ঢাকার উদ্দেস্যে। কোন যাত্রীকেউ চেক করে লঞ্চে উঠানো হয় নাই। আর লঞ্চে নিরাপত্তার দ্বায়ীত্বে থাকেন হাতে গোনা কয়েকজন আনসার। কোন সময় যদি ডাকাত বাহিনি আমাদের আক্রমন করে তাবে আর কোন উপায় থাকবে না। এসময়ে তিনি আরো কয়েক যাত্রী বলেন, এখন নির্বাচানের সময় লঞ্চে অনেক ধরনের অবৈধ অস্ত্র নিরাপদে আসতে পারে বরিশালে। তাই এখন প্রশাসনের উচিৎ লঞ্চের যাত্রীদের চেক করে উঠানো। এ বিষয়ে বরিশালের সিটি নির্বাচনে অশংগ্রহনকারী সাবেক কাউন্সিলড় জয়নাল আবেদিন বলেন, লঞ্চ ঘাট আমার নির্বাচনী এলাকা। লঞ্চে প্রতিদিন অনেক লোক আসা যাওযা করেন। তাদের নিরাপত্তার প্রয়োজন অপরিশিম। সামনে নির্বাচন এখন অনেক ধরনের অবৈধ অস্ত্র আসতে পরে লঞ্চ যোগে।
তাই লঞ্চ ঘাটে চোক পোষ্ট করা অত্যান্ত জরুরী। এ বিষয়ে বরিশাল নৌ পুলিশ এর অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বেল্লাল হোসেন বলেন, আমাদের এখান থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩হাজার যাত্রী আসা যাওয়া করেন। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টা আরো জোদ্দার করা দরকার। সুনিদৃষ্ট তথ্য থাকলে আমরা চেক পোষ্ট পরিচালনা করি। তবে আমাদের জনবল সংকট থাকার কারনে সব সময় চেক পোষ্ট পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। বর্তমানে নির্বাচনের সময় এখন এ পথে অবৈধ অস্ত্র আসতেই পারে। নির্বচনের সময় যাত্রীদের তল্লাসী করতে পারলে ভালো হতো। এ ছাড়াও আমদের নৌ পুলিশে কোন নারী সদস্য নেই যার কারনে মাহিলা যাত্রীদের তল্লাশী করা যায় না। এর ফলে অপরাদীরা অনেক সময় পার পেয়ে যায়। এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই সত্যরঞ্জন খাসকেল বলেন, নির্বচনকে সামনে রেখে আমাদের পুলিশ সদস্যরা নির্ঘুম ভাবে তৎপর রয়েছে। লঞ্চে প্রতিদিন যে পরিমান যাত্রী আসা যাওয়া করে তাদের চেক করা অকি জরুরী। বর্তমানে নির্বাচনী সময় এসময়ে লঞ্চে অবৈধ অস্ত্র মাদক বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্ত্রাসীরা আসতে পারে। লঞ্চ ঘাটে চেক পোস্ট বসানো বিষয়ে আমরা উপর মহলে কথা বলবো। বিষয়টা অত্যান্ত জরুরী। এ বিষয়ে বরিশাল আধুনিক নৌবন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের সব থেকে বড় যত্রাপথ হ”েছ ঢাকা বরিশাল নৌরুট। সব থেকে বেশি মানুশের সমাগম ঘটে এখানে। সেই তুলনাই আমাদের এখানে প্রশাসনের নজরদারী অনেক কম। এমনকি বিভিন্ন লঞ্চ মালিকরা নিজেদের ক্ষমতা বলে টাকা বাচানো জন্য লঞ্চে আনসারও রাখেন না।
কিš‘ নিয়মে রয়েছে আনসাররা যাত্রীদের ব্যাগ তল্লাসী করে যাত্রীদের লঞ্চে উঠবেন। নৌরুটের নিরাপত্তা নিয়ে আমরাও চিন্তিত। এ বিষয়ে বরিশাল চেম্বার ও কামার্সের সভাপতি ও বরিশাল লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম শিল্প হ”েছ বরিশাল ঢাকা লঞ্চ শিল্প। এখান থেকে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার হাজার লোক আসা যাওয়া করেন। আমাদের এখানে যে পরিমান পুলিশ সদস্য দরকার তার অর্ধেকও নেই। এখন নির্বাচনের সময়। এখন প্রশাসনের উচিৎ তাদের তৎপরাতা আরো অনেক বৃদ্ধি করা। প্রতিটি লঞ্চে আনসার আছে কিনা তা নিশ্চিত করা।
Leave a Reply