রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৬ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক:হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের চিহ্নিত অনেক মাদক কারবারিও রয়েছেন। আবার এ তালিকার কেউ কেউ স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গেও জড়িত। বেশ কয়েকজন ‘রুই-কাতলা’ আছেন তালিকায়। গোয়েন্দা প্রতিবেদনের তথ্যে অর্থ পাচারকারীদের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলার আছেন ১১ জন। চট্টগ্রাম মহানগর এলাকার রয়েছেন ৪৫ জন। হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচারকারীদের তালিকায় রয়েছেন কক্সবাজারের সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির নামও। এরই মধ্যে এ তালিকার সূত্র ধরে গোয়েন্দারা জড়িতদের ব্যাপারে আরও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছেন। সংশ্নিষ্ট একাধিক সূত্র থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
তালিকায় চট্টগ্রামের যারা :চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মো. সুমন, আলতাফ হোসেন, জিয়াউল হক, এম এ রহিম, স্বপন দাশগুপ্ত, জমির উদ্দিন পারভেজ, সুধীর পালিত, সাধন পালিত, সাধন ধর, গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, আবুল ফয়েজ, যোবাইর ওরফে রেজওয়ান, মো. ইসমাইল, সাইফুল, আনোয়ার, আইয়ুব, অসীম ঘোষ, সুধীর বসুন বণিক, অসীম, রবি, দোলন হাজারী, জাফর ওরফে টিটি জাফর, মনিরুজ্জামান, খোরশেদ আলম, আব্দুল কাদির, জিয়াবুল, মো. আয়াছ, মো. আমিন, আবছার মিয়া, নূর কামাল, মোহাম্মদ ওসমান, মোজাম্মেল হোসেন, আইয়ুব, সঞ্জিত, জাহাঙ্গীর, ইব্রাহীম, আব্দুল কাদের, আবু জাফর, নূর উদ্দিন ইসলাম, আতিকুল ইসলাম হাবিব, মো. ইছা, প্রদীপ, মান্নান, মো. রাশেদ, আহমেদ কবির দুলাল, মো. সাইফুল, মোজাম্মেল হোসেন, আফসার মিয়া, রতন বড়ূয়া, ইউনুস, আবু আহমেদ, ফয়েজ, সরোয়ার, আইয়ুব, নুরুল কবির ও দিদারুল হক।
কুমিল্লা : তালিকায় রয়েছেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের দৈয়ারা এলাকার পিয়ার আহম্মেদ পাশা, জামাল হোসেন, ইউনুস মিয়া, আলমগীর হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, ইদ্রিছ মিয়া, আনোয়ার হোসেন, শাহ আলম, মামুন, কফিল উদ্দিন, জাকির হোসেন, মো. সোহেল, বিবেক চন্দ্র সাহা, মো. জসীম ও শাহজাহান তালুকদার।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া :মো. শাহিন ভুইয়া, জামাল উদ্দিন, সফিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, রতন দাশ, মিন্টু মিয়া, মুসা মিয়া, দারু মিয়া, তোতা মিয়া, শফিক ঠাকুর, গৌরাঙ্গ চন্দ্র পাল, ফারুক মিয়া, পেয়ারুল মিয়া, তপন কুমার, জামাল উদ্দিন, সফিকুল ইসলাম, পিরন সরকার, শানু মিয়া ও হাফেজ।
চাঁদপুর :চাঁদপুর সদরের দীপু সাহা, সুভাষ চন্দ্র রায়, আবু ইউসুফ, মো. মানিক, খসরু ঢালী, বনি আমিন ও মো. হারুন।
নোয়াখালী :নোয়াখালীর সেনবাগের সেলিম উদ্দিন, বেলায়েত হোসেন, নাজেম উদ্দিন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মৃদুল সাহা, মদন বণিক, আতাউর রহমান রনি, নজির আহম্মেদ, আহম্মেদ নজির, নকুল কুমার, ফারুক, শহীদুল্লাহ বাবু ও মন্টু সাহা।
ফেনী :ফেনীর পরশুরামের শহিদুল ইসলাম কাজল, বাহার, আব্দুল কাদের, আনোয়ার উল্লাহ, কামাল পাশা, মো. হান্নান ও সোহাগ।
লক্ষ্মীপুর :মো. ইসমাইল, জসিম উদ্দিন, এমরান হোসেন টিপু, রাসেল চৌধুরী, মাসুম হোসেন, শিবুলাল সাহা, মো. ওসমান, মো. মাছুম, আলমগীর, মো. সেলিম, হিরন মিয়া, মনিরুল ইসলাম, লিটন, হারুনুর রশিদ, দাউদ হোসেন মিরন, নাঈম, আব্দুল ওয়াদুদ, আবু সাঈদ, আবুল কাশেম জমাদ্দার, আব্দুল কুদ্দুস, কৃষ্ণ দেবনাথ, বঙ্গরাজ ট্রাভেল এজেন্সি, মো. সাইফ, দিলীপ সাহা, বলরাম অ্যান্ড ব্রাদার্স, সুব্রত সাহা, মো. হোসেন, মো. সফিক, মো. শাহীন, মো. দুলাল, আবুল কাশেম, মো. হাসান, তানিয়া এন্টারপ্রাইজ ও অহনা টেলিকম।
কক্সবাজার জেলা :হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের তালিকায় রয়েছেন কক্সবাজার-৪ আসনের সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদি, মো. মনিরুজ্জামান লেডু, গফুর, মোজাম্মেল হক, মো. ইসমাইল, আজিজুল হক, আইয়ুব ওরফে বাট্টা আইয়ুব, আব্দুস সত্তার, ইসমাঈল, আব্দুল জলিল, মৌলভী আমান, উসমান, মো. ইসহাক, লোকমান কবির, নুরুস সামাদ লালু, মোস্তাক আহমেদ, সবুজ ধর, আব্দুল কাদের, আব্দুর রশিদ, হাছন আলী, ইদ্রিস মিয়া, মীর কামরুজ্জামান, বদি আলম, আবু বক্কর মাসুদ, বিমল ধর, জিয়াউর রহমান, মো. ইউনুস, হোসেন আহমদ, ইয়াছিন, আব্দুল মতিন ডালিম, মারুফ বিন খলিল, ফরিদ উল্লাহ, শামসুল আল, মো. হোসেন, দেলোয়ার, নুরুল আলম, নুরুল হক ভুট্টু, আব্দুর রহমান, ইয়াকুব, হোসেন, বশর, নাসির উদ্দিন, মো. তারেক, তৈয়ব আজিজ, শাহাদাত হোসেন, দেলোয়ার হোসেন ও মো. শফিক।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে টেকনাফের জাফর আলম সম্পর্কে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ-মিয়ানমারভিত্তিক আমদানি-রফতানির আড়ালে তিনি বর্তমানে চট্টগ্রামের রিয়াজ উদ্দিন বাজার, খাতুনগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকাকেন্দ্রিক হুন্ডি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন। তিনি বিদেশে অর্থ পাচার করে দিনে ৮-১০ লাখ টাকা আয় করেন। এ ছাড়াও জাফর ইয়াবা ও স্বর্ণ চোরাচালান করে কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে উপার্জন করেছেন। তার রিয়াজ উদ্দিন বাজারে ৩৫ কোটি টাকার একটি মার্কেট, চট্টগ্রাম শহরের আইস ফ্যাক্টরি রোডে দুটি ফ্ল্যাট, টেকনাফে একটি মার্কেটসহ কোটি কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।
হুন্ডির সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠান জড়িত :হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচারে জড়িতদের মধ্যে আছে টেকনাফের সরওয়ার্দী মোবাইল পয়েন্ট, জাহাঙ্গীর ইলেকট্রিক, কাউছার এন্টারপ্রাইজ, হেলাল টেলিকম সেন্টার, দিবিরানী এন্টারপ্রাইজ, মোবাইল হেভেন-২, নাফ মোবাইল সফটওয়্যার ও আফসার ডিপার্টমেন্টাল স্টোর।
বরিশাল বিভাগে শীর্ষ হুন্ডি ব্যবসায়ী যারা :বরিশাল বিভাগের মধ্যে ভোলা জেলায় সর্বোচ্চ ৪৩ জন হুন্ডি ব্যবসায়ী রয়েছেন। এর মধ্যে ৮ জনকে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা পাচারের সিন্ডিকেট প্রধান বা মূলহোতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে গোয়েন্দারা। এ ছাড়া পিরোজপুর জেলার ১১ জন ও ঝালকাঠি জেলায় ৬ জন শীর্ষ হুন্ডি ব্যবসায়ীর নাম উঠে এসেছে। ভোলার ৪৩ জন হুন্ডি ব্যবসায়ীর মধ্যে সুধীর চন্দ্র দত্ত, উত্তম সেন, রতন পোদ্দার, বাবুল চন্দ্র পোদ্দার, উত্তম কুমার দে, শ্যাম কুন্ডু, দশরত কর্মকার, শুভঙ্কর কর্মকার, সুধারাম চন্দ্র দাস, রাম চন্দ্র দাস, উপেন্দ্র চন্দ্র কর্মকার, ভাস্কর সাহা, শম্ভু কর্মকার, অরূপ কর্মকার, রনজিত পোদ্দার, রাজীব হালদার, বাবুলাল কর্মকার, গৌতম কর্মকার, গোপাল কর্মকার, নিলয় কর্মকার, অজিত কর্মকার, সাধন চন্দ্র বণিক, রিপন বাবু, কার্তিক চন্দ্র দাস, ভোলানাথ কর্মকার, অভিমন্যু কর্মকার, মনোরঞ্জন চন্দ্র, পরিমল পাল, কালীপদ রায়, লিটন চন্দ্র বণিক, তাপস চন্দ্র বিশ্বাস, নারায়ণ চন্দ্র দাস, বিক্রম রায় কর্মকার, বাবুল সাহা ওরফে রুটি বাবুল।
ভোলা জেলায় হুন্ডির মূলহোতা ৮ জন হলেন- অসীম সাহা, অরবিন্দ দে, মনা চন্দ্র মন্ডল, অবিনাশ নন্দী, মিন্টু লাল দে, রতন চন্দ্র পোদ্দার, শ্যামল চন্দ্র মন্ডল এবং বিক্রম চন্দ্র মন্ডল।
পিরোজপুরের ১১ জন হুন্ডি ব্যবসায়ীর মধ্যে শংকর কুমার দেবনাথ, অমল বণিক, সুভাষ দে, শংকর পাল, পঙ্কজ হালদার, রিপন হালদার, সজীব মন্ডল গোপাল, নিকুঞ্জ কর্মকার, বিমল কর্মকার, সতীন্দ্রনাথ মজুমদার এবং সুশীল কুমার মন্ডল।
ঝালকাঠি জেলার ৬ হুন্ডি ব্যবসায়ী হলেন- গোপাল চন্দ্র ঘোষ, রতন আচার্য, লিটন দেবনাথ, অরুণ কর্মকার, গৌতম কর্মকার এবং মাওলানা জামাল হোসেন। বরিশাল বিভাগের বেশির ভাগ হুন্ডি ব্যবসায়ী জুয়েলারি ব্যবসা, বস্ত্র ব্যবসা ও ওষুধ ব্যবসার আড়ালে বিদেশে টাকা পাচার করে আসছেন বলে গোয়েন্দা তালিকায় নাম উঠে এসেছে।
Leave a Reply