সাফল্যের শিখরে, চ্যালেঞ্জের পাহাড়ে : আওয়ামী লীগের ৭০ বছর Latest Update News of Bangladesh

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৪:৩৬ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




সাফল্যের শিখরে, চ্যালেঞ্জের পাহাড়ে : আওয়ামী লীগের ৭০ বছর

সাফল্যের শিখরে, চ্যালেঞ্জের পাহাড়ে : আওয়ামী লীগের ৭০ বছর




অনলাইন ডেস্ক: রোজ গার্ডেন থেকে গণভবন। অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি, শোষণমুক্ত সমাজ বিনির্মাণের উদ্দেশ্যে ৮৫ হাজার গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ‘নৌকা’ প্রতীক নিয়ে সুদীর্ঘ ৭০ বছরের পথচলা। চড়াই-উৎরাইয়ের দীর্ঘ পথপরিক্রমায় মিশে আছে সংগ্রাম, ইতিহাস, ঐতিহ্য আর আকাশছোঁয়া সাফল্যের গৌরবগাঁথা। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ঐতিহাসিক ছয় দফা থেকে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা লাভ- সবই অর্জিত হয়েছে উপমহাদেশের প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে।

স্বাধীনতা উত্তর জাতিকে মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়েছেন বঙ্গবন্ধু আর বর্তমানে বঙ্গবন্ধু কন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জাতিকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন উন্নত, সমৃদ্ধ ও মর্যাদাশীল বাংলাদেশের। সদ্য মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া বাংলাদেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত করে এসডিজি অর্জন এবং রূপকল্প-২০৪১ অর্জনের পাহাড়সম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি আওয়ামী লীগ। রয়েছে দুর্নীতি, মাদক, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের মতো ঝুঁকি। তবে ইতিহাসবিদ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে, অতীতে ভয়ঙ্কর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে লক্ষ্যে পৌঁছেছে আওয়ামী লীগ। আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেও স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার অঙ্গীকার পূরণ করবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতেগড়া দল আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন তারা।

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরান ঢাকার টিকাটুলির কেএম দাস লেনের রোজ গার্ডেন প্যালেসে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ।’ পলাশীর আ¤্রকাননে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হওয়ার প্রায় দুইশ বছর পর প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের স্বাধীনতার নেতৃত্ব দেয়া দলটির প্রথম সভাপতি ছিলেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক এবং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৫৫ সালের কাউন্সিলে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’ নামকরণ করা হয়। আওয়ামী লীগের প্রধান বৈশিষ্ট্য অসাম্প্রদায়িকতা মন্তব্য করে ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন ভোরের কাগজকে বলেন, দলের নাম আওয়ামী মুসলিম লীগ থাকাকালেও বঙ্গবন্ধু দাঙ্গারোধে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। জন্মলগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগ জনগণের পক্ষে সোচ্চার।

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে ৬২’র শিক্ষানীতি, ৬৬’র ছয় দফা থেকে মহান একাত্তরে নেতৃত্বে ছিল আওয়ামী লীগ। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জনগণের বিপুল ম্যান্ডেট পায় আওয়ামী লীগ। এই নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণ জানিয়ে দেন আওয়ামী লীগ মানেই বাংলার জনগণের দল। আর এজন্য একাত্তরে বিশ^ বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন জানায়। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার জন্য স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু ধর্মীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ করেন।

জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিতের জন্য অত্যন্ত সুলিখিত সংবিধান প্রণয়ন করেছেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ, আওয়ামী লীগ মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে বাঙালির হৃদয়ে। তিনি বলেন, প্রতিক্রিয়াশীল চক্র বারবার আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে চেয়েছে; কিন্তু আওয়ামী লীগ স্বমহিমায় জেগে ওঠেছে। বঙ্গবন্ধু জাতিকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন স্বাধীনতার। আর বঙ্গবন্ধু কন্যা জাতিকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন উন্নত বাংলাদেশ গড়ার। এতে চ্যালেঞ্জ থাকবে। ষড়যন্ত্র থাকবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ অতীতের মতোই দৃঢ়ভাবে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এগিয়ে যাবে।

স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় ঐক্যের রূপকার আওয়ামী লীগ বাঙালি জাতির স্বতন্ত্র রাষ্ট্র ও আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠার ঐতিহ্যের প্রতীক। স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বঙ্গবন্ধুর সরকার যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক মুক্তির পথে এগিয়ে নিতে ব্যস্ত, তখনই স্বাধীনতাবিরোধী চক্র আন্তর্জাতিক শক্তির সহায়তায় ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে। এ ব্যাপারে ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশ অন্ধকারের পথে যাত্রা শুরু করে।

পাকিস্তানি সাম্প্রদায়িক ধারায় ফিরিয়ে আনার অপচেষ্টা শুরু হয়। বঙ্গবন্ধুর নাম নিষিদ্ধ হয়ে যায়। বন্দুকের ডগায় চলে ইতিহাসবিকৃতির চর্চা। আওয়ামী লীগ তখন রাজনৈতিক নির্বাসনে। আবদুর রাজ্জাকরা তখন মরিয়া হয়ে আওয়ামী লীগকে ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। এরআগে তার অনুপস্থিতিতে তাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।

সেই থেকে হাল ধরে আছেন তিনি। স্বৈরশাসক এরশাদের আমলে প্রথম নির্বাচনে অংশ নেয় আওয়ামী লীগ। তিনি বলেন, রাজনীতি মানেই চড়াই-উৎরাই। তবে দলের জন্য, দেশের জন্য আওয়ামী লীগের মতো এত মূল্য, এত ত্যাগ, এত রক্ত আর কোনো দলকে দিতে হয়নি।

বঙ্গবন্ধু দেশ গড়ার জন্য মাত্র সাড়ে ৩ বছর সময় পেয়েছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রকাঠামোর ভিত্তি দাঁড়িয়ে আছে ওই সাড়ে ৩ বছরেই- বললেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ। তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে কথায় কথায় বিশ^ যে বাংলাদেশের উদাহরণ দেয়, তার ভিত্তি গড়েছেন বঙ্গবন্ধুই। ৪৮ বছরের বাংলাদেশের মূল কাঠামো তৈরি করেছেন বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছরে। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত ধ্বংসস্ত‚পে পরিণত দেশকে দেশি-বিদেশি হাজারো প্রতিক‚লতা মোকাবেলা করে সোনার বাংলা গড়ার নকশা করেছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই সমুদ্রসীমা চুক্তি, গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি, সীমানা চুক্তি, যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু, ৪০টি দেশের স্বীকৃতি, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ লাভ করেছে বাংলাদেশ।

ইতিহাসবিদ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে, আওয়ামী লীগের ইতিহাস, বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল অর্জন ও সংগ্রামের ইতিহাস। সাত দশকের লড়াই-সংগ্রামের অভিযাত্রায় আওয়ামী লীগ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তির অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে ভিশন-২০২১ এবং ২০৪১ প্ল্যানের মাধ্যমে জাতিকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে উন্নত রাষ্ট্রের গর্বিত নাগরিক হওয়ার। আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আওয়ামী লীগ কতটা সক্ষম- এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, আমাদের বড় সমস্যা দুর্নীতি এবং মুষ্টিমেয় মানুষের পকেটভারী হওয়া। উন্নয়ন যেন শুধু উপর তলার মানুষের পকেটে না ঢুকে প্রান্তিক মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছায়, দুর্নীতিবাজদের কব্জাবন্দি না হয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ মৌলিক অধিকারগুলোর টেকসই উন্নয়ন হয়- এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আওয়ামী লীগকে আরো মনোযোগী হতে হবে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক ভোরের কাগজকে বলেন, জন্মলগ্ন থেকেই জনগণের দল হিসেবে জনগণের জন্য কাজ করছে আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়েছেন, সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। আজ সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ক্ষুধা-দারিদ্র্য-সন্ত্রাস-মাদকমুক্ত উন্নত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার রূপরেখা দিয়েছেন। উন্নয়নের মহাসড়কে দেশ।

এখন স্বপ্ন সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের। এর ভিত্তি ইতোমধ্যেই আমরা তৈরি করেছি। কৃষিমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, কৃষি- সর্বত্র অভূতপূর্ব বিপ্লব ঘটেছে। মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে রেকর্ড, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধি, ক‚টনৈতিক সাফল্য, মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার সাফল্য অর্জন হয়েছে শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বের কারণেই। সরকারের সামনে চ্যালেঞ্জগুলো কি কি- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশে শিক্ষার হার বাড়ছে। ফলে বাড়ছে বেকারত্ব। খাদ্যনিরাপত্তা এবং পুষ্টিমান বাড়ানো এখন চ্যালেঞ্জ। শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং দক্ষ জনশক্তিতে আমরা এখনো পিছিয়ে রয়েছি। তবে সরকার কাজ করছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সম্ভব।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD