শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৫ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে বছরে গড়ে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার পুঁজি পাচার হয়েছে বলে দাবি করেছে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) প্রকাশিত খসড়া প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। কমিটি সরকারি নথি, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি এবং বৈশ্বিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে অর্থ পাচারের চিত্র তুলে ধরেছে।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির মতে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে অর্থ পাচারের মাত্রা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। যদিও প্রকৃত পরিমাণ নির্ধারণের সময় স্বল্পতা ছিল, প্রতিবেদনটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।
কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, কীভাবে অর্থ পাচার ঘটে এবং তা বন্ধে করণীয় বিষয়গুলো প্রতিবেদনটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আগামী রোববার (১ ডিসেম্বর) এই প্রতিবেদন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং সোমবার জনসাধারণের জন্য প্রকাশ করা হবে।
প্রতিবেদনটিতে পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগ, কানাডার আদালতের পর্যবেক্ষণ এবং নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের বিষয়ে বিশদ তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এছাড়া, বাংলাদেশে চলমান ২১৫টি বৈদেশিক ঋণ প্রকল্প এবং আগামী চার বছরে এই ঋণ পরিশোধের বিষয়টি বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
গত ২৯ আগস্ট বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা মূল্যায়নের জন্য গঠিত ১২ সদস্যের শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটিতে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ এবং জনশক্তি রপ্তানি বিশেষজ্ঞরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। কমিটির সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন একে এনামুল হক, কাজী ইকবাল, মোস্তাফিজুর রহমান, সেলিম রায়হান, শারমিন নীলোর্মি প্রমুখ।
কমিটির একজন সদস্য বলেন, “আমরা দেশের অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরেছি। পুঁজি পাচার এবং এর প্রতিরোধে করণীয় বিষয়গুলো সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।”
শ্বেতপত্র মূলত কোনো নীতিগত নথি যা নীতি বা প্রস্তাবনা আলোচনার সুযোগ তৈরি করে। এটি সাধারণত সরকার দ্বারা প্রকাশিত হয়। তবে বাংলাদেশে শ্বেতপত্র সাধারণত রাজনৈতিক দলের শাসনকাল সম্পর্কিত তথ্য ও সমালোচনার দলিল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
বাংলাপিডিয়ার মতে, শ্বেতপত্রের মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক দলের শাসনামলে দুর্নীতি, ব্যর্থতা বা অন্যায় কার্যকলাপ তুলে ধরা হয়। এবারের শ্বেতপত্র আওয়ামী লীগের শাসনামলে অর্থ পাচারের চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি বৈদেশিক ঋণ ও প্রকল্পসমূহের প্রভাব বিশ্লেষণ করেছে।
কমিটির আরেক সদস্য বলেন, “এ প্রতিবেদন রাজনৈতিক স্বার্থে নয়, বরং দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে।”
Leave a Reply